ওশাচস্য শু স্পাস্লাভ্য স্বামী বিবেকানন্দ চৈত্র, ১৩৪৫ ৯785 165581%৩0] [ যূল্য আট আনা এ ৪ 75858 4552 , মলের ক. পা ক চি ৪ ্ / * ল - 1 এত রি 22748 চেরি একা? টব ৯০ ১5) হশঃলি 17457 সলিলবিপুলা উচ্ছ্বাসময়ী নদী, নদীতটে নন্দন- বিনিন্দিত উপবন, তন্মধ্যে. অপূর্ববকারুকাধ্যমণ্ডিত রত্ব- বর্তমান ভার. খচিত মেঘম্পর্শী মর্র প্রাসাদ? পার্শ্বে, তের বাহ- সম্মুখে, পশ্চাতে, ভগ্ন মৃন্ময়প্রাচীর জীর্ণা- রি চ্ছাদ, দৃষ্টবংশকঙ্কাল কুটারকুল, ইতস্ততঃ শীর্ণদেহ ছিন্ন-বসন যুগযুগাস্তরের নিরাশাব্যঞ্জিতবদন নরনারী, বালক-বালিকা ; মধ্যে মধ্যে সমধন্মা সমশরীর গো মহিষ বলীবর্দ ; চারিদিকে আবর্জনারাশি এই আমাদের বর্ধমান ভারত। অট্রালিকাবক্ষে জীর্ণ কুটার, দেবালয়াক্রোড়ে আবর্জনা- স্তপ, পষ্টশাটাবৃতের পার্ব্চর কৌগীনধারী, বহ্বননতৃপ্তের চতুর্দিকে ক্ষুৎকাম জ্যোতিঃহীন-চক্ষুর কাতর দৃষ্টি-_ আমাদের জন্মভূমি । বিস্ৃচিকার বিভীষণ আক্রমণ, মহামারীর উৎসাদন, ম্যালেরিয়ার অস্থিমজ্জাচর্বন, অনশন-অদ্ধাশন- সহজভাব, মধ্যে মধ্যে মহাকালরূপ ছুভিক্ষের মহোৎসব, রোগশোকের কুরুক্ষেত্র, আশা-উদ্যম-আনন্দ-উৎসাহের কঙ্কাল-পরিপ্রুত মহাশ্মশান, র্ চক্ষে প্রাচা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য তন্মধ্যে ধ্যানমগ্ন মোক্ষপরায়ণ যোগী,_-ইউরোপী পর্যটক এই দেখ। ত্রিংশকোটী মানবপ্রায় জীব-_বনহুশতাব্দী যাবৎ স্বজাতি বিজাতি ্বধন্মী বিধম্মীর পদভরে নিষ্পীডিত-প্রাণ, দাসন্থুলভপরিশ্রম-সহিষু্, দাসবৎ উদ্যমহীন, আশা-হীন, অতীত-হীন, ভবিষ্যৎ-বিহীন, যেন তেন প্রকারেণ বর্তমান প্রাণধারণমাত্র প্রত্যাশী, দাসোচিত ঈর্ধাপরায়ণ, স্বজনোন্নতি- অসহিষ্ণু, হতাশবৎ শ্রদ্ধাহীন, বিশ্বাসহীন, শুগালবৎ নীচ চাতুরী প্রতারণাসহায়, স্বার্থপরতার আধার, বলবানের পদলেহক, অপেক্ষাকৃত ছুর্বলের যমন্বরূপ, বলহীন- আশাহী০ের-সমুচিত বদর্ধ্য-ভীষণকুসংস্কারপূর্ণণ নৈতিক- মেরুদণ্ড-হ ন, পৃতিগন্ধপূর্ণ-মাংসখগুব্যাপি-কীটকুলের হ্যায় ভারতশরীরে পরিব্যাপ্ত__ইংরাজ রাজপুরুষের চক্ষে আমাদের ছবি। নববলমধুপানমত্ত হিতাহিতবোধহীন হিং্রপশুপ্রায় ভয়ানক, স্ত্রীজিত, কামোম্মন্, আপাদমস্তক সুরাসিক্ত, আচারহীন, শৌচহীন, জড়বাদী, জড়- প্রাচোর দৃষ্টিতে ৃ দার সহায়, ছলে-বলে-কৌশলে পরদেশ-পর- ধনাপহরণপরায়ণ, পরলোকে বিশ্বাসহীন, দেহাত্ববাদী, দেহপোষণৈকজীবন ;_-ভারতবাসীর চক্ষে পাশ্চাত্য অন্ুর। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য এই ত গেল উভয় পক্ষের বুদ্ধিহীন বহিহ্দৃ্টি-লোকের কথা। ইউরোগী বিদেশী সুশীতল স্ুপরিষ্কৃত সৌধশোভিত নগরাংশে বাস করেন, আমাদের “নেটিভ পাড়াগুলিকে নিজেদের দেশের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সহরের সঙ্গে তুলন। করেন। ভারতবাসীদের যা,সংসর্গ তাদের হয়, তা কেবল একদলের লোক-_যারা সাহেবের চাকরী করে। আর, ছুঃখ দারিদ্র্য ত বাস্তবিক ভারতবর্ষের মত পৃথিবীর আর কোথাও নাই। ময়লা-আবর্জনা চারিদিকে ত পড়েই রয়েছে। ইউরোগী-চক্ষে এ ময়লার, এ দাসবৃত্তির, এ নীচতার মধ্যে যে কিছু ভাল থাকা সম্ভব, তা বিশ্বাস হয় না। আমরা দেখি, শৌচ করে না, আচমন করে না, যা-তা খায়, বাছ-বিচার নাই, মদ খেয়ে মেয়ে বগলে ধেই ধেই নাচ,_এ জাতের মধ্যে কি ভাল রে বাপু! ছুই দৃষ্টিই বহিরৃষ্টি, ভেতরের কথা বুঝতে পারে না। বিদেশীকে আমরা সমাজে মিশ.তৈ দিই না, 'শ্লেচ্ছ” বলি,__ ওরাও “কাল! দাস" বলে আমাদের ঘ্বণ! করে। এ ছুয়ের মধ্যে কিছু সত্য অবশ্যই আছে, কিস্তু ছু দলেই ভেতরের আসল জিনিষ দেখে নি। প্রত্যেক মানুষের মধ্যে একটা ভাব আছে; বাইরের মানুষটা সেই ভাবের বহিঃপ্রকাশ মাত্র,_-ভাষা ৩ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য মাত্র। সেইরূপ, প্রত্যেক জাতের একটা জাতীয় ভাব আছে। এই ভাব জগতের কার্য কর্ছে-_-সংসারের টি স্থিতির জন্য আবশ্যক। যে দিন সে তির আবশ্টকতাটুকু চলে যাবে, সেদিন সে জীবনোদেষ্ট জাত বা ব্যক্তির নাশ হবে। আমরা হি ভারতবাসী যে এত ছুঃখ-দারিদ্র্য, ঘরে- বাইরে উৎপাত সয়ে বেঁচে আছি, তার মানে, আমাদের একটা জাতীয় ভাব আছে যেটা জগতের জন্য এখনও আবশ্যক । ইউরোপীদের তেমনি একটা জাতীয় ভাব আছে, যেটা! না হলে সংসার চল্বে না; তাই ওর! প্রবল । একেবারে নিঃশক্তি হলে কি মানুষ আর বাঁচে? জাতিট! ব্যক্তির সমষ্টিমাত্র ; একেবারে নিঃশক্তি নিকষর্্মা হলে জাতটা কি বাঁচবে? হাজার বছরের নানারকম হাঙ্গামায় জাতটা মলে না কেন? আমাদের রীতি- নীতি যদি এত খারাপ, ত আমরা এতদিনে উৎসন্ন গেলাম না কেন? বিদেশী বিজেতাদের চেষ্টার ক্রটি কি হয়েছে? তবু সব হি'ছে মরে লোপাট হল না কেন --অন্যান্ত অসভ্য দেশে যা হয়েছে? ভারতের ক্ষেত্র জনমানবহীন হয়ে কেন গেল না, বিদেশীরা তখুনিই ত এসে চাষবাস করে বাস করতো, যেমন আমেরিকায়, অস্ট্রেলিয়ায়, আফ্রিকায় হয়েছে এবং ৪ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য হচ্ছে? তবে বিদেশী, তুমি যত বলবান্‌ নিজকে ভাব, ওটা কল্পনা; ভারতেও বল আছে, মাল আছে, এইটি প্রথম বোঝ। আর বোঝ যে আমাদের এখনও জগতের সভ্যতা-ভাগ্ডারে কিছু দেবার আছে, তাই আমরা বেঁচে আছি। এটি তোমরাও বেশ করে বোঝ-্ধারা অন্তর্হিঃ সাহেব-সেজে বসেছ এবং “আমরা নরপশ্ু, তোমরা হে ইউরোপী-লোক, আমাদের উদ্ধার কর,» বলে কেঁদে কেঁদে বেড়াচ্ছ। আর, যীশু এসে ভারতে বসেছেন বলে হাসেন হোসেন কর্ছ। ওহে বাপু, যীশুও আসেন নি, জিহোবাও আসেন নি, আসবেনও না। তারা এখন আপনাদের ঘর সামলাচ্ছেন, আমাদের দেশে আসবার সময় নাই। এদেশে সেই বুড়ো শিব বসে আছেন, মা কালী পাঠা খাচ্ছেন, আর বংশীধারী বাঁশী বাজাচ্ছেন। এ বুড়ো শিব ষাঁড় চড়ে ভারতবর্ষ থেকে একদিকে সুমাত্রা, বোর্ণিও সেলিবিস, মায় অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকার কিনারা পর্ান্ত ডমরু বাজিয়ে এককালে বেড়িয়েছেন, আর একদিকে তিব্বত, চীন, জাপান, সাইবেরিয়৷ পর্য্যন্ত বুড়ো! শিব ষাড় চরিয়েছেন, এখনও চরাচ্ছেন। এ যে মা কালী-_-উনি চীন, জাপান পধ্যন্ত পূজা! খাচ্ছেন, গুঁকেই যীশুর-মা মেরী করে ৫ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য কৃশ্চানরা পুজা কর্ছে। এ যে হিমালয় পাহাড় দেখছ, ওরির উত্তরে কৈলাস, সেথা বুড়ো শিবের প্রধান আড্ডা । ও কৈলাস দশমুগ্ড-কুড়িহাত রাবণ নাড়াতে পারে নি, ওকি এখন পাড্রী-ফাত্রীর কর্ম !! এ বুড়ে৷ শিব ডমরু বাজাবেন, মা কালী পাঠ! খাবেন, আর কৃষ্ণ বাশী বাজাবেন,_এদেশে চিরকাল। যদি না পছন্দ হয়, সরে পড় নাকেন? তোমাদের ছু চারজনের জন্য দেশ- শুদ্ধ লোককে হাড় জ্বালাতন হতে হবে বুঝি? চরে খাওগে না কেন? এত বড় ছুনিয়াট! পড়ে ত রয়েছে। তানয়। মুরদ কোথায়? এ বুড়ো শিবের অন্ন খাবেন, আর নেমকহারামি করবেন, যীশুর জয় গাইবেন-_আ মরি!! এ যে সাহেবদের কাছে নাকি-কান্না ধর যে 'আমরা অতি নীচ, আমরা অতি অপদার্থ, আমাদের সব খারাপ, এ কথা ঠিক হতে পারে__তোমরা অবশ্য সত্যবাদী; তবে এ আমরার ভেতর দেশশুদ্ধকে জড়াও কেন? ওটা কোন্দেশী ভদ্রতা হে বাপু! প্রথম বুঝতে হবে যে, এমন কোনও গুণ নেই, যা কোনও জাতিবিশেষের একাধিকার। তবে, কোনও ব্ক্তিতে যেমন, তেম্নি কোনও জাতিতে কোনও কোনও গুণের আধিক্য প্রাধান্ত । আমাদের দেশে মোক্ষলাভেচ্ছার প্রাধান্য, পাশ্চাত্যে তি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ধর্সের । আমরা চাই কি-“মুক্তি'। ওর! চাঁয় কি__ ধেম্ম ৷ ধর্-কথাটা মীমাংসকদের মতে ব্যবহার হচ্ছে। প্রাচের উদেষ্ঠ ধর্ম কি? যা ইহলোকে বা পরলোকে ৰা ঠা স্ুখভোগের প্রবৃত্তি দেয়। ধর্ম হচ্ছে ক্রিয়ামূলক। ধর্ম মানুষকে দিনরাত সুখ খোঁজাচ্ছে, স্থখের জন্য খাটাচ্ছে। মোক্ষ কি? যা শেখায় যে, ইহলোকের সুখও গোলামী, পরলোকেরও তাই। এই প্রকৃতির নিয়মের বাইরে ত এ-লোকও নয়, পরলোকও নয়, তবে, সে দাসহ-_লোহার শিকল আর সোনার শিকল । তার- পর প্রকৃতির মধ্যে বলে বিনাশশীল সে সুখ থাকবে না। অতএব মুক্ত হতে হবে, প্রকৃতির বন্ধনের বাইরে যেতে হবে, শরীর-বন্ধনের বাইরে যেতে হবে, দাসত্ব হলে চল্বে না। এই মোক্ষমার্গ কেবল ভারতে আছে, অন্তাত্র নাই। এইজন্য, এ যে কথা শুনেছ যে, মুক্ত- পুরুষ ভারতেই আছে, অন্থাত্র নেই, তা ঠিক। তবে, পরে অন্তত্রও হবে। সে ত আনন্দের বিষয়। এককালে এই ভারতবর্ষে ধর্মের আর মোক্ষের সামগ্রস্য ছিল। তখন যুধিষ্ঠির, অর্জন, ছুর্য্যোধন, ভীম্ম, কর্ণ প্রভৃতির সঙ্গে সঙ্গে ব্যাস শুক জনকাদিও বর্তমান ছিলেন। বৌদ্ধ- দের পর হতে ধন্মটা একেবারে অনাদৃত হল, খালি ৭ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য মোক্ষমার্গই প্রধান হল। তাই অগ্রিপুরাণে রূপকচ্ছলে বলেছে যে, গয়ান্বর (বুদ্ধ) &* সকলকে মোক্ষমার্গ দেখিয়ে জগৎ ধ্বংস কর্বার উপক্রম করেছিলেন, তাই ধ্ঘবোপে দেবতারা এসে ছল করে তাঁকে চিরদিনের ভারতের মত শান্ত করেছিলেন। ফল কথা, এই অবনতি যে দেশের ছুর্গতির কথা সকলের মুখে শুন্ছ ওটা এ ধন্মের অভাব। যদি দেশশুদ্ধ লোক মোক্ষধর্্ম অনুশীলন করে, সে ত ভালই; কিন্তু তা হয় না, ভোগ না হলে ত্যাগ হয় না, আগে ভোগ কর, তবে ত্যাগ হবে। নইলে, খামকা দেশশুদ্ধ লোক মিলে সাধু হল, না এদিক না ওদিক। যখন বৌদ্ধরাজো, এক এক মঠে এক এক লাখ সাধু; তখনই দেশটি ঠিক উৎসন্ন যাবার মুখে পড়েছে। বৌদ্ধ, কষ্চান, ষুসলমান, জৈন, ক্ষ গয়াম্র ও ১ বুনধদেবের অনি সম্বন্ধে ্বামীভীর মত পরে পরিবন্তিত হয়। তিনি দেহত্যাগের অল্পদিন পূর্বেবে কাণীধাম হইতে জনৈক শিষাকে যে পত্র লেখেন, তাহাতে একস্ানে বলিয়াছেন £-_ | | “আগ্রিপুরাণে গয়াস্থুর সম্বন্ধে যে উল্লেখ আছে, তাহাতে (যেমন ডাঃ রাজেন্দ্রলাল মিত্রের মত) বুদ্ধদেবকে লক্ষ্য করা হয় নাই, উহ! কেবল পুর্ব হইতে প্রচলিত একটি উপাখ্যান মাত্র। *বুদ্ধ যে গয়শীর্ষ পর্বতে বান করিতে গিয়াছিলেন, তাহাতে স্থান পূর্বব হইতেই ছিল, প্রমাণিত হইতেছে” [ উদ্বোধন--৮ম বর্ষ, ৫৮৮ পৃঃ] ৮ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ওদের একটা ভ্রম যে সকলের জন্য সেই এক আইন, এক নিয়ম। এটি মস্ত ভূল; জাতি, ব্যক্তি প্রকৃতিভেদে শিক্ষা-ব্যবহার-নিয়ম সমস্ত আলাদা, জোর করে এক করতে গেলে কি হবে? বৌদ্ধরা বল্লে, “মোক্ষের মত আর কি আছে, ছুনিয়া-শুদ্ধ মুক্তি নেবে চল”__বলি, তা কখন হয়? "তুমি গেরস্থ মানুষ, তোমার ওসব কথা বেশী আবশ্তক নাই, তুমি তোমার স্বধন্ম কর” এ কথা! বল্ছেন হি'ছ্ুর শান্ত্র। ঠিক কথাই তাই। এক হাত লাফাতে পার না, লঙ্কা পার হবে। কাজের কথা? ছুটো মানুষের মুখে অন্ন দিতে পার না, ছুটে লোকের সঙ্গে এক বুদ্ধি হয়ে, একটা সাধারণ হিতকর কাজ করতে পার না, _মোক্ষ নিতে দৌড়াচ্ছ ! হিন্দুশান্ত্র বল্ছেন “যে ধিশ্মের চেয়ে “মোক্ষটা” অবশ্য অনেক বড়, কিন্ত আগে ধর্মটটি করা চাই। বৌদ্ধরা এখানটায় গুলিষে যত উংপাত করে ফেললে আর কি! অহিংসা ঠিক “নিবৈ'র” বড় কথা; কথা ত বেশ, তবে শাস্ত্র বলছেন, তুমি গেরস্থঃ তোমার গালে এক চড় যদ্রি কেউ মারে তাকে দশ চড় যদি না ফিরিয়ে দাও, তুমি পাপ কর্বে। “'আততাধ্বিনমায়াস্তং, * ইত্যাদি, হত্যা করতে এসেছে-_ ক্ষ গুরুং বা বালবধেবো বা! ব্রাহ্মণং বা! বহুশ্রতম্‌। আততার়িনমায়ান্তং হন্তাদেবাবিচারয়ন॥ ম--৮/৩৫০ ৯ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য এমন ব্রহ্মবধেও পাপ নাই, মনু বলছেন। এ সত্য কথা, এটি ভোলবার কথা নয়। বীরভোগ্যা বন্ুগ্ধরা_বীর্য্য- প্রকাশ কর, সাম, দান, ভেদ, দগ্ডনীতি প্রকাশ কর, পৃথিবী ভোগ কর, তবে তুমি ধার্মিক। আর ঝশটা- লাখি খেয়ে চুপটি করে, ঘুণিত-জীবন যাপন করলে ইহকালেও নরকভোগ, পরলোকেও তাই। এইটি শাস্ত্রের মত। সত্য সত্য, পরমসত্য,ন্বধন্ম কর হে বাপু! অন্যায় করো না, অত্যাচার করে৷ না, যথাসাধ্য পরোপকার কর। কিন্তু, অন্যায় সহ করা পাপ, গৃহস্থের পক্ষে; তৎক্ষণাৎ প্রতিবিধান কর্তে চেষ্ট। করতে হবে। মহা উৎসাহে, অর্থোপার্জন করে, স্ত্রী পরিবার দশজনকে প্রতিপালন, দশটা হিতকর কা্যানু- ষ্টান কর্তে হবে। এ না পারলে ত তুমি কিসের মানুষ ? গৃহস্থই নও__আবার “মোক্ষ”! পুরে বলেছি যে, ধরা হচ্ছে কাধ্যমূলক। টি ধার্শিকের লক্ষণ হচ্ছে, সদ কার্যযশীলতা। চিতশুদ্ধি এমন কি, অনেক মীমাসকের মতে বেদে যে স্থলে কাধ্য কর্তে বল্ছে না, আততারী কে-_ অগ্নিদদো! গরদশ্চৈব শস্তরপা গির্ধনাপহঃ | ক্ষেত্রদারাপহারী চ ষড়েতে আততায়িনঃ ॥ শুক্রনীতি ১৩ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সে স্থানগুলি বেদই নয়।-_“আরনায়ন্ত ক্রিয়ার্থবাং আনর্থক্যং অতদর্থানাং,__জৈমিনিস্থত্র । ১।২।১-_-"গকার ধ্যানে সর্ববার্থসিদ্ধি” “হরিনামে সর্ব পাপনাশ” “শরণা- গতের সর্বাণ্তি, এ সমস্ত শাস্ত্রবাক্য সাধুবাক্য অবশ্য সত্য ; কিন্তু দেখতে পাচ্ছ যে, লাখো লোক ওুঁকার জপে মচ্ছে, হরিনামে মাতোয়ারা হচ্ছে, দিনরাত প্রভু যা করেন” বল্ছে, এবং পাচ্ছে”ঘোড়ার ডিম। তার মানে বুঝতে হবে যে, কার জপ যথার্থ হয়? কার মুখে হরিনাম বজববং অমোঘ? কে শরণ যথার্থ নিতে পারে? যার কর্ম করে চিত্তশুদ্ধি হয়েছে, অর্থাৎ যে ধার্মিক” । প্রত্যেক জীব শক্তি প্রকাশের এক একটি কেন্দ্র। পুর্রবের কন্মফলে সে শক্তি সঞ্চিত হয়ে আছে, আমরা তাই নিয়ে জন্মেছি। যতক্ষণ সে শক্তি কার্যরূপে প্রকাশ না হচ্ছে, ততক্ষণ কে স্থির থাকৃবে বল? ততক্ষণ, ভোগ কে ঘোচায় বল? তবে হুঃখভোগের চেষে, স্থখভোগটা ভাল নয়? কুকর্ম্বের চেয়ে সুকর্মটা ভাল নয়? পুজ্যপাদ শ্রীরামপ্রসাদ্দ বলেছেন,__“ভাল মন্দ ছুটো৷ কথা, ভালট। তার করাই ভাল । এখন ভালটা কি? মুক্তিকামের ভাল” অন্যরূপ, ধর্মকামের ভাল” আর একপ্রকার। এই গ্বীতাপ্রকাশক ১১ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য শ্রীভগবান এত করে বুঝিয়েছেন, এই মহাসত্যের উপর হি'ছর স্বধন্ম জাতিধন্ম ইত্যাদি। মুক্তিকাম ও র্মকামের “অদ্েষ্টা সর্ধ্বভূতানাং মৈত্রঃ করুণ এব ৮” মাত __গী, ১২১৩- ইত্যাদি ভগবদ্ধাক্য মোক্ষ- কামের জন্য । ,আর, “ক্রেব্যং মাস্ম গমঃ পার্থ_শী, ২।৩-- ইত্যাদি, “ন্মাত্বমুত্তিষ্ঠ যশোলভম্ব-_ শ্রী, ১১।৩৩-_ ইত্যাদি, ধর্মলাভের উপায়, ভগবান দেখিয়েছেন! অবশ্য কম্ম করতে গেলেই, কিছু না কিছু পাপ আসবেই। এলোই বা; উপোসের চেয়ে আধপেটা ভাল নয়? কিছু না করার চেয়ে, জড়ের চেয়ে ভালমন্দমিশ্র-কম্ম করা ভাল নয়? গরুতে মিথ্যা কথা কয় না, দেয়ালে চুরি করে না, তবু তারা গরুই থাকে, আর দেয়ালই থাকে। মানুষে চুরি করে, মিথ্যা কয়, আবার সেই মানুষই দেবতা হয়। সব্প্রাধান্ত অবস্থায় মানুষ নিঙ্ছিয় হয়, পরমধযনাবস্থা প্রাপ্ত হয়, রজঃপ্রাধান্তে ভালমন্দ ক্রিয়া করে, তমঃপ্রাধান্যে আবার নিশ্কিয় জড় হয়। এখন বাইরে থেকে, এই সত্বপ্রধান হয়েছে, কি তমঃপ্রধান হয়েছ, কি করে বুঝি বল। নুখছুঃখের-পার ক্রিয়াহীন শাস্তরূপ সত্ব অবস্থায় আমরা আছি, কি প্রাণহীন জড়প্রায় শক্তির অভাবে ক্রীয়াহীন মহাতামসিক অবস্থায় পড়ে চুপ করে ধীরে ১২ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ধীরে পচে যাচ্ছি, এ কথার জবাব দাও,__নিজের মনকে জিজ্ঞাসা কর। জবাব কি আর দিতে হয়,__“ফলেন পরিচীয়তে,। সব্বপ্রাধান্তে মানুষ নিক্রিয় হয়, শান্ত হয়, কিন্তু সে নিক্কিয়ত্ব মহাশক্তি কেন্দ্রীভূত হয়ে হয়, সে শাস্তি মহাবীর্য্যের পিতা । সে মহাপুরুষের আর আমাদের মত হাত-পা নেড়ে কাজ কর্তে হয় না, তাঁর ইচ্ছামাত্রে অবলীলাক্রমে সব কার্য্য সম্পন্ন হয়ে যায়। সেই পুরুষই সবগচণপ্রধান ব্রাহ্মণ, সর্বলোকপুজ্য; তাকে কি আর পুজা কর” বলে পাড়ায় পাড়ায় কেঁদে বেড়াতে হয়? জগদস্বা তার কপালফলকে নিজের হাতে লিখে দেন যে, এই মহাপুরুষকে সকলে পৃজা কর, আর জগৎ অবনত মস্তকে শোনে । সেই মহাপুরুষই “অদ্দেষ্টা সর্ববভূতানাং মৈত্রঃ করুণ এব চ" ইত্যাদি। আর এ যে মিন্মিনে পিন্পিনে ঢোক গিলে. গিলে কথা কয়, ছেড়ান্যাতাঃ সাতদিন উপবাসীর মৃত সরু আওয়াজ, সাত-চড়ে কথা কয় না, ওগুলো হচ্ছে তমৌগণ, ওগুলো মৃত্যুর চিহ্ন, _ ও সত্বগুণ নয় ও পচা দুর্গন্ধ |! অঙ্জু'ন এ দলে পড়,ছিলেন বলেই ত ভগবান্‌ এত্ত করে বোবাচ্ছেন না গীতায়? প্রথম ভগবানের মুখ থেকে কি কথা বেরুল দেখ, €ক্ব্য মান্ম গমঃ পার্থ__শেষ, “তন্মাতমুত্িষ্ঠ যশোলভন্ব'। এ জৈন বৌদ্ধ প্রভৃতির পাল্লায় পড়ে আমরা এ তমোগুণের ১৩ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দলে পড়েছি__দেশশুদ্ধ পড়ে কতই হরি” বল্ছি, ভগবানকে ডাকৃছি, ভগবান শুনছেনই না, আজ হাজার বংসর। শুনবেনই বা কেন, আহাম্মকের কথা মানুষই শোনে না১-তা ভগবান । এখন উপায় হচ্ছে এ ভগবদ্বাক্য শোনা, “ক্রেব্যং মান্ম গমঃ পার্থ ; তন্মাত্- মুত্তিষ্ঠ যশোলভন্ব' এখন চলুক, পাশ্চাত্য আর প্রাচ্যের কথা । প্রথমে একটা তামাসা দেখ। ইউরোগীদের ঠাকুর যীশু উপদেশ করছেন যে, নির্বৈর হও, একগালে চড় মারলে আর এক গাল পেতে দাও, 8 কাজ-কণ্ম বন্ধ কর, পৌটলা-পুটিলী বেঁধে জাতিযীশুর বসে থাক, আমি এই আবার আসছি, ই শ. ছুনিয়াটা, এই ছু চার দিনের মধ্যেই নাশ হয়ে যাবে। আর আমাদের ঠাকুর বল্ছেন, মহ! উৎসাহে সর্বদা কার্য্য কর, শত্রু নাশ কর, ছুনিয়া ভোগ কর। কিন্তু 'উপ্টা বুঝলি রাম" হলো; ওরা ইউরোগীর! যীশুর কথাটি গ্রাহোর মধ্যেই আন্লে না। সদা মহারজোঞ্ণ, মহাকার্ধাশীল, মহ উৎসাহে দেশদেশাস্তরের ভোগন্ুখ আকর্ষণ করে ভোগ করছে। আর, আমরা কোণে বসে, পৌঁটলা-পু'টলি বেঁধে, দিন*রাত, মরণের ভাবনা ভাবছি, “নলিনীদল- ১৪ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য গতজলমতি তরলং তছজ্জীবনমতিশয়চপলম্ঠ * গাচ্ছি; আর যমের ভয়ে হাত-পা পেটের মধ্যে সেঁধুচ্ছে। আর পোড়া যমও তাই বাগ. পেয়েছে, ছুনিয়ার রোগ আমাদের দেশে ঢুকেছে । গীতার উপদেশ শুন্লে কে? না_ইউরোপী। আর যীশুধুষ্টের ইচ্ছার ন্যায় কাজ করছে কে? না-_কৃষ্ণের বংশধরেরা !! একথাটা বুঝতে হবে। মোক্ষমার্গ ত প্রথম বেদই উপদেশ করেছেন। তারপর বুদ্ধই বল, আর যীশুই বল, সব এখান থেকেই ত যা! কিছু গ্রহণ। আচ্ছা, তারা ছিলেন সন্ন্যাসী, _অেষ্টা সর্ববভূতানাং মৈত্রঃ করুণ এব চ_-বেশ কথা, উত্তম কথা। তবে, জোর করে ছুনিয়াশুদ্ধকে এ মোক্ষ-মার্গে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা কেন? ঘসে-মেজে রূপ, আর ধরে-বেঁধে পিরীত কি হয়?যে মানুষটা মোক্ষ চাষ না, পাবার উপযুক্ত নয়, তার জন্য বুদ্ধ বা যীশু কি উপদেশ করেছেন বল, “হয় মক্ষ, নয় তুমি উৎসন্ন যাও”, এ ছুই কথা! মোক্ষ ছাড়া যাকিছু চেষ্টা কর্বে, সে আটঘাট তোমার বন্ধ। তুমি যে এ ছুনিয়াটা একটু ভোগ কর্বে তার কোনও রাস্তা নাই, বরং প্রতিপদে বাধা । কেবল বৈদিক ধর্মে এই চতুর্বর্গ সাধনের উপায় আছে ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ। বুদ্ধ করলেন আমাদের সর্বনাশ; ক. শব্র-কৃত 'মোহমগর। ৫... & ১৫ রড প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য যীশু করলেন গ্রীস-রোমের সর্বনাশ !!! তারপর ভাগ্যফলে ইউরোপীগুলো! প্রটেষ্টান্ট (0:0698৮06 ) হয়ে, যীশুর ধন্ম ঝেড়ে ফেলে দিলে; হাফ. ছেড়ে বাচল। ভারতবর্ষে কুমারিল্ল ফের কর্ম্মমার্গ চালালেন, শঙ্কর রামানুজ চতুর্ধবর্গের সমন্বয়রূপ সনাতন বৈদিক মত ফের প্রবর্তন করলেন, দেশটার বাঁচবার আবার উপায় হল। তবে ভারতবর্ষে ৩০ ক্রোর লোক, দেরী হচ্ছে। ৩০ ক্রোর লোককে চেতানো কি এক দিনে হয়? বৌদ্ধধর্মের আর বৈদিক-ধন্দের উদ্দেশ্য এক। তবে বৌদ্ধমতের উপায়টি ঠিক নয়। উপায় যদি ঠিক হত ত আমাদের এ সর্বনাশ কেন হল? “কালেতে হয়” বললে কি চলে? কাল কি কাধ্যকারণসম্বন্ধ ছেড়ে, কাজ করতে পারে ? অতএব উদ্দেশ্ট এক হলেও উপায়হীনতায় বৌদ্ধের! ভারতবর্ষকে পাতিত করেছে। বৌদ্ধবন্ধুরা চটে যাও, যাবে; ঘরের ভাত বেশী করে খাবে। সত্যটা বলা উচিত। উপায় হচ্ছে বৈদিক উপায়,_'জাতিধর্মম+, ন্বধর্ম, যেটি বৈদিক ধর্মের, বৈদিক-সমাজের ভিত্তি। আবার, অনেক বন্ধুকে চটালুম, অনেক বন্ধু বল্ছেন যে, এ দশের লোকের খোসামুদি হচ্ছে। একটা কথা ১৬ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য তাদের জন্য বলে রাখা যে, দেশের লোককে খোসামোদ করে আমার লাভটা কি? না খেতে পেয়ে মরে গেলে দেশের লোকে একমুঠা অন্ন দেয় না; ভিক্ষে শিক্ষে করে, বাইরে থেকে এনে, ছৃতিক্ষগ্রস্ত অনাথকে যদি খাওয়াই, ত তার ভাগ নেবার জন্য দেশের লোকের বিশেষ চেষ্টা, যদি না পায়, ত গ্রালাগালির চোটে অস্থির || হে স্বদেশীয় পণ্ডিতমণ্ডলি! এই ত আমার রক্ষাই দেশের লোক, তাদের আবার কি খোসা- জাতীন্ন কল্যা মোদ? তবে তারা উগ্মাদ হয়েছে, পের উপার উম্মাদকে যে ওষধ খাওয়াতে যাবে, তার হাতে ছু-দশটা কামড় অবশ্যই উন্মাদ দেবে; তা সয়ে যে ওষধ খাওয়াতে যায় সেই যথার্থ বন্ধু। এই “জাতিধর্ম্ম,, “ম্বধন্মই? সকল দেশে সামাজিক কল্যাণের উপায়, মুক্তির সোপান। এ 'জাতিধর্শাঁ ন্বধর্ম নাশের সঙ্গে সঙ্গে দেশটার অধঃপতন হয়েছে। তবে নিধুরাম-সিধুরাম যা জাতিধর্ম্, ব্বধর্ম বলে বুঝছেন, ওটা উল্টো উৎপাত; নিধু জাতিধর্শের ঘোড়ার ডিম বুঝছেন, ও'র গায়ের আচারকেই সনাতন আচার বলে ধারণা কচ্ছেন, নিজের কোলে ঝোল টানছেন, আর উৎসন্ন যাচ্ছেন। আমি গুণগত জাতির কথা বল্‌্ছি না, বংশগত জাতির কথা বল্ছি, জন্মগত ১৭ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য জাতির কথা বল্ছি। গুণগত জাতিই আদি, স্বীকার করি; কিন্ত, গুণ ছু-চার পুরুষে বংশগত হয়ে দীড়ায়। সেই আসল জায়গায় ঘা পড়েছে, নইলে সর্বনাশ হল কেন? “সঙ্করম্য চ কর্তা স্যামুপহন্তামিমাঃ প্রজাঃ1%% কেমন করে এ ঘোর বর্ণসাক্কর্য উপস্থিত হল, সাদা রং কাল কেন হল, সত্বগুণ রজোগুণ প্রধান__-তমোগুণে কেন উপস্থিত হল, সে সব অনেক কথা, বারাস্তরে বলবার রইল। আপাততঃ এইটি বোঝ যে, জাতিধর্ম্ম যদি ঠিকঠিক থাকে, ত সে দেশের অধুপতন হবেই না। এ কথা যদি সত্য হয়, তা হলে আমাদের অধঃ- পতন কেন হল? অবশ্যই জাতিধশ্ম উৎসন্নে গেছে। অতএব যাকে তোমরা জাতিধশ্ম বল্ছ সেটা, ঠিক উল্টো। প্রথম, পুরাণ পু'থি-পাটা বেশ করে পড়গে, এখুনিই দেখতে পাবে যে, শাস্ত্রে যাকে জাতিধর্ম বলছে, তা সর্বত্রই প্রায় লোপ হয়েছে । তারপর, কিসে সেইটি ফের আসে, তারি চেষ্টা কর; তা হলেই পরম কল্যাণ নিশ্চিত। আমি যা শিখেছি যা বুঝেছি, তাই তোমাদের বলছি; আমি ত আর বিদেশ থেকে তোমাদের হিতের জন্য আমদানী হই নি যে, তোমাদের আহাম্মকিগুলিকে পর্য্যন্ত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে .হ. শীতা অং রি ১৮ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য হবে? বিদেশী বন্ধুর কি? “বাহবা, লাভ হলেই হল। তোমাদের মুখে চুণকালী পড়লে যে আমার মুখে পুররবেই বলেছি যে, প্রত্যেক জাতির একটা জাতীয় উদ্দেশ্ট আছে। প্রাকৃতিক নিয়মাধীনে বা মহা- পুরুষদের প্রতিভাবলে প্রত্যেক জাতির সামাজিক রীতি-নীতি, সেই উদ্দেশ্টটি সফল কর্বার উপযোগী হয়ে গড়ে যাচ্ছে। প্রত্যেক জাতির রি «জীবনের এ উদ্দেশ্তটি এবং তছ্পযোগী আঘাত পড়ি- উপায়রূপ আচার ছাড়া, আর সমস্ত লেই বিপ্লব ব! জাতীর মৃত্যু রীতি-নীতিগুলির বাড়ার-ভাগ। এই বাড়ার অবন্তভাবী ভাগ রীতি-নীতিগুলির হ্াস-বৃদ্ধিতে বড় বেশী এসে যায় না; কিন্তু যদি সেই আসল উদ্দেশ্টটিতে ঘ। পড়ে, তখুনি সে জাতির নাশ হয়ে যাবে। ছেলেবেলায় গল্প শুনেছ যে, রাক্ষসীর প্রাণ একটা! পাখীর মধ্যে ছিল। সে পাখীটার নাশ না হলে, রাক্ষুসীর কিছুতেই নাশ হয় না; এও তাই। আবার দেখবে যে, যে অধিকারগুলো জাতীয় জীবনের জন্ত একান্ত আবশ্যক নয়, সে অধিকারগুলো৷ সব যাক না, সে জাতি বড় তাতে আপত্তি করে না, কিন্তু, যখন যথার্থ জাতীয় জীবনে ঘ৷ পড়ে, তংক্ষণাৎ মহাবলে প্রতিঘাত করে । : ১৯ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য তিনটি বর্তমান জাতির তুলনা কর, যাদের ইতিহাস ফরামী, ইংরাজ তোমরা অল্পবিস্তর জান--ফরাসী, ইংরেজ, ওহি হিন্দু। রাজনৈতিক স্থাবীনতা ফরামী সমর্থন জাতি-চরিত্রের মেরুদণ্ড। প্রজারা সব অত্াচার অবাধে সয়, বরভারে পিষে দাও, কথা নেই; দেশশুদ্ধকে টেনে নিয়ে জোর করে সেপাই কর, আপত্তি নেই; কিন্তু যেই সে স্বাধীনতার উপর হাত কেউ দিয়েছে, অমনি সমস্ত জাতি উন্মাদবৎ প্রতিঘাত কর্বে। কেউ কারুর উপর চেপে বসে হুকুম চালাতে পাবে না, এইটিই ফরসী চরিত্রের মুলমন্ত্র। "জ্ঞানী মূর্খ ধনী দরিদ্র উচ্চ-বংশ নীচ-বংশ রাজায-শাসনে সামাজিক-ম্বাধীনতায় আমাদের সমান অধিকার» এর ওপর হাত কেউ দিতে গেলেই তাকে ভুগতে হয়। ইংরাজ-চরিত্রে ব্যবসা-বুদ্ধি আদান-প্রদান প্রধান ; যথাভাগ ন্যায়বিভাগ, ইংরাজের আসল কথা । রাজা, কুলীনজাতি-অধিকার, ইংরেজ ঘাড় হেট করে স্বীকার করে; কেবল যদ্দি গাট থেকে পয়সাটি বার করতে হয়, ত তার হিসাব চাইবে । রাজা আছে, বেশ কথা- মান্ করি, কিন্তু টাকাটি যদি তুমি চাও ত তার-কার্ধ্য-কারণ হিসাব-পত্রে আমি ছু কথা বলব বুঝব, তধে দেব। ৯৬ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য রাজা জোর করে টাকা আদায় করতে গিয়ে মহাবিপ্রব উপস্থিত করালেন ; রাজাকে মেরে ফেল্লে। হিন্দু বলছেন কি যে, রাজনৈতিক সামাজিক স্বাধীনতা, বেশ কথা। কিস্তু আসল জিনিষ হচ্চে পার- মার্থিক স্বাধীনতা-_নমুক্তি ।, এইটিই জাতীয় জীবনো- দেশ্য ; বৈদিক বল, জৈন বল, বৌদ্ধ বল, অদৈত, বিশিষ্টাদ্বিত বা দ্বৈত যা কিছু বল, সব এখানে এক মত। এখানটায় হাত দিও না, তা হলেই সর্বনাশ ; তা ছাড়া যা কর, চুপ করে আছি। লাখি মার, “কাল' বল, সর্ধবন্থ কেড়ে নাও__বড় এসে যাচ্ছে না; কিন্ত এ দোরটা ছেড়ে রাখ। এই দেখ, বর্তমানকালে পাঠান বংশরা আস্ছিল-যাচ্ছিল কেউ স্ুস্থির হয়ে রাজ্য করতে পাচ্ছিল না; কেন না এ হি'ছুর ধর্মে ক্রমাগত আঘাত কচ্ছিল। আর মোগল-রাজ্য কেমন নুদৃঢ়- _ প্রতিষ্ঠ, কেমন মহাবল হল।-_কেন? না, মোগলরা এ জায়গাটায় ঘা দেয় নি। হি'ছুরাই ত মোগলের সিংহা- সনের ভিত্তি-_জাহাঙ্গীর, সাজাহান, দারাসেকো, এদের সকলের মা যে হি'ছা। আর দেখ, যেই পোড়া আরঙ্গজজেব আবার এঁখানটায় ঘা দিলে, অমনি এত বড় মোগলরাজ্য স্বপ্নের ন্যায় উড়ে গেল। এ যে ইংরেজের সুদ সিংহাসন, এ কিসের উপর? এ ধর্টে হাত ২১ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য কিছুতেই দেয় না বলে। পাদরী-পুক্গবের! একটু-আধটু চেষ্টা করেই ত» ৫৭ সালের হাঙ্গামা উপস্থিত করেছিল । ইংরাজেরা যতক্ষণ এইটি বেশ করে বুঝবে এবং পালন কর্বে, ততক্ষণ ওদের “তকত তাজ অচল রাজধানী? । বিজ্ঞ বুদর্শী ইংরাজেরাও )একথা বোঝে, লর্ড রবার্টসের “ভারতবর্ষে ৪১ বৎসর" নামক পুস্তক পড়ে দেখ ।% এখন বুঝতে পারছ ত, এ রাক্ষসীর প্রাণপাখীটি কোথায় ?--ধর্মে। সেইটির নাশ কেউ করতে পারে নি বলেই, জাতটা এত সয়ে এখনও বেঁচে আছে। আচ্ছা, একজন দেশী পণ্ডিত বল্ছেন যে, ওখানটায় প্রাণটা রাখবার এত আবশ্যক কি? সামাজিক বা রাজনৈতিক স্বাধীনতায় রাখ না কেন 1--যেমন অন্তান্ত অনেক দেশে। কথাটি ত হল সোজা , যদি তর্কচ্ছলে স্বীকার কর! যায যে, ধর্্-কণ্ম সব মিথ্যা, তা হলেও কি দীড়ায়, দেখ। অগ্নি ত এক, প্রকাশ বিভিন্ন। সেই এক মহাশক্তিই ফরাসীতে রাজনৈতিক ন্বাধীনতা, ইংরেজে বাণিজ্য স্থবিচার-বিস্তার, আর হ্িছ্র প্রাণে মুক্তিলাভেচ্ছারূে বিকাশ হয়েছে । কিন্তু, এই মহাশক্তির প্রেরণায় শতাব্দী কতক নানা সুখ-ছুখের ভেতর দিয়ে, ফরাসী বা ইংরেজ-চরিত্র গড়ে গেছে এবং তারি প্রেরণায় লক্ষ ৮ ঘ০2-905 525 0 10015-৩5 ও ৩১ অধ্যায়। পনি ২ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য শতাব্দীর আবর্তনে হি'ছুর জাতীয় চরিত্রের বিকাশ। বলি, আমাদের লাখো বৎসরের স্বভাব ছাড়া সোজ, না তোমার বিদেশীয় ছু পাচশ বৎসরের স্বভাব ছাড়া সোজা? ইংরেজ কেন ধর্মপ্রাণ হক না, মারামারি কাটাকাটিগুলো৷ ভূলে শান্ত-শিষ্টটি হয়ে বস্ুক না? আসল কথা হচ্ছে, যে নদীট! পাহাড় থেকে ১০০০ ক্রোশ নেমে এসেছে, সে কি আর পাহাড়ে ফিরে যায়, ধর্দ বাঠীত. না যেতে পারে? যেতে চেষ্টা যদি একান্ত অপর কিছুতে করে, ত ইদিক-উদিকে ছড়িয়ে পড়ে জারতীধদ মারা যাবে, এইমাত্র। সে নদী যেমন রি করে হক, সমুদ্রে যাবেই, ছু দিন আগে বা পরে, ছুটো৷ ভাল জায়গার মধ্য দিয়ে, না হয় ছ-একবার আস্তাকুড় ভেদ করে। যদি এ দশ হাজার বৎসরের জাতীয় জীবনটা ভুল হযে থাকে ত আর ত এখন উপায় নেই, এখন একটা নৃতন চরিত্র গড়তে গেলেই মরে যাবে বই ত নয়। কিন্ত এ বুদ্ধিটি আগা-পাস্তলা তুল, মাপ করো অল্পদর্শার কথা । দেশে দেশে আগে যাও এবং অনেক দেশের অবস্থা বেশ করে দেখ, নিজের চোখে দেখ, পরের চোখে নয়, তারপর যদি মাথা থাকে ত ঘামাও তার উপর নিজেদের পুরাণ পু'খি-পাট পড়, ভারতবর্ষের ৩ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দেশদেশাস্তর বেশ করে দেখ, বুদ্ধিমান-পণ্ডিতের চোখে দেখ, খাজা আহাম্মকের চক্ষে নয়, সব দেখ তে পাবে যে, জাতটা ঠিক বেঁচে আছে, প্রাণ ধক্-ধক্‌ কর্ছে, ওপরে ছাই-ছাপা পড়েছে মাত্র। আর দেখবে যে, এ দেশের প্রাণ___ধর্ম্ম, ভাষা- ধর্ম, ভাব- ধর্ম আর তোমার রাজ- নীতি, সমাজনীতি, রাস্তাবেটান, প্লেগ-নিবারণ, ছুভিক্ষ- গ্রস্তকে অন্নদান, এসব চিরকাল এদেশে যা হয়েছে, তাই হবে, অর্থাৎ ধর্শের মধ্য দিয়ে হয় ত হবে; নইলে ঘোড়ার ডিম, তোমার চেঁচামেচিই সার, রামচন্দ্র ! তা ছাড়া উপায় ত সব দেশেই সেই এক, অর্থাং বাকিগুলো খালি “ভেড়িয়াধসান * বই ত নয়। ও তোমার "পালেমেণ্ট, দেখলুম, “সেনেটও দেখলুম, ভোট, ব্যালট, মেজরিটি, সব দেখলুম, রামচন্দ্র! বর সব দেশেই এ এক কথা। শক্তিমান্‌ ৪ পুরুষরা যে দিকে ইচ্ছে, সমাজকে পরিচালক চালাচ্ছে, বাকিগুলো ভেড়ার দল। তবে ভারতবর্ষে শক্তিমান পুরুষ কে? না, ধর্মমবীর। তারা আমাদের সমাজকে চালান । তারাই * ন্যায়শান্ত্রে বাহাকে গড্ডলিকা প্রবাহ বলে। যেমন একটি মেষের অন্থকরণে অপর মেষসমূহ তদনুরূপ কার্ধ্য করিতে প্রবৃত্ত হয়। ২৪ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সমাজের রীতি-নীতি বদলাবার দরকার হলে বদলে দেন। আমরা চুপ করে শুনি, আর করি। তবে এতে তোমার বাড়ার-ভাগ, এ মেজরিটি, ভোট প্রভৃতি হাঙ্গামগুলো৷ নেই, এই মাত্র । অবশ্য ভোট ব্যালটের সঙ্গে প্রজাদের যে একটা শিক্ষা হয়, সেটা আমরা পাই না, কিন্তু রাজনীতির পাশ্চাতাদেশে নামে যে চোরের দল দেশের লোকের রক্ত ভা চুষে সমস্ত ইউরোপী দেশে খাচ্ছে, মোটা- ডাকাতি তাজা হচ্ছে সে দলও আমাদের দেশে নেই। সে ঘুষের ধুম, সে দিনে-ডাকাতি যা পাশ্চাত্যদেশে হয়, রামচন্দ্র! যদি ভেতরের কথা দেখতে ত মানুষের উপর হতাশ হয়ে যেতে। “গলী গ্লী গোরস ফিরে মদিরা বৈঠি বিকায়। সৃতীকো ধোতী না মিলে কসবিন্‌ পহিনে খাসা ॥ *% যাদের হাতে টাকা, তার! রাজ্যশাসন নিজেদের মুটোর ভেতর রেখেছে, প্রজাদের লুঠছে শুষ.ছে, তারপর সেপাই করে দেশদেশান্তরে মর্তে পাঠাচ্ছেজিত হলে, তাদের ঘরভরে ধনধান্য আসবে। আর প্রজাগুলো ত সেই- ক “গলিতে গলিতে দুগ্ধ ফেরি করিতে হয়, কিন্ত স্থুরা এক- রা বসিয়াই বিক্রপ্ন হয়। সতী-নাবীর পরিধানের বস্ত্র জুটে না, অসতী ম্থবেশ পরিধান করে। ধন্য কলিযুগের প্রভাব !” - --মহাত্মা তূলসীদাস ৫ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য খানেই মারা গেল,_হে রাম! চমকে যেও না, ভাওতায় ভূলো না। একটা কথা বুঝে দেখ। মানুষে আইন করে, না আইনে মানুষ করে? মানুষে টাকা উপায় করে, না টাকায় মান্য করতে পারে? . মানুষে নাম-যশ করে, না নাম-যশে মানুষ করে? মানুষ হও, রামচন্দ্র! অমনি দেখবে ওসব বাকি আপনা-আপনি গড়গড়িয়ে আস্ছে। ও পরস্পরের নেড়িকুত্তোর খেয়োখেয়ী ছেড়ে সছ্‌দেশ্ে সছ্পা সংসাহস সম্দীর্য্য অবলম্বন কর। যদি জন্মেছে ত একটা মানুহ দাগ রেখে যাও। "তুলসী আয়ো৷ জগৎমে, জগৎ ইসে তুম্‌রোয়। গ্যায়সী করনী কর্‌ চলো, আপ ইসে জগ রোয়,॥ যখন তুমি জন্মেছিলে তুল্সী, সকলে হাস্তে লাগ.লো, তুমি কীদ্‌তে লাগলে ; এখন এমন কাজ করে চল যে, তুমি হাসতে হাসতে মর্বে, আর জগৎ তোমার জন্য কীাদ্বে। এ পার, তবে তুমি মানুষ, নইলে কিসের তুমি ? আর এক কথা বোঝ দাঁদা,_অবশ্য আমাদের অন্তান্ত জাতের কাছে অনেক শেখবার আছে। যে মানুষটা বলেঃ আমার শেখবার নেই, মে মরতে বসেছে ; যে জাতটে বলে, আমরা সবজান্তা, সে জাতের ২৬ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য অবনতির দিন অতি নিকট! “যতদিন বাঁচি, ততদিন হী শিখি! তবে দেখ, জিনিষটে আমাদের জাতির গু. ঢঙে ফেলে নিতে হবে, এইমাত্র। আর সকল আমাদের আসলটা সর্বদা বাঁচিয়ে, বাকি জিনিষ ছাচে ফেলিয়। লইতে হইবে শিখতে হবে বলি, খাওয়া ত সব দেশেই এক; তবে, আমরা পা গুটিয়ে বসে খাই, বিলাতিরা পাঁ ঝুলিয়ে বসে খায়। এখন মনে কর যে, আমি এদের রকমে রান্না-খাওয়া খাচ্ছি ; তা বলে কি এদের মত ঠ্যাং ঝুলিয়ে থাকৃতে হবে? আমার ঠ্যাং যে যমের বাড়ী যাবার দাখিলে পড়ে__টন্টনানিতে যে প্রাণ যায়, তার কি? কাজেই পা গুটিয়ে এদের খাওয়া খাব বৈকি। এ রকম বিদেশী যা কিছু শিখতে হবে, সেটা আমাদের মত করে-_পা গুটিয়ে, আসল জাতীয় চরিত্রটি বজায় রেখে। বলি, কাপড়ে কি মানুষ হয়, না মানুষে কাপড় পরে? শক্তিমান পুরুষ যে পোষাকই পরুক না কেন, লোকে মানে; আর, আমার মত আহাম্মক ধোপার বস্ত৷ ঘাড়ে করে বেড়ালেও লোকে গ্রাহ্য করে না। এখন, গৌরচক্দ্িকাটা বড্ড বড় হয়ে পড়ল; তবে ছদেশ তুলনা করা সোজা! হবে, এই ভণিতার পর। এরাও ভাল, আমরাও ভাল, “কাকো নিন্দো, কাকো ২৭ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বন্দো, হয়ো! পল্লা ভারি।, তবে ভালর রকমারি আছে, এইমাত্র । মানুষের মধ্যে আছেন, আমাদের মতে তিনটে জিনিষ। শরীর আছেন, মন আছেন, আত্মা আছেন। প্রথম শরীরের কথা দেখা যাক, সকলকার চেয়ে বাইরের জিনিষ । শরীরে শরীরে কত ভেদ, প্রথমে দেখ। নাক, মুখ, গড়ন, লম্বাই-চৌড়াই, রড, চুল, কত রকমের তফাং। আধুনিক পণ্ডিতদের মতে রঙের তফাৎ বণসাঙ্কর্ষ্য উপস্থিত হয়। গরম দেশ, ঠাণ্ডা দেশ ভেদে, কিছু পরিবর্তন অবশ্য হয়; কিন্তু কাল-সাদার- টা আসল কারণ, পৈতৃক। অতি শীতল দেশেও ময়লা রঙ, জাতি দেখ। যাচ্ছে, অতি উষ্ণ দেশেও ধপধপে ফরসা জাতি বাস কর্ছে। কানাডানিবাপী আমেরিকার আদিম-মানুষ ও উত্তর- মেরুসন্নিহিত দেশনিবাসী এন্কুইমো প্রভৃতির খুব ময়লারঙ, আবার মহাবিষুবরেখার উপরিস্থিত ছ্বীপেও সাদার আদিম জাতির বাস; বোর্ণিও, সেলিবিস প্রভৃতি দ্বীপপুঞ্জ ইহার নিদর্শন । এখন আমাদের শান্ত্রকারদের মতে, হিছুর ভেতর ২৮ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্ঠ, এই তিন জাত এবং চীন, হুন, আর্ঘনাতি. দরদ, পহলব, যবন এবং খশ, এই সকল ভারতের বহিঃস্থিত জাতি, এরা হচ্ছেন আর্ধ্য। শাস্্রোক্ত চীন জাতি, এ বর্তমান "ীনেম্যান, নয়; ওরা ত সে-কালে নিজেদের “চীনে বলতই না। চীন” বলে এক বড় জাত কাশ্মীরের উত্তর-পুর্বভাগে ছিল; দরদ্রাও যেখানে এখন ভারত আর আফগানি- স্থানের মধ্যে পাহাড়ি জাত সকল, এখানে ছিল। প্রাচীন চীন জাতির ছু দশটা বংশধর এখনও আছে। দরদিস্থান এখনও বিষ্ভমান। “রাজতরঙ্গিনী, নামক কাশ্মীরের ইতিহাসে বারশ্বার দরদ্রাজের প্রভৃতার পরিচয় পাওয়া যায়। হুন নামক প্রাচীন জাতি অনেক দিন ভারতবর্ষের উত্তর-পশ্চিমাংশে রাজত্ব করেছিল। এখন টিবেটিরা নিজেদের হুন বলে; কিন্তু সেটা বোধ হয় হিউন?। ফল মনূক্ত হন আধুনিক তিববতী ত নয়; তবে এমন হতে পারে যে সেই আধ্য হুন এবং মধ্যআশিয়া হতে সমাগত কোন মোগ.লাই জাতির সংমিশ্রণে বর্তমান তিববতীর উৎপত্তি। প্রজাবলস্কি এবং ড্যুক্ড অর্লিঅ নামক রুশ ও ফরাসী পধ্যটকদের মতে তিব্বতের স্থানে স্থানে এখনও আর্ধ্য-মুখচোখ- বিশিষ্ট জাতি দেখতে পাওয়া যায়। যবন হচ্ছে গ্রীক্‌- ৯ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দের নাম। এই নামটার ওপর অনেক বিবাদ হয়ে গেছে। অনেকের মতে, যবন এই নামটা “যোনিয়া” (70715 ) নামক স্থানবাসী গ্রীকদের ওপর প্রথম ব্যবহার হয়; এজন্য মহারাজ অশোকের লেখমালায় “যোন" নামে গ্রীকজাতি অভিহিত । ,.পরে “যোন' হতে সংস্কৃত যবন শব্দের উৎপত্তি। আমাদের দেশীয় কোনও কোনও প্রতুতত্ববিদের মতে “যবন' শব্দ গ্রীকবাচী নয়। কিন্তু এ সমস্তই ভুল। “যবন”, শবই আদি শব, কারণ শুধু যে হি'ছুরাই গ্রীকদের যবন বল্ত, তা নয়; প্রাচীন মিশরী ও ব্যাবিলীরাও গ্রীকদের যবন নামে আখ্যাত কর্ত। “পহলব”, শব্দে, পেহলবি ভাষাবাদী প্রাচীন পারসী জাতি। “খশ, শব্দে এখনও অদ্ধসভ্য পার্বত্যদেশবাসী আধ্যজাতি, এখনও হিমালয়ে এ নাম এ অর্থেব্যবহার হয়। বর্তমান ইউরোপীরাও এই অর্থে খশদের বংশধর। অর্থাৎ যে সকল আধ্য-জাতিরা প্রাচীনকালে অসভ্য অবস্থায় ছিল, তারা সব খশ.। আধুনিক পণ্ডিতদের মতে আধ্যদের লাল্চে সাদা রঙ কাল বা লাল চুল, সোজ! নাক-চোখ ইত্যাদি; এবং মাথার গড়ন, চুলের রঙ. ভেদে, একটু টা তফাৎ। যেখানে রঙ কাল, সেখানে অন্তান্ত কাল জাতের সঙ্গে মিশে এইটি ৩৩ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ধাড়িয়েছে। এদের মতে হিমালয়ের পশ্চিম প্রান্তস্থিত ছু-চার জাতি এখনও পূরো আধ্য আছে, বাকি সমস্ত খিচুড়িজাত, নইলে কাল কেন হল? কিন্তু ইউরোগী পণ্ডিতদের এখনও ভাবা উচিত যে, দক্ষিণ ভারতেও অনেক শিশুর লালচুল জন্মায়, কিন্তু ছুচার বংসরেই চুল ফের কাল হয়ে যায় এবং হিমালয়ে অনেকের লাল চুল, নীল বা কটা চোখ । এখন পণ্ডিতের! লড়ে মরুন ! “আর্য” নাম হি'ছুরাই নিজেদের ওপর চিরকাল ব্যবহার করেছে। শুদ্ধ হোক, মিশ্র হোক, হি'ছরের নাম আর্য, বস্‌। কাল বলে ঘৃণা হয়, ইউরোগীরা অন্য নাম নিন্গে। আমাদের তায় কি? কিন্ত কাল হোক, গোর! হোক, ছুনিয়ার সব জাতের রা ওপাশ্ট, চেয়ে এই হিছুর জাত স্থশ্রী সুন্দর। ত্যের মোটা একথা! আমি নিজের জাতের বড়াই করে ফুট পরতেদ. বল্ছি না, কিন্তু একথা জগৎপ্রসিদ্ধ। শতকর! স্ুত্রী নরনারীর সংখ্যা এদেশের মত আর কোথায়? তার ওপর ভেবে দেখ, অন্তান্ত দেশে সুপ্ী হতে যা লাগে, আমাদের দেশে তার চেয়ে ঢের বেশী; কেন না, আমাদের শরীর অধিকাংশই খোলা। অন্ত দেশে কাপড়-চোপড় ঢেকে, বিশ্রীকে ৩১ হিন্দু ও আর্ধ্য প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ক্রমাগত সুশ্রী কর্বার চেষ্টা। বিস্ত স্বাস্থ্য সম্বন্ধে পাশ্চাত্যের আমাদের অপেক্ষা অনেক সুখী । এ সব ১) হিনুহগ্র দেশে ৪৭ বংসরের পুরুষকে জোয়ান স বলে, ছোড়া বলে, ৫০ বৎসরের স্ত্রীলোক যুবতী। অবশ্য, এরা ভাল খায়, ভাল পরে, দেশ ভাল এবং সর্বাপেক্ষা আসল কথ! হচ্ছে, অল্প বয়সে বে করে না। আমাদের দেশেও যে ছু- একটা বলবান জাতি আছে, তাহাদের জিজ্ঞাসা করে দেখ, কত বয়সে বে করে। গোরখা, পাণ্তাবী, জাঠ, আফ্রিদি প্রভৃতি পার্বত্যদের জিজ্ঞাসা কর। তারপর শাস্ত্র পড়ে দেখ” ৩০ ২৫, ২০১-_ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্টের বের বয়ুস। আয়ু, বল, বীর্য, এদের আর আমাদের, অনেক ভেদ; আমাদের বল, বুদ্ধি, ভরসা,--তিন পেরুলেই ফরসা; এরা তখন সবে গা ছেড়ে উঠছে। আমরা নিরামিষাশী, আমাদের অধিকাংশ রোগ পেটে; উদ্ররভঙ্গে বুড়োবুড়ী মরে। এরা মাংসাশী, এদের অধিক রোগই বুকে । হৃত্রোগে, ফুস্ফুস্‌ রোগে এদের বুড়োবুড়ী মরে। একজন এদেশী বিজ্ঞ ভাক্তার-বন্ধু জিজ্ঞাসা করছেন যে, পেটের রোগগ্রস্ত লোকেরা কি প্রায় নিরুৎসাহ বৈরাগ্যবান হয়? হ্বদয়াদি ওপরের শরীরের রোগে, আশ! বিশ্বাস পুরো থাকে । ওলাওঠা- ৩২ প্রাচা ও পাশ্চাত্য রোগী গোড়া থেকেই মৃত্যুভযে অস্থির হয়। যল্ষ্মারোগী ২। আমাদের মর্বার সময় পর্য্যন্ত বিশ্বাস রাখে যে, বত্যু অধিকাংশ সে সেরে উঠবে। অতএব সেই জন্যেই উদররোগে, কি, ভারতের লোক সর্বদাই মরণ-মরণ যে আর বৈরাগ্য-বৈরাগ্য করছে? আমি ত নি এখনও উত্তর দিতে পারি নাই; কিন্ত কথাটা ভাব্বার বটে। আমাদের দেশে দীতের রোগ চুলের রোগ, খুব কম। এ সব দেশে অতি অল্প লোকেরই নিজের স্বাভাবিক দীাত। আর টাকের ছড়াছড়ি। আমরা নাক ফুঁড়ছি, কাণ ফু'ড়ছি গহন! পরবার জন্য। এর! এখন, ভদ্রলোকে, বড় নাক-কাণ ফৌড়ে না; কিন্তু কোমর বেঁধেবেধে, শিরদাড়া বাঁকিয়ে, পিলে যকৃৎকে স্থানত্রষ্ট করে শরীরটাকে বিশ্রী করে বসে। গিড়ন গড়ন” করে এরা মরে, তায় 'এ বস্তাবন্দি কাপড়ের উপর গড়ন রাখ তে হবে। এদের পোষাক-_কাজকর্মা কর্বার অত্যন্ত উপযোগী; ধনীলোকের স্ত্রীদের সামাজিক পোষাক ছাড়া, মেয়েদের পোষাকও হতঙচ্ছাড়া। আমাদের মেয়েদের শাড়ী, আর পুরুষদের চোগা-চাপকান- পাগ়ীর সৌন্দর্য্যের এ পৃথিবীতে তুলনা নেই। ভাজ ভাজ পোষাকে যত রূপ, তত আ"টাসাটায় হয় না। ৩৩ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য আমাদের পোষাক সমস্তই ভাজ ভাজ, আমাদের কাজ- কর্মের পোষাক নেই; কাঙজ্জ কর্তে গেলেই কাপড়- চোপড় যায়। এদের ফ্যাসান্‌ কাপড়ে, আমাদের ফ্যাসান্‌ গয়নায়; এখন কিছু কিছু কাপড়েও হচ্ছে। ফ্যাসান্টা কি, না-_ঢঙ $, মেয়েদের কাপড়ের ঢঙ-_- পারি সহর থেকে বেরোয়, পুরুষদের-_ লগ্ডন থেকে । আগে পারির নর্তকীর! এই ঢঙ ফেরাত। একজন বিখ্যাত নটী যা পোষাক পরলে, সকলে অমূনি দৌড়ল তাই কর্তে। এখন দোকানীরা ঢঙ করে। কত ক্রোর টাকা যে, এই পোষাক কর্তে লাগে প্রতি বৎসর, তা আমর! বুঝে উঠতে পারি নি। এ পোষাক গড়া এক প্রকাণ্ড বিছ্যে হয়ে দাড়িয়েছে । কোন্‌ মেয়ের গায়ের চুলের রঙ্গের সঙ্গে, কোন্‌ রঙের কাপড় সাজন্ত হবে; কার শরীরের কোন্‌ গড়নটা ঢাকৃতে হবে, কোন্টা বা পরিস্ফুট করতে হবে, ইত্যাদি অনেক মাথা ঘামিয়ে পোষাক তৈরী হয়। তারপর, ছু চার জন উচ্চপদস্থ মহিল। যা করেন, বাকি সকলকে তাই পর্তে হয়”_না পরলে জাত যায়!! এর নাম ফ্যাসান্‌! আর এই ফ্যাসান্‌ ঘড়ি ঘড়ি বদ্লাচ্ছে , বছরে চার খাতুতে চার বার বদ্লাবেই ত, তা ছাড়া অন্য ৩৪ পোষাক প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সময়েও আছে। যারা বড় মানুষ, তারা দরজী দিয়ে পোষাক করিয়ে নেয়; যারা মধ্যবিৎ ভদ্রলোক, তারা কতক নিজের হাতে, কতক ছুটকো-ছাট্কা মেয়ে-দরজী দিয়ে, নৃতন ধরণের পোষাক গড়িয়ে নেয়। পরবর্তা ফ্যাসান যদি কাছাকাছি রকমের হয়, ত পুরাণ কাপড় বদূলে সদলে নেয়, নতুবা নৃতন কেনে । বড় মানুষরা ফি খতুতে কাপড়গুলি চাকর-বাকরদের দান করে। মধ্যবিত্তেরা বেচে ফেলে; তখন সে কাপড়গুলি ইয়োরোগীয় লোকদের যে সমস্ত উপনিবেশ আছে,_ আফ্রিকা এসিয়৷ অষ্ট্েলিয়ায়__সেথায় গিয়ে হাজির হয় এবং তারা পরে। যারা খুব ধনী, তাদের কাপড় পারি হতে তৈয়ার হয়ে আসে; বাকিরা নিজেদের দেশে সেগুলি নকল করে পরে! কিন্তু, মেয়েদের টুপিটি আসল ফরাসী হওয়া চাই-ই চাই। যার তা নয়, সে লেডি নয়। ইংরেজের মেয়েদের আর জান্মমাণ মেয়েদের পোষাক বড় খারাপ; ওরা বড় পারিঢঙে পোষাক পরে না-ছু দশজন বড় মানুষ ছাড়া; এই- জন্য অন্যান্ত দেশের মেয়েরা ওদের ঠাট্টা করে। ইংরেজ পুরুষরা কিন্তু খুব ভাল পোষাক পরে,__ অনেকেই। আমেরিকার মেয়ে-পুরুষ সকলেই খুব ঢঙসই পোষাক পরে। যদিও আমেরিক গবর্ণমেণ্ট ৩৫ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য পারি বা লগ্ুনের আমদানী পোষাকের উপর খুব মাশুল বসায়, যাতে বিদেশী মাল এদেশে না আসে; তথাপি এর! মাশুল দিয়েও, মেয়েরা পারি ও পুরুষর! লগুনের তৈরী পোষাক পরে । নানা রকমের নানা রঙের পশমিনা, বনাত, রেশমী কাপড় রোজ রোজ বেরুচ্ছে, লক্ষ লক্ষ লোক তাইতে লেগে আছে, লক্ষ লক্ষ লোক তাই কেটে-ছেটে পোষাক করছে। ঠিক ঢঙের পোষাক না হলে, জেন্টেলম্যান বা লেডীর রাস্তায় বেরুনই মুস্কিল। আমাদের দেশে এ ফ্যাসানের হাগ।ম কিছু কিছু গহনায় ঢুকছে। এ সব দেশের পশম-রেশম-তাতিদের নজর দিন রাত--কি বদলাচ্ছে বা না বদ্‌লাচ্ছে-লোকে কি রকম পছন্দ কর.ছে__ তার উপর, অথবা, নূতন একটা করে লোকের মন আকর্ষণ করবার চেষ্টা করছে । একবার আন্দাজ লেগে গেলেই, সে ব্যবসাদার বড়মানুষ। যখন তৃতীয় নেপলেশ্র করাসী দেশের বাদ্‌শা ছিলেন, তখন সম্রাজ্ঞী অজেনি পাশ্চাত্য-জগতের বেশভূষার অধিষ্ঠাত্রী দেবী। তার কাশ্মীরী শাল বড় পছন্দ ছিল। কাজেই লাখো টাকার শাল ইয়োরোপ প্রতি বৎসর কিনত। তার পতন অবধি সে ঢঙও বদলে গেছে। শাল আর বিক্রী হয় না। আর আমাদের দেশের লোক দাগাই বুলোয়; নূতন একটা! ৩৬ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য কিছু করে সময় মত, বাজার দখল কর্থে পার্লে নাঃ কাশ্মীর বেজায় ধাক্কা খেলে; বড় বড় সদাগর গরীব হয়ে গেল। এ সংসার- দেখ. তোর, না দেখ, মোর, কেউ কি কারু জন্য দীড়িয়ে আছে? ওরা দশ চোখ, ছৃশ হাত দিয়ে দেখছে খাটছে; আমরা_ গৌসাইজী যা পুঁথিতে লেখেন নি--তা কখনই করবো না"; কর্বার শক্তিও গেছে। অন্ন বিন! নি হাহাকার! দোষ কার? প্রতিবিধানের অভাবেই আমা- চেষ্টা ত অষ্টরস্তা ; খালি চীৎকার হচ্ছে! দের অবনতি. বস। কোণ থেকে বেরোও না. ছুনিয়াটা কি, চেয়ে দেখ না! আপনা-আপনি বুদ্ধি শুদ্ধি আস্বে। দেবাস্থরের গল্প ত জানই। দেবতার! আস্তিক--আত্মায় বিশ্বাস, ঈশ্বরে, পরলোকে বিশ্বাস রাখে। অস্ুররা বল্ছে--ইহলোক এই পৃথিবী ভোগ কর, এই শরীরটাকে সুখী কর। দেবতা ভাল, কি অসুর ভাল, সে কথা হচ্ছে না। বরং পুরাণের অন্ুর- গুলোই ত দেখি মনিধ্যির মত, দেবতাগুলে। ত অনেকাংশে হীন। এখন যদি বোঝ যে তোমর! দেবতার বাচ্চা আর পাশ্চাত্যের অনুরবংশ তা হলেই, ছুদেশ বেশ বুঝতে পার্বে। দেখ, শরীর নিয়ে প্রথম। বাহ্যাভ্যস্তর শুদ্ধি ৩৭ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য হচ্ছে-__পবিভ্রতা। মাটি জল প্রভৃতির দ্বারা শরীর শুদ্ধ হয়? উত্তম। ছুনিয়ার় এমন জাত শরীর শুদ্ধি বিষয়ে প্রা্যা কোথাও নেই যাদের শরীর হি'ছুদের টিতি মত সাফ। হি'ছ ছাড়া আর কোনও রি জাত জলম্শোচাদি করে না। তবু পাশ্চাত্যদের, চীনেরা কাগজ-ব্যবহার করাতে শিখিয়েছে__কিছু বাচোয়া। নাও নেই বললেই হয়। এখন ইংরেজরা ভারতে এসে স্নান-ঢুকিয়েছে দেশে। তবুও যে সব ছেলেরা বিলাতে পড়ে এসেছে তাদের জিজ্ঞাসা কর-যে স্নানের কি কষ্ট। যারা স্নান করে-সে সপ্তায় এক দিন সে দিন ভেতরের কাপড় আগ্ার-ওয়ার বদ্লায়। অবশ্য এখন পয়সা- ওয়ালাদের ভেতর অনেকে নিত্যন্ায়ী। আমেরিকরা একটু বেশী! জন্দমাণ_কালেভদ্রে ; ফরাসী প্রভৃতি কম্মিনকালেও না!!! স্পেন ইতালী অতি গরম দেশ, সে আরও নয়-রাশীকৃত লম্ুন খাওয়া দিন-রাত ঘন্মাত্ত, আর সাত জন্মে জলম্পর্শও না! সে গায়ের গন্ধে ভূতের চৌদ্দপুরুষ পালায়__ভূত ত ছেলেমানুষ। “গান মানে কি-_মুখটি মাথাটি ধোয়া, হাত ধোয়া__ যা বাহিরে দেখা যায়। আবার কি! পারি--সভ্যতার রাজধানী পারি, রঙ-টঙ ভোগবিলাসের ভূত্য্গ পারি, ৩৮ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বিদ্যা-শিল্পের কেন্দ্র পারি, সেই পারিতে এক বৎসর এক বড় ধনী-বন্ধু নিমন্ত্রণ করে আনলেন। এক প্রাসাদোপম মস্ত হোটেলে নিয়ে তুললেন--রাজভোগ খাওয়া-দাওয়া কিন্ত স্রানের নামটি নেই। ছুদিন ঠায় সহ করে-শেষে আর পারা গেল না। শেষে বন্ধুকে বলতে হলো- দাদা, তোমার এ রাজভোগ তোমারই থাকুক, আমায় এখন “ছেড়ে দে মা, কেঁদে বীচি হয়েছে । এই দারুণ গরমীকাল, তাতে স্নান করবার জো! নেই, হন্যে কুকুর হবার যোগাড় হয়েছি। তখন বন্ধু ছুঃখিত হয়ে চটে বললেন, “এমন হোটেলে থাকা হবে না, চল ভাল জায়গ। খুঁজে নিইগে ১ ১২টা প্রধান প্রধান হোটেলে খোঁজা হলো, স্নানের স্থান কোথাও নেই। আলাদা জ্রানাগার সব আছে, সেখানে গিয়ে 8৫ টাক! দিয়ে একবার স্নান হবে। হরিবোল হরি! সে দিন বিকালে কাগজে পড়া গেল--এক বুড়ী বান কর্তে টবের মধ্যে বসেছিল, সেইখানেই মারা পড়েছে !!! কাজেই জন্মের মধ্যে একবার বুড়ীর চামড়ার সঙ্গে জলম্পর্শ হতেই ঝুপোকাৎ |! এর একটি কথ! অতিরঞ্জিত নয় । রুশ- ফুদ্গুলে৷ ত আসল গনেচ্ছ, তিববং থেকেই ও ঢং আরম্ত। আমেরিকায় অবশ্য প্রত্যেক বাসাবাড়ীতে একট করে স্নানের ঘর ও জলের পাইপের বন্দোবস্ত আছে। ৩৯ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য কিন্ত তফাৎ দেখ আমরা শ্নান করি কেন 1-_ অধন্মের ভয়ে; পাশ্চাত্যের হাঁত-মুখ ধোয়- পরিষ্কার হবে বলে। আমাদের জল ঢাল্লেই হল, তা তেলই বেড়-বেড়ি করুক, আর ময়লাই লেগে থাকুক। আবার, দক্ষিণী ভায়া স্তান করে এমন লম্বা চওড়া তেলক কাটলেন যে, ঝামারও সাধ্য নয় তাকে ঘসে তোলে। আবার আমাদের স্নান সোজা কথা, যেখানে হক ডুব লাগালেই হল। ওদের সে এক-বস্তা কাপড় খুলতে হবে, তার বন্ধনই বা কি! আমাদের গ! দেখাতে লজ্জা নেই; ওদের বেজায়। তবে পুরুষে পুরুষে কিছুমাত্র নেই-বাপ বেটার সাম্নে উলঙ্গ হবে দোষ নেই। মেয়েছেলের সামনে আপাদমস্তক ঢাকৃতে হবে। “হিরাচার, অর্থাৎ পরিষ্কার থাকাটা, অন্যান আচারের ন্যায়, কখন কখন অত্যাচার বা অনাচার হয়ে পড়ে। ইউরোপী বলে যে, শরীর সম্বন্বী সমস্ত কার্ধ্য অতি গোপনে করা উচিত। উত্তম কথা। এই শৌচাদি ত দূরের কথা; লোক-মধ্যে থুথু ফেলা একটা মহা! অভদ্রতা। খেয়ে আচান সকলের সাম্নেঃ অতি লজ্জার কথা, কেন না কুলকুচো৷ তায় আছে। লোকলজ্জার ভয়ে, খেয়ে-দেয়ে মুখটি মুছে বসে থাকে; ৪০ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য -_ক্রমে ঈাতের সর্বনাশ হয়। সভ্যতার ভয়ে অনাচার । আমাদের আবার ছুনিয়ার লোকের সামনে, রাস্তায় বসে, বমির নকল কর্তে কর্তে মুখধোওয়া, ধ্রাত-মাজা আচান,__এটা অত্যাচার । সমস্ত কাধ্য গোপনে করা উচিত নিশ্চিত, তবে না করাও অনুচিত । আবার দেশভেদে যে সকল কাধ্য অনিবার্ধ্য, সেগুলো সমাজ সয়ে নেয়! আমাদের গরমদেশে খেতে বসে আধ ঘড়াই জল খেয়ে ফেলি--এখন টেঁকুর ন! তুলে যাই কোথা; কিন্তু ঢে'কুর তোল! পাশ্চাত্যদেশে অতি অভদ্রের কাজ। কিন্তু খেতে খেতে রুমাল বার করে দিব্যি নাক ঝাড়--তত দোষের নয় ; আমাদের দেশে ঘৃণার কথা । এ ঠাণ্ডা দেশে মধ্যে মধ্যে নাক ন! ঝেড়ে থাক৷ যায় না। ময়লাকে অত্যন্ত দঘ্বণা করে আমরা ময়ল! হয়ে থাকি অনেক সময়। ময়লায় আমাদের এত দঘ্বণা যে ছু'লে নাইতে হয়; সেই ভয়ে স্তপাকৃতি ময়লা দোরের পাশে পচতে দিই। না ছুঁলেই হল। এদিকে যে নরককুণ্ডে বাস হচ্ছে, তার কি? একটা অনাচারের ভয়ে আর একটা মহাঘোর অনাচার। একটা পাপ এড়াতে গিয়ে, আর একটা গুরুতর পাপ করছি। যার বাড়ীতে ময়লা, সে পাপী, তাতে আর সন্দেহ কি? তার ৪১ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সাজাও তাকে মরে পেতে হবে না,--অপেক্ষাও বড় বেশী কর্তে হবে না। আমাদের রান্নার মত পরিষ্কার রান্না কোথাও নেই। বিলেতি খাওয়ার শৃঙ্খলার মত পরিষ্কার পদ্ধতি আমাদের নেই। আমাদের রণাধুনী স্নান, করেছে ; কাপড় বদলেছে ; হাড়িপত্র উন্ুন সব ধুয়ে মেজে সাফ করেছে; নাকে মুখে গায়ে হাত ঠেকুলে, তখনি হাত ধুয়ে তবে আবার খাগ্া্রব্যে হাত দিচ্ছে। বিলাতি রাধুনীর চোদ্দ পুরুষে কেউ স্নান করে নি; রাধতে রাধতে চাখছে, আবার সেই চাম্চে হাঁড়িতে ডোবাচ্ছে। আহার মন্বত্ধে রুমাল বার করে ফৌৎ করে নাক ঝাড়লে, প্রাচ্য ও আবার সেই হাতে ময়দা মাখলে । শৌচ টানি থেকে এল-_কাগজ ব্যবহার করে সে হাত তুলন! ধোবার নামটিও নেই-_সেই হাতে রাধতে লাগলো । কিন্ত ধপ-ধপে কাপড় আর টুপি পরেছে। হয়ত, একট মস্ত কাঠের টবের মধ্যে ছুটে। মানুষ উলঙ্গ হয়ে ফ্লাড়িয়ে রাশীকৃত ময়দার উপর নাচছে-_ কিনা ময়দা মাখা হচ্ছে। গরমী কাল- _দরবিগলিত ঘাম পা রেয়ে সেই ময়দায় সেঁছুচ্ছে। তারপর তার রুটি তৈয়ার যখন হল, তখন ছুপ্ধফেননিভ তোয়ালের উপর চীনের বাসনে সজ্জিত হয়ে পরিষ্কার চাদর ৪২ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বিছানো টেবিলের উপর, পরিষ্কার কাপড়-পরা, কনুই পর্য্যন্ত সাদা দস্তানা-পর! চাকর, এনে সাম্নে ধর্লে ! কোনও জিনিষ হাত দিয়ে পাছে ছু'তে হয়, তাই কনুই পর্যন্ত দস্তানা। আমাদের স্নান-করা কামুন, পরিষ্কার বাসনে পরিষ্কার হাড়িতে, শুদ্ধ হয়ে রেধে গোময়সিক্ত মাটির উপর থালশুদ্ধ অন্ন-ব্যগ্রন ঝাড়লে ; বামুনের কাপড়ে খাম্ছে ময়লা উঠছে। হয়ত মাটি-ময়লা-গোবর আর ঝোল, কলাপাত ছেড়ার দরুন, একাকার হয়ে, এক অপূর্ব আশ্বাদ উপস্থিত করলে !! আমরা দিব্যি স্নান করে একখানা তেলচিটে ময়লা কাপড় পরলুম, আর ইউরোপে, ময়লা গায়ে, না-নেষে একটি ধপধপে পোষাক পর্লে। এইটি বেশ করে বোঝ, এইটি আগা-গোড়ার তফাৎ-হিন্দুর সেই যে অন্তদ্দষ্টি তা আগা-পাস্তলা সমস্ত কাজে। হি'ছ_ ছোড়া শ্যাতা মুড়ে কহিনুর রাখে; বিলাতিঃ সোনার বাক্সয় মাটির ডেল! রাখে! হি'ছর শরীর পরিষ্কার হলেই হল, কাপড় যা তা হকৃ! বিলাতির কাপড় সাফ থাকলেই হল, গায়ে ময়লা! রইলই বা! হি'ছুর ঘর-দোর ধুয়ে মেজে সাফ, তার বাইরে নরক-কুণ্ড থাকুক না কেন! বিলাতির মেজে কারপেটে মোড়া ঝক্ৰকে, ৪৩ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ময়লা সব ঢাকা থাকলেই হল!! হি'ছুর পয়ংনালী রাস্তার উপর-_হ্্গন্ধে বড় এসে যায় না। বিলাতির £নালী রাস্তার নীচে__টাইফয়েড ফিভারের বাস! !! হি কচ্ছেন,। ভেতরে সাফ। বিলাতি কচ্ছেন, বাইরে সাফ! চাই কি?-_পরিষ্কার নস পরিষ্কার কাপড় পরা। মুখধোয়া ঈাতমাজা, সব চাই--কিস্ত গোপনে । ঘর পরিষ্কার চাই। রাস্তা ঘাটও পরিষ্কার চাই। পরিষ্কার রাধুনী, পরিষ্কার হাতের রান্না চাই। পরিক্ষার মনোরম স্থানে পরিষ্কার পাত্রে খাওয়া! চাই। “আচারঃ পরমোধর্ন১-_( মন্ত্র ১-১০৮) ; আচারের প্রথম আবার পরিষ্কার হওয়া_সব রকমে পরিষ্কার হওয়া । আচার- ভ্রষ্টের কখন ধন্ম হবে? অনাচারীর ছঃখ দেখছ না, দেখেও শিখছ না? ওলাউঠা, এত মহামারী ম্যালেরিয়া, কার দোষ? আমাদের দোষ। আমরা মহা 'অনাচারী। আহার শুদ্ধ হলে মন শুদ্ধ হয়, মন শুদ্ধ হলে আত্মসন্বন্ধী অচল! স্মৃতি হয়-_-এ শান্ত্রবাক্য আমাদের দেশের সকল সম্প্রদায়েই মেনেছেন। তবে শঙ্করাচার্য্ের মতে “আহার' শব্ধের অর্থ “ইন্দ্রিয়, আর রামানুজা- চার্যের মতে “ভোজাদ্রব্য' । সর্বববাদিসম্মত সিদ্ধান্ত ৪৪ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য এই যে, হই অর্থই ঠিক। বিশুদ্ধ আহার না হলে ইন্দ্রিয়সকল যথাযথ কাধ্য কি করেই বা করে? কদর্ধ্য আহারে ইন্দ্রিয়সকলের গ্রহণ শক্তির হাস হয় বা বিপর্ধ্যয় হয়, এ কথা সকলেরই প্রত্যক্ষ। অজীর্ণ- দোষে এক জিনিষকে আর এক বলে ভ্রম হওয়া এবং আহারের অভাবে দৃষ্টি-আদি শক্তির হ্রাস সকলেই জানেন। সেই প্রকার কোনও বিশেষ আহার বিশেষ শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা! উপস্থিত করে, তাও ভূয়োদর্শনসিদ্ধ। আমাদের সমাজে যে এত খাগ্যাখাছোর বাচবিচার, তার মূলেও এই তত্ব; যদিও অনেক বিষয়ে আমরা বস্ত তুলে, আধারটা নিয়েই টানা-হেঁচড়া কর্ছি এখন। রামান্ুজাচার্ধ্য ভোজ্যদ্রব্য সম্বন্ধে তিনটি দোষ বাঁচাতে বল্ছেন। জাতিদোষ, অর্থাৎ যে দোষ ভোজ্য দ্রব্যের জাতিগত ; যেমন প্যাজ-লস্থন ইত্যাদি উত্তেজক দ্রব্য খেলে মনে অস্থিরতা আসে অর্থাৎ বুদ্ধিত্রষ্ট হয়। আশ্রয়দোষ অর্থাৎ যে দোষ ব্যক্তিবিশেষের স্পর্শ হতে আসে; হষ্ট লোকের অন্ন খেলেই হুষ্টবুদ্ধি আসবেই, সতের অল্পে সংবুদ্ধি ইত্যাদি। নিমিত্তদোষ অর্থাৎ ময়লা কদর্য কীট-কেশাদি-ছৃষ্ট অন্ন খেলেও মন অপবিত্র হবে। এর মধ্যে জাতিদোষ এবং নিমিত্তদোষ থেকে ৪৫ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বাঁচবার চেষ্টা সকলেই কর্তে পারে, আশ্রয়দোষ হতে বাচা সকলের পক্ষে সহজ নয়। এই আশ্রয়দোষ থেকে বাঁচবার জন্যই আমাদের দেশে ছুতমার্গ “ছুয়ো- না ছু'য়োনা”। তবে অনেকস্থলেই উল্টা সমক্লি রাম' হয়ে যায় এবং মানে না বুঝে একটা কিন্ুতকিমাকার কুসংস্কার হয়ে দীড়ায়। এস্থলে লোকাচার ছেড়ে লোক- গুরু মহাপুরুষদের আচারই গ্রহণীয়। শ্রীচৈতন্যদেব প্রভৃতি জগদ্গুরুদের জীবন পড়ে দেখ, তারা এ সম্বন্ধে কি ব্যবহার করে গেছেন। জাতিহ্ষ্ট অন্নভোজন সম্বন্ধে, ভারতবর্ষের মত শিক্ষার স্থল এখনও পৃথিবীতে কোথাও নাই। সমস্ত ভূমণগ্ডলে, আমাদের দেশের মত পবিত্র দ্রব্য আহার করে, এমন আর কোনও দেশ নেই। নিমিত্তদোষ সম্বন্ধে বর্তমানকালে বড়ই ভয়ানক অবস্থা হয়ে দাড়িয়েছে; ময়রার দোকান, বাজারে-খাওয়া, এ সব মহ! অপবিত্র দেখতেই পাচ্ছ, কিরূপ নিমিত্ত- দোষে হুষ্ট ময়লা আবর্জনা পচা-পন্কড় সব ওতে আছেন,--এর ফল হচ্ছে তাই। এই যে ঘরে ঘরে অজীর্ণ ও এ ময়রার দোকান, বাজারে-খাওয়ার ফল। এই যে প্রত্রাবের ব্যায়রামের প্রকোপ, ও এ ময়রার দোকান। এ যে পাড়ার্গায়ে লোকের তত অজীর্ণদোষ প্রশ্াবের ব্যায়রাম হয় না, তার প্রধান কারণ হচ্ছে ৪৬ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য লুচি-কচুরি প্রভৃতি “বিষলডডুকের' অভাব। এ কথা বিস্তার করে পরে বলছি। এই ত গেল খাওয়া-দাওয়া সম্বন্ধে প্রাচীন সাধারণ নিয়ম! এ নিয়মের মধ্যে আবার অনেক মতামত প্রাচীনকালে চলেছে এবং আধুনিক কালে চল্ছে। প্রথম প্রাচীনকাল হতে আধুনিক কাল পর্য্স্ত এক আমিষ ও মহা বিবাদ, আমিষ আর নিরামিষ । নিরামিব মাংস ভোজন উপকারক কি অপকারক? ভোজন তা ছাড়া জীবহত্যা ন্যায় বা অন্যায়, এ এক মহা বিতণ্ড। চিরদিনের । একপক্ষ বল্ছেন__ কোনও কারণে হত্যারূপ পাপ করা উচিত নয়; আর এক পক্ষ বল্ছেন-রাখ তোমার কথা, হত্যা! না করলে প্রাণধারণই হয় না। শাস্ত্রবাদীদের ভেতর মহাগোল। শাস্ত্রে একবার বল্ছেন, যজ্ঞস্থলে হত্যা কর--আবার বলছেন, জীবঘাত করো না। হি'ছ্রা সিদ্ধান্ত করছেন যে, যজ্ঞ ছাড়া অন্যত্র হত্যা করা পাপ। কিন্তু যজ্ঞ করে সুখে মাঘ ভোজন কর। এমন কি, গৃহস্থের পক্ষে অনেকগুলি নিয়ম আছে যে, সে সে স্থলে হত্যা না করলে পাপ; যেমন শ্রাদ্ধাদি। সে সকল স্থলে নিমন্ত্রিত হয়ে মাংস না খেলে পশুজন্ম হয়__মন্থ বলছেন। অপরদিকে জৈন বৌদ্ধ ৪৭ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বৈষুব বল্ছেন ষে, তোমার শাস্ত্র মানিনি, হত্যা করা কিছুতেই হবে না। বৌদ্ধ সম্রাট আশোক, যে যজ্ঞ কর্বে, বা নিমন্ত্রণ করে মাংস খাওয়াবে, তাকে সাজা দিচ্ছেন। আধুনিক বৈষ্ণব পড়েছেন কিছু ফাপরে- তাদের ঠাকুর রাম, বা কৃষ্ণ মদ-মাংস দিব্যি ওড়াচ্ছেন-_রামায়ণ মহাভারতে রয়েছে। সীতাদেবী গঙ্গাকে মাংস, ভাত, আর হাজার কলসী মদ মানছেন ।% বর্তমান কালে শান্ত্রও শুনবে না! ও মহাপুরুষ বলেছেন বললেও শোনে না। পাশ্চাত্যদেশে এরা লড়ছে যে, মাংস খেলে রোগ হয়, নিরামিষাশী নীরোগ হয় ইত্যাদি। এক পক্ষ বলছেন যে মাংসাহারীর যত রোগ; অপর পক্ষ বলছেন ও গল্প-কথা তা হলে হি"ছুরা নীরোগ হত, আর ইংরেজ আমেরিক প্রভৃতি প্রধান &* সীতামাদায় বাহুন্যাং মধুমৈরেয়কং শুচি ॥ পায়য়ামাস কাকুৎস্থঃ শচীমিন্ত্রো যথামৃতং | মাংসানি চ সুমিষ্টানি বিবিধানি ফলানি চ॥ ত্যবহারার্থং কিন্করস্ত,মাহরন্‌। রামায়ণ, উত্তর ৫১। স্থরাঘট সহমেণ মাংসভূতৌদনেন চ॥ ধক্ষ্যে ত্বাং প্রায়তাং দেবী পুবীং পুনরুপাগতা ॥ রামায়ণ, অযোধ্যা ৫৫। উতৌ মধবসবক্ষিপ্তৌ উভৌ চন্দনচর্চচিতৌ । উতৌ পর্যযঙ্করথিনৌ দৃষ্টো মে কেশবার্জুনৌ ॥ মহাভারত, আদিপর্বব | ৪8৮ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য প্রধান মাংসাহারী জাত, রোগে লোপাট হয়ে যেত এতদিনে । একপক্ষ বল্ছেন যে ছাগল খেলে ছাগলে বুদ্ধি হয়, শুয়োর খেলে শুয়োরের বুদ্ধি হয়, মাছ খেলে মেছে। বুদ্ধি হবে। অপর পক্ষ বল্ছেন যে, কপি খেলে কোপে! বুদ্ধি আলু খেলে , আলুয়ো বুদ্ধি এবং ভ খেলে ভেতো বুদ্ধি। জড়বুদ্ধির চেয়ে চৈতন্থবুদ্ধি হওয়া ভাল। এক পক্ষ বল্চছন, ভাত-ডালে যা আছে মাংসেও তাই» অপর পক্ষ বল্ছেন, হাওয়াতেও তাই, তবে তুমি হাওয়া খেয়ে থাক। এক পক্ষ বল্ছেন যে, নিরামিষ খেয়েও লোকে কত পরিশ্রম কর্তে পারে; অপর পক্ষ বলছেন, তা হলে নিরামিষাশী জাতিই প্রধান হতে; চিরকাল মাংসাশী জাতিই বলবান ও প্রধান। মাংসাহারী বলছে, হি'ছু-চীনে দেখ, খেতে পায় না, ভাত খেয়ে শাক-পাত়া খেয়ে মরে, ওদের দুর্দশ। দেখ-আর জাপানীরাও এ ছিল; মাংসাহার আরম্ভ করে অবধি ওদের ডোল ফিরে গেছে। ভারতবর্ষে দেড়লাখ হিন্দৃস্থানী সেপাই, এদের মধ্যে কয়জন নিরামিষ খায় দেখ। উত্তম সেপাই গোর্খা বা শিখ কে কবে নিরামিষাশী দেখ। একপক্ষ বলছেন যে, মাংসাহারে বদহজম, আর একপক্ষ বল. ছেন--সব ভুল, নিরামিষাশীগুলোরই যত পেটের ৪৯ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য রোগ । একপক্ষ বল্ছেন, তোমার কোষ্ঠাশুদ্ধিরোগ শাক-পাতড়া খেয়ে জোলাপবৎ ভাল হয়ে যায়, তা বলে কি হুনিয়াশুদ্ধকে তাই করতে চাও? ফলকথা, চিরকালই মাংসাশী জাতেরাই যুদ্ধবীর চিন্তাশীল ইত্যাদি। মাংসাশী জাতের বল্ছেন যে যখন যজ্জের ধুম দেশময় উঠত, তখনই' হিছুর মধ্যে ভাল ভাল মাথা বেরিয়েছে, এ বাবাজীডৌল হয়ে পধ্যন্ত একটাও মানুষ জম্মাল না। এ বিধায় মাংসাশীরা ভয়ে মাংসাহার ছাড়তে চায় না। আমাদের দেশে আধ্ধ্য- সমাজী সম্প্রদায়ের মধ্যে এই বিবাদ উপস্থিত। এক- পক্ষ বলছেন যে, মাংস খাওয়া একান্ত আবশ্যক ; আর পক্ষ বলছেন, একান্ত অন্ঠায়। এই ত বাদ-বিবাদ চলছে। সকল পক্ষ দেখে-শুনে আমার ত বিশ্বাস ধ্াড়াচ্ছে যে, হিছ্রাই ঠিক, অর্থাৎ [ইছুদের এ যে ব্যবস্থা যে জন্ম-কণ্ম-ভেদে আহারাদি সমস্তই পৃথক, এইটিই সিদ্ধান্ত। মাংস খাওয়া অবশ্য অসভ্যতা, নিরামিষভোজন অবশ্যই পবিভ্রতর। ধার উদ্দেশ্য কেবলমাত্র ধর্শ-জীবন, তার পক্ষে নিরামিষ, আর যাকে খেটে-খুটে এই সংসারের দিবারাত্র প্রতিদ্বন্দিতার মধ্য দিয়ে জীবন-তরী চালাতে হবে, তাকে সাংস খেতে হবে বৈ-কি। যতদিন মনুষ্যসমাজে এই ভাব থাকৃবে, ৫০ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য 'বলবানের জয়, ততদিন মাংস খেতে হবে বা অন্ত কোনও রকম মাংসের ন্যায় উপযোগী আহার আবিষ্কার কর্তে হবে। নইলে বলবানের পদতলে হুূর্বল পেষ৷ যাবে! রাম কি শ্যাম নিরামিষ খেয়ে ভাল আছেন বল্লে চলে না জাতি জাতির তুলনা করে দেখ। আবার নিরামিবাশীদের মধ্যেও হচ্ছে কৌদল। একপক্ষ বলচেন যে, ভাত আলু গম যব জনার প্রভৃতি শর্করাপ্রধান খাগ্ভও কিছুই নয়, ও সব মানুষে বানি- যেছে, এ সব খেয়েই যত রোগ। শর্করা-উৎপাদক (5৪7০1 ) খাবার রোগের ঘর। ঘোড়া গরুকে পর্য্যন্ত ঘরে বসে চাল-গম খাওয়ালে রুগী হয়ে যায়, আবার মাঠে ছেড়ে দিলে কচি ঘাস খেয়ে তাদের রোগ সেরে যায়। ঘাস শাক পাতা প্রভৃতি হরিং সবজিতে শর্করা- উংপাদক পদার্থ বড্ড কম। বনমানুষ জাতি বাদাম ও ঘাস খায়, আলু গম ইত্যাদি খায় না; যদি খায় ত অপৰ্ক অবস্থায়, যখন ষ্টার্চ (30:01) অধিক হয় নি। এই সমস্ত নানাপ্রকার বিতণডা চলছে। একপক্ষ বলছেন, শল্য মাংস আর যথেষ্ট ফল এবং ছুগ্ধ এইমাত্র ভোজনই দীর্ঘ- জীবনের উপযোগী । বিশেষ ফল, ফলাহারী অনেক দিন পর্ধ্যস্ত যুব! থাকবে, কারণ ফলের খাট্টা হাড়-গোড়ে জঙ্গ ধরতে দেয় না। ৫১ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য এখন সব্ববাদিসম্মত মত হচ্ছে যে, পুষ্টিকর অথচ শীঘ্র হজম হয় এমন-খাওয়া খাওয়া। অল্প আয়তনে অনেকট। পুষ্টি অথচ শীঘ্র পাক হয়, এমন খাওয়া চাই। যেখাওয়ায় পুষ্টি কম, তা কাজেই এক বস্তা খেতে হয়, কাজেই সারাদিন লাগে তাকে হজম করতে ৮ যদি হজমেই সমস্ত শক্তিটুকু গেল, বাকি আর কি কাজ করবার শক্তি রইল? ভাজা জিনিষগুলো আসল বিষ। ময়রার দোকান যমের বাড়ী। ঘি-৫তল গরম দেশে যত অল্প খাওয়া টা যার, ততই কল্যাণ। ঘিয়ের চেয়ে মাখন দেশের খাগ্তের শীঘ্র হজম হয়। ময়দায় কিছুই নাঈ, সমাপোচনা দেখতেই সাদা। গমের সমস্ত ভাগ যাতে আছে, এমন আটাই ন্ুুখাগ্ক। আমাদের বাঙ্গলা দেশের জন্য এখনও দূর পল্লীগ্রামে যে সকল আহারের বন্দোবস্ত আছে, তাহাই প্রশস্ত । কোন্‌ প্রাচীন বাঙ্গালী কৰি লুচি-কচুরীর বর্ণনা কচ্ছেন? ও লুচি-কচুরী এসেছে পশ্চিম থেকে। সেখানেও কালেভদ্রে লোকে খায়। উপরি উপরি “পাকি রন্ুু্ট+ খেয়ে থাকে এমন লোক ত দেখি নি। মথুরার চোবে কুস্তিগীর লুচি-লডডুক- প্রিয়; ছুচার বংসরেই চোবের হজমের সর্বনাশ হয়, আর “চোবেজী চুরণ খেয়ে খেয়ে মরেন। ৫২ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য গরীবরা খাবার জোটেনা বলে অনাহারে মরে, ধনীরা অথখাগ্ভ খেয়ে অনাহারে মরে। যা-তা পেটে পোরার চেয়ে উপবাস ভাল। ময়রার দোকানের খাবারে খাচ্য-দ্রব্য কিছুই নেই, একদম উল্টে! আছেন বিষ_বিষ--বিষ। পুর্ধেব ,লোকে কালে-ভদ্রে এ পাপগ্চলো খেত; এখন সহরের লোক বিশেষ বিদেশী যারা সহরে বাস করে, তাদের নিত্য ভোজন হচ্ছে এ । এতে অজীর্ণরোগে অপমৃত্যু হবে তায় কি বিচিত্র! ক্ষিদে পেলে ও কচুরী-জিলিপি খানায় ফেলে দিয়ে, এক পয়সার মুড়ি কিনে খাও-_সস্তাও হবে, কিছু খাওয়াও হবে। ভাত ডাল আটার-রুটি মাছ শাক দুধ যথেষ্ট খান্ভ। তবে ডাল দক্ষিণিদের মত খাওয়া উচিত, অর্থাৎ ডালের ঝোল-মাত্র, বাকিটা গরুকে দিও। ংস খাবার পয়সা থাকে, খাও, তবে ও পশ্চিমি নান। প্রকার গরম-মশলাগুলো বাদ দিয়ে। মশলাগুলো খাওয়া নয়-_ ওগুলো অভ্যাসের দোষ। ডাল অতি পুষ্টিকর খাগ্য, তবে বড়ই ছুষ্পাচ্য। কচি কলাই- নুটির ডাল অতি ন্ুপাচ্ এবং শ্ুম্বাহ; পারি রাজধানীর এ স্থপ একটি বিখ্যাত খাওয়া । কচি কলাইস্ুটি খুব সিদ্ধ করে, তারপর তাকে পিষে জলের সঙ্গে মিশিয়ে ফেল। তারপর একট! ছুধছ'কনির মত ৫৩ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য তারের ছণাকনিতে ছ'ণাকলেই খোসাগুলো বেরিয়ে আস্বে। এখন হলুদ ধনে জিরেমরিচ লঙ্কা, য1! দেবার দিয়ে সাঁতলে নাও-উত্তম সুম্বাহ স্ুুপাচ্য ডাল হল। যদি একট! পাঠার মুড়ি বা মাছের মুড়ি তার সঙ্গে থাকে, ত উপাদেয় হয়। এ যে এত প্রস্রাবের রোগের ধুম দেশে, ওর অধিকাংশই অজীর্ণ, ছুচার জনের মাথা ঘাঁমিয়ে, বাকি সব বদ্হজম। পেটে পুরলেই কি খাওয়া হলো? যেটুকু হজম হবে, সেইটুকু খাওয়া। ভুড়ি নাবা বদ্‌ হজমের প্রথম চিহ্ন। শুকিয়ে যাওয়া বা মোটা হওয়] ছুটোই বদ-হজম। পায়ের মাং লোহার মত শক্ত হওয়া চাই। প্রস্রাবের চিনি বা আল্বুমেন (4101062) দেখ! দিয়েছে বলেই হা” করে বসো না। ওসব আমাদের দেশের কিছুই নয়। ও গ্রাহোর মধ্যেই এনো না। খাওয়ার দিকে খুব নজর দাও অজীর্ণ না হতে পায়। ফাক! হাওয়ায় যতক্ষণ সম্ভব থাকৃবে। খুব হাট আর পরিশ্রম কর। যেমন করে পার ছুটি নাও, আর বদরিকাশ্রম তীর্থযাত্রা কর। হরিদ্বার থেকে পায়ে হেঁটে ১০* ক্রোশ ঠেলে পাহাড় চড়াই করে বদরিকাশ্রম যাওয়া-আসা একবার হলেই ও প্রত্রাবের ব্যারাম- ফ্যারাম ভূত ভাগবে। ডাক্তার ফাক্তার কাছে আসতে ৫৪8 প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দিও না, ওরা অধিকাংশ “ভাল কর্তে পাঁর্ব না, মন্দ কর্ব, কি দিবি তা বল্‌ পারত-পক্ষে ওষুধ খেয়ো না। রোগে যদি এক আনা মরে, ওষুধে মরে পনের আনা । পার যদি প্রতি বসর পুজার বন্ধের সময় হেঁটে দেশে যাও। ধন হওয়া, আর কুড়ের বাদশা হওয়া--দেশে এক কথা হয়ে দীড়িয়েছে। যাকে ধরে হাটাতে হয়, খাওয়াতে হয়, সেটা ত জীবন্ত রোগী, সেটা ত হতভাগা । যেটা লুচির ফুল্‌্কো ছি'ড়ে খাচ্ছে, সেটা ত মরে আছে। যে এক-দমে দশক্রোশ হাটতে পারে না, সেটা মানুষ, না কেঁচো? সেধে রোগ অকালমৃত্যু ডেকে আন্লে কে কি কর্বে? আবার এ&ঁ যে পাউরুটি উনিও হচ্ছেন বিষ, ওঁকে ছু'য়ো না একদম। খাম্বীর মিশলেই ময়দা এক থেকে আর হয়ে দ্াড়ান। কোনও খাম্বীরদার-জিনিষ খাবে না, এ বিষয়ে আমাদের শাস্ত্রে যে সর্বপ্রকার খাম্বীর- দার-জিনিষের নিষেধ আছে, এ বড় সত্য। শাস্ত্রেষে কোনও জিনিষ মিষ্টি থেকে টকেছে, তার নাম শুক্ত; তা খেতে নিষেধ,__-কেবল দই ছাড়া । দই অতি উপাদেয়-_উত্তম জিনিষ। যদি একান্ত পাউরুটি খেতে হয়, ত তাকে পুনর্ধবার খুব আগুনে সেকে খেও। অশুদ্ধ জল আর অশুদ্ধ ভোজন রোগের কারণ। ৫৫ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য আমেরিকায় এখন জলশুদ্ধির বড় ধুম। এখন এ যে ফিলটার, ওর দিন গেছে চুকে। অর্থাৎ ফিল্টার জলকে ছে'কে দেয় মাত্র, কিন্তু রোগের বীজ যে সকল কীটাণু তাতে থাকে, ওলাউঠা প্লেগের বীজ্ঞ, তা যেমন তেমনি থাকে; অধিকন্ত * ফিল্টারটি স্বয়ং এ সকল বীজের জন্মভূমি হয়ে দীড়ান। কলকেতাঝ যখন প্রথম ফিল্টার করা জল হল, তখন পাঁচ বৎসর নাকি ওলাউঠা হয় নাই; তারপর যে-কে সেই, অর্থাৎ সে ফিলটার মশাই 'এখন স্বয়ং ওলাউঠা বীজের আবাস হয়ে দীড়াচ্ছেন। ফিল্টারের মধ্যে দিশি তেকাঠার ওপর এষে তিন কলসীর ফিল্টার উনিই উত্তম, তবে ছুতিন দিন অন্তর বালি বা ধয়লা বদলে দিতে হবে বা পুড়িয়ে দিতে হবে। আর এ যে একটু ফটকিরি দেওয়া গঙ্গাতীরস্থ গ্রামের অভ্যাস, এটি সকলের চেয়ে ভাল। ফট.কিরির গুড়ো যথাসম্ভব মাটি ময়লা ও রোগের বীজ সঙ্গে নিয়ে আস্তে আস্তে তলিয়ে যান। গঙ্জাজল জালায় পুরে একটু ফট.কিরির গুঁড়ো দিয়ে খিতিয়ে যে আমরা ব্যবহার করি, ও তোমার বিলিতি ফিলটার-মিল্টারের চোদ্দ-পুরুষের মাথায় ঝাঁটা মারে, কলের জলের ছুশো বাপন্ত করে। তবে জল ফুটিয়ে নিতে পারলে নির্ভয় বটে। ফট.কিরি-থিতোন জল ৫৬ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে বাবহার কর, ফিলটার-মিলটার খানায় ফেলে দাও। এখন আমেরিকায় বড় বড় যন্ত্রযোগে জলকে একদম বাম্প করে দেয়, আবার সেই বাম্পকে জল করে, তারপর আর একটা যন্ত্র দ্বার! বিশুদ্ধ বায়ু তার মধ্যে পুরে দেয়। সে বায়ুটা বাষ্প হবার সময় বেরিয়ে যায়। সে জল: অতি বিশুদ্ধ; ঘরে ঘরে এখন দেখছি তাই। যাঁর ছুপয়সা আছে আমাদের দেশে, সে ছেলেপিলে গুলোকে নিত্য কচুরী মণ্তা মেঠাই খাওয়াবে! ভাত-রুটি খাওয়া অপমান 1! এতে ছেলেপিলে-গুলো নড়ে-ভোলা পেটমোটা আসল জানোয়ার হবে নাত কি? এত বড় ষণ্ডা জাত ইংরেজ, এরা ভাজাভূজি মেঠাই মোগার নামে ভয় খায়, যাদের বরফান্‌ দেশে বাঁস, দিনরাত কসরত ! আর আমাদের অগ্নিকুণ্ডে বাস, এক ঘর থেকে আর ঘরে নড়ে বসতে চাটনি, আর আহার লুচি-কচুরী মেঠাই-_ঘিয়েভাজা, তেলেভাজা || সেকেলে পাড়াগেঁয়ে জমিদার এক কথায় দশ ক্রোশ হেঁটে দিত, ছুকুড়ি কই মাছ কাটা- শুদ্ধ চিবিয়ে ছাড়ত, ১০০ বৎসর বাচত। তাদের ছেলে- পিলেগুলো কলকেতায় আসে, চশমা চোখে দেয়, লুচি-কচুরী খায়, দিনরাত গাড়ী চড়ে, আর প্রস্রাবের ব্যামো হছে মরে; “কলকেত্তা'ই হওয়ার এই ফল !! ৫৭ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য আর সর্ধনাশ করেছে এ পোড়া ডাক্তার বদ্দিগুলো। ওরা সর্কজান্তা, ওষুধের জোরে ওরা সব কর্তে পারে। একটু পেট গরম হয়েছে, ত অমনি একটু ওষুধ দাও ; পোড়া বদ্দিও বলেনা যে, দূর কর ওষুধ, যা, ছুক্রোশ হেঁটে আসগে যা। নানান্‌ দেশ দেখছি, নানান্‌ রকমের খাওয়াও দেখডি। তবে আমাদের ভাত ডাল ঝোল চচ্চড়ি, শুক্তো মোচার-ঘণ্টোর জন্য পুনর্জন্ম নেওয়াও বড় বেশী কথা মনে হয় না। দাত থাকৃতে তোমরা যে রাতের মর্যাদা বুঝছো। না, এই আপশোস। খাবার নকল কি ইংরেজের কর্তে হবে_সে টাকা কোথায়? এখন আমাদের দেশের উপযোগী যথার্থ বাঙ্গালী খাওয়া, উপাদেয় পুষ্টিকর ও সস্তা খাওয়া পূর্্ব-বাঙ্গলায়, ওদের নকল কর, যত পার। যত পশ্চিমের দিকে ঝু'কৃবে, ততই খারাপ; শেষ কলাইয়ের ডাল আর মাছের টক্‌ মাত্র আধা-সাওতালী বীরভূম বাঁকৃড়োয় দীড়াবে !! তোমরা কলকেতার লোক, এ যে এক সর্বনেশে ময়দার তালে হাতে মাটি দেওয়া ময়রার দোকানরূপ সর্ধনেশে ফাদ খুলে বসেছ, ওর মোহিনীতে বীরভূম, বাঁকৃড়ে? ধামাপ্রমাণ মুড়ি দামোদরে ফেলে দিয়েছে, কলায়ের ডাল গেছেন খানায়, আর পোস্তবাট! দেয়ালে লেপে দিয়েছে, ঢাকা বিক্রমপুরও ঢণইমাছ, কচ্ছপাদি জলে ৫৮ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ছেড়ে দিয়ে, “সইভ্য' হচ্ছে !! নিজেরা ত উচ্ছন্ন গেছ, আবার দেশশুদ্ধকে দিচ্ছ, এই তোমরা বড্ড সভ্য, সহুরে লোক! তোমাদের মুখে ছাই ! ওরাও এমনি আহাম্মক যে, এ কলকেতার আবর্জনাগুলো খেয়ে উদরাময় হয়ে মর"মর হবে তবু বল্বে না, যে এগুলো হজম হচ্ছে না, বলবে-নোনা লেগেছে !! কোনও রকম করে সন্থরে হবে !! খাওয়া-দাওয়া! সম্বন্ধে ত এই মোট কথা শুন্লে। পাঠাতে এখন পাশ্চাত্যের কি খায় এবং তাদের আহার আহারের ক্রমশঃ কেমন পরিবর্তন হয়েছে, তাও কিছু বলি। গরীব অবস্থায় সকল দেশের খাওয়াই ধাম্তবিশেষ ; এবং শাক তরকারি, মাস মাংস বিলাসের মধ্যে এবং চাটুনির মত ব্যবহৃত হয়। যে দেশে যে শস্ত প্রধান ফসল, গরীবদের প্রধান খাওয়া তাই ; অন্যান্ত জিনিষ আনুষঙ্গিক । যেমন বাঙ্গাল ও উড়িষ্যা ও মান্দ্রাজ উপকূলে ও মালাবার উপকূলে ভাত প্রধান খাস; তার সঙ্গে ডাল, তরকারী, কখন কখন. মাছ মাংস চাটনিবৎ। রি ভারতবর্ষের অন্ঠান্ত সর্ধবদেশে অবস্থাপন্ন লোকের জন্ত গমের রুটি ও ভাত; সাধারণ লোকের ৫৯ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য নানাপ্রকার বজ.রা, মড্য়া, জনার, ঝিঙ্গোরা প্রভৃতি ধান্যের রুটি প্রধান খাগ্ঠ। শাক তরকারি ডাল মাছ মাংস সমস্তই সমগ্র ভারতবর্ধে এ রুটি বা ভাত্কে সুস্বাু করবার জন্য ব্যবহার--তাই ওদের নাম ব্যঞ্জন। এমন কি পাঞ্জাব রাজপুতানা ও দাক্ষিণাত্যদেশে অবস্থাপন্ন আমিষাশী লোকেরাও এমন কি রাজারাও যদি নিত্য নানাপ্রকার মাংস ভোজন করেন, তথাপি রুটি বা ভাতই প্রধান খাদ্য । যেবাক্তি আধসের মাংস নিত্য খায়, সে এক সের রুটি তার সঙ্গে নিশ্চিত খায় । পাশ্চাত্যদেশে এখন যে সকল গরীব দেশ আছে এবং ধনী দেশের গরীবদের মধ্যে এ প্রকার রুটি এবং আলুই প্রধান খাগ্ ; মাংসের চাটনি মাত্র-_তা-ও কালে ভদ্রে। স্পেন, পোর্ত,গাল, ইতালি প্রসৃতি অপেক্ষাকৃত উষ্ণদেশে যথেষ্ট দ্রাক্ষা জন্মায় এবং দ্রাক্ষা-ওয়াইন্‌ অতি সস্তা । সে সকল ওয়াইনে মাদকতা নাই (অর্থাৎ পিপে- খানেক না খেলে ত আর নেশ! হবে না এবং তা কেউ খেতেও পারে না) এবং যথেষ্ট পুষ্টিকর খানা । সে দেশের দরিদ্র লোকে এজন্য মাছ-মাংসের জায়গায় এ দ্রাক্ষা-রস দ্বার! পুষ্টি সংগ্রহ করে। কিন্তু উত্তরাঞ্চল, যেমন রুশিয়া, সুইডেন, নরওয়ে প্রভৃতি দেশে দরিদ্র ৬০ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য লোকের আহার প্রধানতঃ রাই-নামক ধান্তের রুটি ও এক আধটুক্রা শুঁটকি মাছ ও আলু। ইউরোপের অবস্থাপন্ন লোকের এবং আমেরিকার আবালবৃদ্ধবনিতার খাওয়া আর এক রকম, অর্থাৎ রুটি, ভাত প্রভৃতি চাটনি এবং, মাছ মাংসই হচ্ছে খাওয়া । আমেরিকায় রুটি খাওয়! নাই বল্লেই হয়। মাছ মাছই এলো, মাংস মাংসই এলো, তাকে অমনি খেতে হবে, ভাত-রুটির সযোগে নয়। এবং এজন্য প্রত্যেক বারেই থাল! বদ্লান হয়। যদি দশট1 খাবার জিনিষ থাকে ত দশবার থালা বদলাতে হয়। যেমন মনে কর, আমাদের দেশে প্রথমে শুধু শুক্ত এলো, তারপর থালা বদূলে শুধু ডাল এলো, আবার থালা! বদলে শুধু ঝোল এলো, আবার থালা বদ্লে ছুটি ভাত, নয় ত ছুখান লুচি ইত্যাদি। এর লাভের মধ্যে এই যে, নানা জিনিষ অল্প অল্প খাওয়া হয়, পেট বোঝাই করা হয় না। ফরাসী- চাল সকালবেলা “কাফি এবং এক আধ টুকরো রুটি- মাখন ; ছুপুর বেলা মাছ মাংস ইত্যাদি মধাবিৎ ; রাত্রে লম্বা খাওয়া । ইতালি, স্পেন প্রভৃতি জাতিদের এ এক রকম ; জন্মাণরা ক্রমাগত খাচ্ছে,পাচ বার, ছ বার, প্রত্যেক বারেই অক্প-বিস্তর মাংস। ইংরাজরা তিনবার ; সকালে অল্প, কিন্তু মধ্যে মধ্যে কাফি-যোগ, চা-যোগ ৬১ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য আছে। আমেরিকদের তিনবার_ উত্তম ভোজন, মাংস প্রচুর। তবে এ সকল দেশেই “ডিনার'ট! প্রধান খাদ্য --ধনী হলে, তার ফরাসী রাধুনী এবং ফরাসী চাল। প্রথমে একটু-আধটু নোনা! মাছ বা মাছের ডিম, ব! কোনও চাট্নি বা সবজি । এট! হচ্ছে ক্ষুধাবৃদ্ধি, তার- পর সপ; তারপর আঙ্গকাল ফ্যাসান্-একটা ফল; তারপর মাছ, তারপর মাংসের একটা তরকারী ; তার- পর থান্-মাংস শৃল্য, সঙ্গে কাচা সবজি; তারপর আরণা-মাংস মৃগপক্ষ্যাদি; তারপর মিষ্টান্ন) শেষ কুল্পী,_“মধুরেণ সমাপয়েৎ। ধনী হলে প্রায় প্রতোক বার থাল বদ্লাবার সঙ্গে সঙ্গে মদ বদ্লাচ্ছে, _সেরি, ক্লারেট, স্তামপ ইত্যাদি এবং মধ্যে মধ্যে মদের কুল্পী একটু-আধটু। থাল বদ্লাবার সঙ্গে সঙ্গে কাটা-চামচ সব বদ্লাচ্ছে। আহারান্তে 'কাফি'-_বিনা দুগ্ধ, আসব- মদ্য খুদে খুদে গ্রাসে এবং ধূমপান। খাওয়ার রকমারির সঙ্গে মদের রকমারি দেখাতে পার্লে, তবে িডমান্ষি চাল” বল্বে। একট! খাওয়ায় আমাদের দেশের একটা মধ্যবিং লোক সর্বন্থাস্ত হতে পারে, এমন খাওয়ার ধুম এর! করে। আর্ধ্যরা একটা গীঠে বসত, একটা গীঠে ঠেসান দিত এবং জলচৌকীর উপর থালা রেখে, এক ৬২ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য থালাতেই সকল খাওয়া খেত। এ চাল এখনও পাঞ্জাব রাজপুতান! মহারাষ্ট্র ও গুর্র দেশে বিদ্যমান। বাঙ্গালী উড়ে হেলিঙ্গি মালাবারি প্রভৃতি মাটিতেই “সাপড়ান?। মহীশৃূরের মহারাজও মাটিতে আঙ্গট পাতে ভাত ডাল খান। মুসলমানেরা চাদর পেতে খায়। বন্দি জাপানী প্রভৃতি উপু হয়ে বসে মাটিতে থালা রেখে খায়। চীনেরা টেবিলে খায়; চেয়ারে বসে, কাটি ও চামচ যোগে খায়। রোমান ও গ্রীক্রা কোচে শুয়ে টেবিলের ওপর থেকে হাত দিয়ে খেত। ইউরোপীরা টেবিলের ওপর হতে, কেদারায় বসে, হাত দিয়ে পুর্বে খেত; এখন নানা প্রকার কাটা-চামচ। চীনের খাওয়াটা কসর বটে_যেমন আমাদের পানওয়ালীরা ছুখানা সম্পূর্ণ আলাদা লোহার পাতকে হাতের কায়দায় কাচির কাজ করায়, চীনেরা তেমনি ছুটো কাটিকে ভান-হাতের ছুটো৷ আঙ্গুল আর মুটোর কায়দায় চিম্টের মত করে শাকাদি মুখে তোলে। আবার ছুটোকে একত্র করে, এক বাটি ভাত মুখের কাছে এনে, এ কাটিছয়নির্টিত খোস্তাযোগে ঠেলে-ঠেলে মুখে পোরে। সকল জাতিরই আদিম পুরুষ নাকি প্রথম অবস্থায় যা পেত তাই খেত। একটা জানোয়ার মার্লে, সেটাকে | ৬৩ প্রাচ্য ও পাশ্চাতা এক মাস ধরে খেত; পচে উঠলেও তাকে ছাড়ত না। ক্রমে সভা হয়ে উঠলো, চাষ-বাস শিখ লে; আরণ্য পশুকুলের মত একদিন বেদম্‌ খাওয়া, আর হু পাচ-দিন অনশন, ক্রমে ঘুচলো; আহার নিত্য জুটুতে লাগল ; কিন্ত পচা জিনিষ খাবার চাল একটা দীড়িয়ে গেল। পচ! ছুর্গন্ধ একট! যা হয় কিছু, আবশ্যক ভোজ্য হতে নৈমিত্তিক আদরের চাটুনি হয়ে দাড়াল। এম্কুইমো জাতি বরফের মধ্যে বাস করে। শম্ত সে দেশে একদম জন্মায় নাঃ নিত্য ভোজন-_মাছ মাংস; ১০১৫ দিনে অরুচি বোধ হলে, একটুক্রা পছ মাংস খায়__অরুচি সারে। ইউরোপীরা এখনও, বন্য পশত-পক্ষীর মাংস না পচলে খায় না। তাজা পেলেও তাকে টাঙ্গিযে রাখে যতক্ষণ না পচে দুর্গন্ধী হয়। কলকেতায় পচা হরিণের মাংস পড়তে পায় না; রসা ভেটকির উপাদেয়তা প্রসিদ্ধ । ইংরেজদের পনীর যত পচবে, যত পোকা কিলবিল কর্বে, ততই উপাদেয়। পলায়মান পনীর- কীটকেও তাড়া করে ধরে সুখে পুর্বে-তা নাকি বড়ই নুম্থাদু || নিরামিষাশী হয়েও প্যাজ-লম্মুনের জন্য ছেশক ছেিক কর্বে, দক্ষিণি বামুনের প্যাজ-লসুন নইলে খাওয়াই হবে না। শাস্ত্রকারেরা সে পথও বন্ধ করে ৬৪ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দিলেন। প্যাজ লম্মুন। গোঁয়ো শোর, গোয়ো মুরগি খাওয়া এক জাতের পাপ, সাজা-_জাতিনাশ। যার! শুনলে এ কথা, তারা ভয়ে প্যাজ লম্ুন ছাড়লে, কিন্তু তার চেয়ে বিষমছ্রন্ধ হিঙ্গ খেতে আরম্ভ কর্লে! পাহাড়ী গৌড় হিছু লম্থনে-ঘাস প্যাজ-লম্থনের জায়গায় ধরলে । ও ছুটোর নিষেধ ত আর পুঁথিতে নেই !! সকল ধর্মেই খাওয়া-দাওয়ার একটা বিধি-নিষেধ 7 নাই কেবল ক্রিশ্চানি ধর্মে বিধি নিষেধের. জৈন, বৌদ্ধ মাহ মাংস খাবেই না। জৈন তাৎপর্য আবার যা মাটির নীচে জন্মায়, আলু মূলে! প্রভৃতি, তাও খাবে না। খুঁড়তে গেলে পোকা মর্বে, রাত্রে খাবে না-_মন্ধকারে পাছে পোকা খায়। যাহুদীরা যে মাছে আশ নেই তা খাবে না, শোর খাবে না, যে জানোয়ার দ্বিশফ নয় এবং জাবর কাটে না, তাকেও খাবে না। আবার বিষম কথা, ছৃধ বা দুগ্ধোংপন্ন কোনও জিনিষ যদি হেঁসেলে ঢোকে, যখন মাছ-মাংস রান্ন৷ হচ্ছে, ত সে সব রান্না ফেলে দিতে হবে। এ বিষয় গোড়া যাহুদী অন্ত কোনও জাতির রাম্মা খায় না! আবার হি'ছুর মত য়াহুদীর1 বৃথা-মাংস খায় না। যেমন বাঙ্গলা দেশ ও পঞ্জাবে মাংসের নাম 'মহাপ্রমাদ'। ঘ্াহুদীরা সেই প্রকার মহাপ্রসাদ অর্থাৎ ৬৫ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য যথানিয়মে বলিদান না হলে মাংস খায় না। কাজেই হি'ছর মত য়াহুদীদেরও যে-সে দোকান হতে মাংস কেনবার অধিকার নেই। মুসলমানের য়াহুদীদের অনেক নিয়ম মানে, তবে অত বাড়াবাড়ি করে না; হুধ, মাছ, মাংস, একসঙ্গে খায় না এইমাত্র, ছোয়া-ছুম়ি হলেই যে সর্ধনাশ, অত মানে না। য্লাহ্ুদীদের আর হিছ্দের অনেক সৌসাদৃশ্ঠ__খাওয়া সম্বন্ধে; তবে য়াহুদীর। বুনো৷ শোরও খায় না, হি'ছুরা খায়। পাঞ্জাবে মুসলমান-হি'ছুর বিষম সংঘাত থাকায়, বুনো শোর আবার হি'ছুদের একট! অত্যাবশ্যক খাওয়া হয়ে দাড়িয়েছে। রাজপুতদের মধ্যে বুনো শোর শিকার করে খাওয়া, একট] ধন্মবিশেষ। দক্ষিণদেশে ব্রাহ্মণ ছাড়া অন্যান্য জাতের মধো গেঁও শোরও যথেষ্ট চলে। হি'ছ্রা বুনো মুরগি খায়, গেঁও খায় না। বাঙ্গালা দেশ থেকে নেপাল ও আ-কাশ্মীর হিমালয়_-এক রকম. চালে চলে। মনৃক্ত খাওয়ার প্রথা এই অঞ্চলেই সমধিক বিদ্ধমান আজও । কিন্তু কুমায়ুন হতে আরম্ত করে কাশ্মীর পর্য্স্ত, বাঙ্গালী, বেহারী, প্রয়াগী ও নেপালীর চেয়েও মন্নুর আইন বিশেষ প্রচার। যেমন বাঙ্গালী মুরগি বা মুরগির ডিম খায় না, কিন্তু হাসের ডিম খায়, নেপালীও ৬৬ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য তাই; কিন্তু কুমায়ুন হতে তাও চলে না। কাশ্মীরীরা বুনো হাসের ডিম পেলে সুখে খায়, গ্রাম্য নয়। আলাহাবাদের পর হতে, হিমালয় ছাড়া; ভারতবর্ষের অন্থ সমস্ত দেশে যে ছাগল খায়, সে মুরগিও খায়। এই সকল বিধি-নিষেধের মধ্যে অধিকাংশই যে স্বাস্থ্যের জন্য, তার সন্দেহ নাই। তবে সকল জায়গায় সমান পারে না। শোর মুরগি যা-তা খায়, অতি অপরিষ্কার জানোয়ার__কাজেই নিষেধ ; বুনো৷ জানোয়ার কি খায়--কে দেখতে যায়, বল। তা ছাড়া রোগ-_ বুনো জানোয়ারে কম। ছুধ, পেটে অল্নাধিক হলে একেবারেই ছুম্পাচ্য এমন কি একদমে এক গ্রাস দুধ খেয়ে কখন কখন সম্ভঃ মৃত্যু ঘটেছে । ছুধ-যেমন শিশুতে মাতৃস্তন্ত পান করে, তেমনি ঢোকে-ঢোকে খেলে তবে শীত্র হজম হয়, নতুবা! অনেক দেরী লাগে। ছুধ একটা গুরুপাঁক জিনিষ, মাংসের সঙ্গে হজম আরও গুরুপাক--কাজেই এ নিষেধ য়াহুদীদের মধ্যে। মূর্খ মাতা কচিছেলেকে জোর করে টক্-টক্‌ করে ছুধ খাওয়ায় আর ছু-ছ মাসের মধ্যে মাথায় হাত দিয়ে কাদে! এখনকার ডাক্তারের পুর্ণ বয়স্কের জন্যেও একপোয়া ছুধ আন্তে-আস্তে আধ ঘণ্টায় খাওয়ার বিধি দেন; কচি ছেলেদের জঙ্য “ফিডিং ৬৭ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বটল” ছাড়া উপাধাস্তর নেই। মা ব্যস্ত কাজে__দাসী একটা ঝিনুকে করে ছেলেটাকে চেপে ধরে সা-স? ছুধ খাওয়াচ্ছে !! লাভের মধ্যে এই যে রোগা-পটকাগুলো! আর বড়, বড় হচ্ছে না, তারা এখানেই জন্মের শোধ হৃধ খাচ্ছে; আর যে গুলে! এ বিষম খাওয়ানের মধ্য দিয়ে ঠেলে-ঠুলে উঠছে সে গুলো প্রায় সুস্থকায় এবং বলিষ্ঠ। সেকেলে আতুড় ঘর, দুধ খাওয়ান প্রভৃতির হাত থেকে যে ছেলেপিলেগুলো বেঁচে উঠত, সে গুলে! একরকম নুস্থ-সবল আজীবন থাকৃত। মা যষ্ঠীর সাক্ষাং বরপুজ না হলে কি আর সেকালে একটা ছেলে বাচত |! সে তাপসেক দাগার্ফোড়। প্রভৃতির মধ্য দিয়ে বেঁচে ওঠা, প্রস্থৃতি ও প্রন্থৃত উভেয়েরই পক্ষে ছুঃসাধ্য ব্যাপার ছিল। হরিল্লুঠের তুলসীতলার খোকা ও মা-_ ছুই প্রায় বেঁচে যেত, সাক্ষাৎ যমরাজের দূত চিকিৎসকের হাত এড়াত বোলে। সকল দেশেই কাপড়ে চোপড়ে কিছু না কিছু ভদ্রতা লেগে থাকে। ব্যাতন না জান্লে বোদ্র অবোদ্র বুঝবো ক্যামনে ? শুধু ব্যাতনে নয়, কাপড় ন! শত দেখলে বোড্র অবোদ্র বুঝবো ক্যামূনে, সর্বদেশে কিছু না কিছু চলন। আমা" দের দেশে শুধু গায়ে ভদ্রলোক রাস্তায় বেরুতে পারে ৬৮ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য না, ভারতের অন্যান্ত প্রদেশে আবার পাগড়ী না মাথায় দিয়ে কেউই রাস্তায় বেরোয় না।॥ পাশ্চাত্য দেশে ফরাসিরা বরাবার সকল বিষয়ে অগ্রনী, তাদের খাওয়া, তাদের পোষাক সকলে নকল করে।, এখনও ইউ- রোপের ভিন্ন ভিন্ন দেশে ,বিশেষ বিশেষ পোষাক বিষ্কমান, কিন্তু ভদ্র হলেই, দৃপয়সা হলেই, অমনি সে পোষাক অন্তপ্ধান, আর ফরাসি পোষাকের আবির্ভাব । কাবুলী পাজামা-পরা ওলন্দাজি চাষা, ঘাঘরা-পরা গ্রীক, তিব্বতি-পোষাক-পরা রুষ, যেমন “বোড্র” হয়, অমনি ফরাসি কোট প্যান্টালুনে আবৃত হয়। মেয়েদের ত কথাই নেই, তাদের পয়স৷ হয়েছে কি পারি রাজধানীর পোষাক পর্তে হবেই হবে। আমেরিকা, ইংলগু, ফ্রান্স ও জান্মণী এখন ধনী জাত; ওসব দেশে সকলেরই একরকম পোষাক-_সেই ফরাসি নকল। তবে আজকাল পারি অপেক্ষা লণ্ডনে পুরুষদের পোষাক ভব্যতর, তাই পুরুষদের পোষাক “লগ্তন মেড, আর মেয়েদের পারিসিযেন নকল। যাদের বেশী পয়সা, তারা এ ছুই স্থান হতে তৈরী পোষাক বারমাস ব্যবহার করে। আমেরিকা বিদেশী আমদানী পোষাকের উপর ভয়ানক মাশুল বসায়, সে মাশুল দিয়েও পারি লণ্ডুনের পোষাক পর্তে হবে। এ কাজ একা ৬৯ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য আমেরিকরা পারে-_আমেরিকা এখন কুবেরের প্রধান আড্ডা! প্রাচীন আধ্যজাতিরা ধুতি-চাদর পর্ত; ক্ষত্রিয়- দের ইজার ও লম্বা জামা, লড়ায়ের সময়। অন্ত সময় সকলেরই ধুতি-চাদর। কিন্ত পাগড়ীটা ছিল। অতি প্রাচীনকালে ভারতবর্ষে মেয়ে-মদ্দে পাগড়ী পর্ত। এখন যেমন বাঙ্গালা ছাড়া! অন্যান্য প্রদেশে কপনী মাত্র থাকৃলেই শরীর ঢাকার কাজ হলো, কিন্ত পাগড়ীটা চাই , প্রাচীনকালেও তাই ছিল, মেয়ে-মদের | বৌদ্ধদের সময়ের যে সকল ভাস্কর্ষামূত্তি পাওয়া যায়, তারা মেয়ে-মন্দে কৌগীন-পরা। বুদ্ধদেবের বাপ কপনী পরে বসেছেন সিংহাসনে ; তদ্বং মা-ও বসেছেন- বাড়ার ভাগ, এক পা মল ও এক হাত বালা; কিন্তু পাগড়ী আছে !! সম্রাট ধন্মাশোক ধুতি পরে, চাদর গলায় ফেলে, আছুড় পায়ে, একটা ডমর-আকার আসনে বসে নাচ, দেখছেন! নর্তকীরা দিব্যি উলঙ্গ; কোমর থেকে কতকগুলো ম্তাকড়ার ফালি বুল্ছে। মোদ্দা, পাগড়ী আছে। “নেবু-টেবু সব এ পাগড়ীতে। তবে রাজ- সামন্তরা ইজার ও লম্বা জামা পরা-চোস্ত ইজার ও চোগা। সারধি নলরাজ এমন রথ চালালেন যে, রাজ! খতুপর্ণের চাদর কোথায় পড়ে রইল; রাজা ৭৭ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য খতুপর্ণ আছুড় গায়ে বে করতে চল্লেন। ধুতি-ঢাদর আর্যদের চিরন্তন পোষাক, এই জন্াই ক্রিয়াকন্মের বেলায় ধুতি-চাদর পরতেই হয়। প্রাচীন গ্রীক ও রোমকদের পোষাক ছিল ধুতি- চাদর ; একথান বৃহং কাপড় ও চাদর-_-নাম “তোগা” তারি অপত্রশ এই “চোগাঁ। তবে কখনও কখনও একটা পিরহানও পরা হত। যুদ্ধকালে ইজার-জাম। মেয়েদের একটা খুব লম্বা চৌড়া চারকোণা জামা, যেমন ছৃখানা বিছানার চাদর লম্বা-লঘ্বি সেলাই করা, চওড়া দিক্‌ খোলা । তার মধ্যে ঢুকে কোমরটা বাধলে ছুবার--একবার বুকের নীচে, একবার পেটের নীচে। তারপর উপরের খোলা দুপাট ছু হাতের উপর ছু জায়গায় তুলে মোটা ছু'চ দিয়ে আট্কে দিলে যেমন উওরাখণ্ডের পাহাড়ীরা কম্বল পরে। সে পোষাক অতি সুন্দর ও সহজ। ওপরে একখান চাদর। কাটা কাপড় এক ইরাণীরা প্রাচীনকাল হতে পরত। বোধ হয় চীনেদের কাছে শেখে। চীনের হচ্ছে সভ্যতার অর্থাৎ ভোগবিলাসের স্ুখস্বচ্ছন্দতার আদ. গুরু। অনাদি কাল হতে চীনে টেবিলে খায়, চেয়ারে বসে, যন্ত্রতন্ত্র কত খাওয়ার জন্য, এবং কাটা পোষাক নানা রকম, ইজাব জাম টুপিটাপা! পরে। , ৭৯ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সিকন্দর-সা' ইরাণ জয় করে, ধুতি-চাদর ফেলে ইজার পর্তে লাগলেন। তাতে তার ব্বদেশী সৈন্তেরা এমন চটে গেল যে বিদ্রোহ হবার মত হয়েছিল। মোদ্দা, সিকন্দর নাছাড় পুরুষ__ইঞ্জার-জাম চালিয়ে দিলেন। গরমদেশে কাপড়ের দরকার বড় হয় না। কৌগীন- মাত্রেই লজ্জানিবারণ, বাকি কেবল অলঙ্কার। ঠাণ্ডা- দেশে শীতের চোটে অস্থির, অসভ্য অবস্থায় জানোয়ারের ছাল টেনে পরে, ক্রমে কম্বল পরে, ক্রমে জামা- পাজাম! ইত্যাদি নানান খানা হয়। তারপর আছুড়- গায়ে গয়না পর্তে গেলেইত ঠাণ্ডায় মৃত্যু, কাজেই অলঙ্কার-প্রিয়তাটা এ কাপড়ের উপর গিয়ে পড়ে। যেমন আমাদের দেশের গয়নার ফ্যাসান বদলায়, এদের তেমনি ঘড়ি-ঘড়ি বদলাচ্ছে কাপড়ের ফ্যাসান। ঠাণগ্ডাদেশমাত্রেই এজন্য সর্বদা সর্বাঙ্গ না ঢেকে কারুর সামনে বেরুবার যো নেই। বিলেতে ঠিক ঠিক পোষাকটি না পরে ঘরের বাইরে যাবার যো নেই। পাশ্চাত্যদেশের মেয়েদের পা দেখান বড়ই লজ্জা কিন্ত গলা ও বুকের খানিকট! দেখান যেতে পারে। আমাদের দেশে মুখ দেখান বড়ই লজ্জা; কিন্ত সে ঘোমটা টানার চোটে সাড়ী কোমরে ওঠেন উঠুন, তায় ৭২ গ্রাচ ও পাশ্চাতা দোষ নেই। রাজপুতনার ও হিমাচলের অষ্টাঙ্গ ঢেকে তলপেট দেখান! পাশ্চাত্যদেশের নর্তকী ও বেশ্যারা লোক ভূলাবার জন্য অনাচ্ছাদিত। এদের নাচের মানে তালে তালে শরীর অনাবৃত করে দেখান । আমাদের দেশের আছুড় গা! ভদ্রলোকের মেয়ের, নর্তকী বেশ্যা সব্বাঙ্গ ঢাকা। পাশ্চাত্যদেশে মেয়েছেলে সর্বদাই গা ঢাকা, গা আছুড় করলে আকরণ বেশী হয়; আমাদের দেশে দিন-রাত আছুড় গা, পোষাক পরে ঢেকে ঢুকে থাকলেই আকর্ষণ অধিক। মালাবার দেশে মেয়ে-মদ্দের কৌগীনের উপর বহির্ববাসমাত্র, আর বন্ত্রমাত্রই নেই। বাঙ্গালীরও ভাই, তবে কৌগীন নাই এবং পুরুষদের সাক্ষাতে মেয়েরা গা-টা মুড়ি-ঝুড়ি দিয়ে ঢাকে। পাশ্চাত্যদেশের পুরুষে পুরুষে সর্ধাঙ্গে অর্রেশে উলঙ্গ হয়__আমাদের মেয়েদের মত। বাপ-ছেলেয় সর্ববাজ উলঙ্গ করে স্লানাদি করে, দোষ নেই। কিন্তু মেয়েদের সামনে, বা রাস্তা ঘাটে, বা নিজেদের ঘর ছাড়া, সর্ব্বা্গ ঢাকা চাই। এক চীনে ছাড়া সর্বদেশেই এ লজ্জা! সম্বন্ধে অনেক অদ্ভুত বিষয় দেখ,ছি-_কোনও বিষয়ে বেজায় জজ্জা, আবার তদপেক্ষা অধিক লঙ্ঘ্বাকর বিষয়ে আদতে লজ্জ৷ ৭৩ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য নেই। চীনে মেয়ে-মন্দে সর্বদা আপাদমস্তক ঢাকা। চীনে কনফুছের চেলা, বুদ্ধের চেলা, বড় নীতি ছুরন্ত। খারাপ কথা চালচলন--তৎক্ষণাৎ সাজ। ৷ কৃশ্চান পাত্রী গিয়ে চীনে ভাষায় বাইবেল ছাপিয়ে ফেললে । এখন বাইধেল-পুরাণ হচ্ছেন হি'ছুর পুরাণের চোদ্দ পুরুষ-_ সে দেবতা মানুষের অদ্ভুত কেলেঙ্কার পড়ে চীনে ত চটে অস্থির। বললে, এই বই কিছুতেই এদেশে চালান হবে না, এ--ত-_অতি অশ্রীল কেতাব ; তার উপর পাত্রিনী বুকখোলা সাদ্ধ্য পোষাক পরে, পর্দার বার হয়ে, চীনদের নিমন্থণে আহ্বান কর্লেন। চীনে মোটাবুদ্ধি বললে _-সর্ববনাশ ! এই খারাপ বই পড়িয়ে, আর এই মাগীদের আছুড় গা দেখিয়ে, আমাদের ছোড়া বইয়ে দিতে, এ ধর্ম এসেছে” এই হচ্ছে চীনের কৃশ্চানের উপর মহা" ক্রোধ। নতুবা চীনে কোনও ধর্মের উপর আঘাত করে না। শুন্ছি যে, পাদ্রীরা এখন অশ্লীল অংশ ত্যাগ করে বাইবেল ছাপিয়েছে ॥ কিন্তু চীনে তাতে আরও সন্দীহান। আবার এ পাশ্চাত্যদেশে, দেশবিশেষে লজ্জাঘেন্নার _সতারতম্য আছে। ইংরেজ আমেরিকার লঙ্জা-সরম একরকম ; ফরাসির আর একরকম; জান্নাণের আর একরকম। রুধ আর তিব্বতী বড় কাছাকাছি ; তুরক্কের আর এক ভৌল? ইত্যাদি। ৭8 প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য আমাদের দেশের চেয়ে ইয়োরোপে ও আমেরিকায় মলমৃত্রাদদি ত্যাগে বড়ই লজ্জা। আমরা হচ্ছি নিরামিষ- ভোজী- এক কাড়ি ঘাস-পাতা আহার । আবার বেজায় গরম দেশ, এক দমে লোটাভর জল খাওয়া চাই। পশ্চিমী চাষা সেরভর ছাতু খেলে; তারপর পাতকোকে পাতকোই খালি করে ফেললে, জল খাওয়ার চোটে। গরমী কালে আমরা বাশ বার করে দিই, লোককে জল খাওয়াতে । কাজেই সে সব যায় কোথা, বল? দেশ ঝিষ্টামত্রময় না হয়ে যায় কোথা ? গরুর গোয়াল, ঘোড়ার আস্তাবল, আর বাঘ-সিঙ্গির পি'জরার তুলনা কর দিকি! কুকুর আর ছাগলের তুলনা কর দিকি? পাশ্চাত্য দেশের আহার মাংসময়, কাজেই অল্প; আর ঠাণ্ডা দেশ জল খাওয়া নেই বল্লেই হয়। ভদ্রলোকের খুদে-খুদে গ্লাসে একটু মদ খাওয়া । ফরাসিরা জলকে বলে ব্যাঙের রস, তা কি খাওয়া চলে? এক আমেরিক জল খায় কিছু বেশী, কারণ ওদেশ গরমী- কালে ভয়ঙ্কর গরম, নিউইয়র্ক কলকেতার চেয়েও গরম । আর জার্্মাণরা বড্ড 'বিয়র' পান করে-_কিন্ত সে খাবার সঙ্গে নয় বড়। ঠাণ্ডা দেশে সর্দি লাগবার সদাই সম্ভাবনা! » গরম ণ৫ চালচলন প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দেশে খেতে বসে ঢকৃটক্‌ জল। এরা কাজেই না হেঁচে যায় কোথা, আর আমরা টে'কুর না তুলেই বা যাই কোথা? এখন দেখ নিয়ম--এ দেশে থেতে বসে যদি টেকুর তুলেছ ত সেবেয়াদবীর আর পার নেই। কিন্তু রুমাল বার করে .তাতে ভড়-ভড় করে সিকৃনি ঝাড়, এদের তায় ঘেন্না হয় না। আমাদের টেকুর না তুললে নিমন্ত্রক খুসীই হন না কিন্ত পাঁচ জনের সঙ্গে খেতে খেতে ভড়-ভড় করে সিকৃনি বাড়াটা “কেমন? ইংলগ্ডে আমেরিকায় মলমূত্রের নামটি আনবার যো নেই মেয়েদের সাম্নে। পাইখানায় যেতে হবে চুরি করে। পেট গরম হয়েছে, বা পেটের কোনও প্রকার অস্থথের কথা মেয়েদের সাম্নে বলবার যো নেই। অবশ্ঠ, বুডী-্টুড়ি আলাপী আলাদা কথা । মেয়েরা মলমূত্র চেপে মরে যাবে, তবুও পুরুষের সামনে ও নামটিও আনবে না। ফরাসিদেশে অত নয়। মেয়েদের মলমৃত্রের স্থানের পাশেই পুরুষদের , এরা এ দোর দিয়ে যাচ্ছে; ওরা ও দোর দিয়ে যাচ্ছে; অনেক স্থানে এক দোর, ঘর আলাদা । রাস্তার ছু ধারে মাঝে মাঝে প্রস্রাবের স্থান, তা খালি পিঠটা! ঢাকা পড়ে মাত্র; মেয়েরা দেখছে, তায় ৭৬ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য লজ্জা নাই,_আমাঁদের মত। অবশ্য মেয়েরা অমন অনাবৃত স্থানে যায় না। জান্মীণদের আরও কম। ইংরেজ আমেরিকরা কথাবার্তায়ও বড় সাবধান, মেয়েদের সামনে । সে ঠ্যাঙ বলবার পর্যন্ত জো নেই। ফরাসিরা আমাদের মত খুখ খোল! ; জান্মাণ, রুষ প্রভৃতি সকলের সামনে খিস্তি করে। কিন্তু প্রেম-প্রণয়ের কথা অবাধে মায় ছেলে, ভারে বোনে বাপে-তা চলেছে। বাপ মেয়ের প্রণয়ীর (ভবিষ্তং বরের) কথা নানা রকম ঠাট্টা করে মেয়েকে জিজ্ঞাসা করছে। ফরাসির মেয়ে তায় অবনতমুখী, ইংরেজের মেয়ে ত্রীড়াশীলা, আর মার্কিনের মেয়ে চোট-পাট জবাব দিচ্ছে। চুম্বন, আলিঙ্গনটা পথ্যস্ত দোষাবহ নয়, অশ্লীল নয়। সে সব কথা কওয়। চলে। আমেরিকায় পরিবারের পুরুষবন্ধুও আত্মীয়তা হলে, বাড়ীর যুবতী মেয়েদেরও সেবহ্যাণ্ডের স্থলে চুম্বন করে। আমাদের দেশে প্রেম প্রণষের নামগঞ্ধটি পর্যন্ত গুরুজনের সামনে হবার যো নেই। এদের অনেক টাকা। অতি পরিষ্কার এবং কেতাদোরস্ত কাপড় না পরলে সে ছোটলোক,-__তার সমাজে যাবার যো নেই। প্রত্যহ দোপদস্ত কামিজ, কলার প্রভৃতি হবার তিনবার বদলাতে হবে ভদ্্র- ৭৭ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য লোককে! গরীবরা অত শত পারে না। ওপরের কাপড়ে একটি দাগ, একটি কৌচকা থাকলেই মুস্কিল। নখের কোণে, হাতে, মুখে একটু ময়লা থাক্‌লেই মুস্কিল। গরমীতে পচেই মর, আর যাই হক্‌, দস্তানা পরে যেতেই হবে, নইলে রাস্তায় হাত ময়লা, হয় এবং সে হাত কোন স্ত্রীলোকের হাতে দিয়ে সম্ভাষণ করাটা অতি অভদ্রতা । ভদ্রসমাজে থুথুফেলা বা কুলকুচো কর! বা দাত খোট! ইত্যাদি করলে তৎক্ষণাৎ চগ্ডালত্ব প্রাপ্তি !! ধর্ম এদের শক্তিপূজা, আধা বামাচার রকমের $ পঞ্চ ম-কারের শেষ অঙ্গগুলো বাদ দিয়ে। বামে বামাকঞ্ক্ দক্ষিণে পানপাত্রং*** অগ্রে পাশ্চাত্য ধর্ম শতিপূজ। ম্যস্তং মরীচসহিতং শুকরক্যোফ্মাংসং**% কৌলো। ধর্ঃ£ পরমগহনো যোগীনামপা- গম্যঃ।” * প্রকাশ্য, সর্বসাধারণ, শক্তিপৃজা! বামাচার,_ মাতৃভাবও যথেষ্ট । প্রটেষ্্যান্ট ত ইয়োরোপে নগণ্য-_ ধর্ম ত কাথলিক। সে ধর্শে জিহবোবা, যীশু, ত্িমুত্তি সব অন্তদ্ধান। জেগে বসেছেন “মা! শিশু-যীশু-কোলে 'মা?। লক্ষ স্থানে, লক্ষ রকমে, লক্ষ রূপে, অট্রালিকায়, বিরাট মন্দিরে, পথপ্রান্তে, পর্ণকুটিরে “মা” মাঃ মা? । বাদ্‌স। ডাকৃছে 'মা', জঙ্গবাহাতুর ( 71910079515] ) _.* আননদ-স্তোত্রং। ৭৮ গ্রাচা ও পাশ্চাত্য সেনাপতি ডাকৃছে “মা” ধ্বজা-হস্তে সৈনিক ডাকৃছে "মা পোতবক্ষে নাবিক ডাক্‌ছে 'মা', জীর্ণবন্ত্র ধীবর ডাকছে “মা”, রাস্তার কোণে ভিখারী ডাকছে “মা । খিন্য মেরী+, ধন্ত মেরী, দিনরাত এ ধ্বনি উঠছে। আর মেয়ের পূজা । *এ শক্তিপুজা কেবল কাম নয়, কিন্তু যে শক্তিপূজা কুমারী সধবা পুজো, আমাদের দেশে কাশী কালীঘাট প্রভৃতি তীর্থস্থানে হয়, বাস্তবিক প্রত্যক্ষ, কল্পনা নয়-সেই শক্তিপূুজা। তবে আমাদের পুজো এ তীর্থস্থানেই, সেই ক্ষণমাত্র ; এদের দিনরাত, বারমাস। আগে স্ত্রীলোকের আসন, আগে শক্তির বসন, ভূষণ, ভোজন, উচ্চ স্থান, আদর, খাতির। এ ষে-সে স্ত্রীলোকের পুজো, চেনা অচেনার পূজো, ভদ্রকুলের ত কথাই নাই, রূপসী যুবতীর ত কথাই নাই। এ পুজো ইয়োরোপে আরম্ভ করে মূরেরা, মুসলমান আরবমিশ্র- মুরেরা যখন তারা স্পেন বিজয় করে আট শতাব্দী রাজত্ব করে, সেই সময়। তাদের থেকে ইয়োরোপে সভ্যতার উন্মেষ, শক্তিপূজার অত্যুদয়। মুর ভুলে গেল, শক্তিহীন শ্রীহীন হল। ন্বস্থানচ্যুত হয়ে আফ্রিকা কোণে অসভ্যপ্রায় হয়ে বাস কর্তে লাগলো, আর সে শক্তির সঞ্চার হলো! ইয়োরোপে, “মা মুসলমানকে ছেড়ে উঠলেন কৃষ্চানের ঘরে। ৭৯ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য এ ইয়োরোপ কি? কালো, আদ্কালো, হল্দে, লাল, আসিয়া, আফ্রিকা) আমেরিকার সমস্ত মানুষ এদের পদানত কেন? এরা কেনই বা এ কলিযুগের একাধিপতি ? এ ইয়োরোপ বুঝতে গেলে, পাশ্চাত্যধর্মের আকর র্রাস থেকে বুঝতে হবে। পৃথিবীর আধিপত্য ইয়োরোপে, ইয়োরোপের মহা" কেন্দ্র পারি। পাশ্চাত্য সভ্যতা রীতিনীতি আলোক- অশধার ভাল-মন্দ সকলের শেষ পরিপুষ্ট ভাব-_-এইখানে এই পারি নগরীতে। এ পারি এক মহাসমুদ্র__মণি, মুক্তা, প্রবাল যথেষ্ট, আবার মকর-কুস্তীরও অনেক। এই ফাঁস ইয়োরোপের কর্মক্ষেত্র । সুন্দর দেশ--চীনের কতক অংশ ছাড়া, এমন দেশ-_-আর কোথাও নেই। নাতিশীতোষ, অতি উর্ধ্বরা, অতিবৃষ্টি নাই, অনাবৃষ্টিও নাই, সে নির্মল আকাশ, মিঠে রৌদ্র, ঘাসের শোভা, ছোট ছোট পাহাড়, চিনার বাঁশ প্রভৃতি গাছ, ছোট ছোট নদী, ছোট ছোট প্রস্রবণ। সে জলে রূপ, স্থলে মোহ, বায়ুতে উন্মন্ততা, আকাশে আনন্দ । প্রকৃতি সুন্দর, মান্থুষও সৌন্দ্য্যপ্রিয়। আবালবৃদ্ধবনিতা, ধনি-দরিড্র, তাদের ঘর-দোর, ক্ষেত-ময়দান, ঘসে-মেজে, সাজিয়ে- ৮৬ ক্রীস-পারি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য গুছিয়ে ছবিখানি করে রাখছে । এক জাপান ছাড়া, এ ভাব আর কোথাও . নাই। সে ইন্দ্রতুবন, অট্রালিকাপুঞ্জ, নন্দনকানন, উদ্যান, উপবন-_মায় চাঁষার ক্ষেত, সকলের মধ্যে একটু রূপ, একটু সুচ্ছবি দেখবার চেষ্টা-এবং সফলও হয়েছে। এই ফ্রাস প্রাচীন হতে গোলওয়া (0%01015), রোমক ফর? (177৮019 ) প্রভৃতি জাতির সংঘর্ষভূমি; এই ক্র" জাতি রোম-সাম্রাজ্যর বিনাশের পর ইয়োরোপে একাধিপত্য লাভ করলে, এদের বাদ্‌সা শালামাঞ্জেন ইয়োরোপে কৃশ্চান ধন্ম তলওয়ারের দাপটে চালিয়ে দিলেন, এই ফ্রী জাতি হতেই আসিয়াখণ্ডে ইয়োরোপের প্রচারতাই আজও ইয়োরোগী আমাদের কাছে ফ্রীকি, ফেরিঙ্গি, প্লাকি, ফিলিঙ্গি, ইত্যাদি । _. সভাতার আকর প্রাচীন গ্রীক ডুবে গেল, রাজচত্র- বন্তী রোম বর্বর আক্রমণ-তরঙ্গে তলিয়ে গেল। ইয়োরোপের আলে! নিবে গেল, এদিকে আর এক অতি-বর্বরজাতির আসিয়াখণ্ডে প্রাহূর্ভাব হল--আরব জাতি। মহাবেগে সে আরব-তরঙ্গ পৃথিবী ছাইতে লাগল! মহাবল পারস্য আরবের পদানত হল, মুসল- মান ধন্ম গ্রহণ করতে হল, কিন্তু তার ফলে মুসলমান ৮১ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ধর্ম আর এক রূপ ধারণ করলে; সে আরবি-ধর্ম্দ আর পারসিক সভ্যতা সম্মিলিত হলে! । আরবের তলওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পারস্য সভ্যতা! ছড়িয়ে পড়তে লাগজ। সে পারস্ত সভ্যতা প্রাচীন গ্রীস্‌ ও ভারতবর্ষ হতে নেওয়া । ০পুর্ব্ব পশ্চিম, ছুদিক্‌ হতে মহাবলে মুসলমান তরঙ্গ ইয়োরোপের উপর আঘাত করলে, সঙ্গে সঙ্গে বর্ধর অন্ধ ইয়োরোপে জ্ঞানালোক ছড়িয়ে পড়তে লাগলো । প্রাচীন গ্রীকদের বিদ্যা বুদ্ধি শিল্প বর্ধরাক্রান্ত ইতালিতে প্রবেশ কর্লে, ধরা- রাজধানী রোমের মৃতশরীরে প্রাণম্পন্দন হতে লাগলো _ সে স্পন্দন ফ্ুরেন্স নগরীতে প্রবল রূপ ধারণ কর্লে, প্রাচীন ইতালি নব-জীবনে বেঁচে উঠতে লাগলো,__ এর নাম রেনেস। ([0১90815581009 ) নব-জন্ম। কিন্তু সে নবজন্ম হলো ইতালির। ইয়োরোপের অন্যান্য অংশের তখন প্রথম জন্ম। সে কৃশ্চানী ষোড়শ শতাব্দীতে যখন আকবর, জাহাঙ্গীর, সাজাহান প্রভৃতি মোগল সম্রাট ভারতে মহাবল সাম্রাজ্য তুলেছেন, সেই সময় ইয়োরোপের জন্ম হল। ইতালি বুড়ো জাত, একবার সাড়াশব্ধ দিয়ে আবার পাশ ফিরে শুলো। সে সময় নানা কারণে ভারতবর্ধও জেগে উঠেছিল কিছু, আকবর হতে তিন পুরুষের রাজত্ে ৮২ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বিদ্যা-বুদ্ধি-শিল্পের আদর যথেষ্ট হয়েছিল, কিন্তু অতি বৃদ্ধ জাত, নান! কারণে আবার পাশ ফিরে শুলে। ইয়োরোপে, ইতালির-পুনর্জস্ম গিয়ে লাগলো বলবান্, অভিনব নৃতন ফা জাতিতে । চারিদিক্‌ হতে সভ্যতার ধারা সব এসে ফ্রর্স নগরীতে একত্র হয়ে নৃতন রূপ ধারণ করলে; কিন্তু ইতালি জাতিতে সে বীর্ধ্য-ধারণের শক্তি ছিল না, ভারতের মত সে উন্মেষ এখানেই শেষ হয়ে যেত, কিন্তু ইয়োরোপের সৌভাগ্য, এই নৃতন ফর! জাতি আদরে সে তেজ গ্রহণ করলে। নবীন-রক্ত, নবীন জাত-সে তরঙ্গে মহাসাহসে নিজের তরণী ভাসিয়ে দিলে, সে আ্রোতের বেগ ক্রমশঃই বাড়তে লাগলো, সে এক ধারা শতধার! হয়ে বাড়তে লাগলো; ইয়োরোপের আর আর জাতি লোলুপ হয়ে খাল কেটে সে জল আপনার আপনার দেশে নিয়ে গেল এবং তাতে নিজেদের জীবনীশক্তি ঢেলে দেওয়ায় তার বেগ, তার বিস্তার বাড়তে লাগলো! ভারতে এসে সে তরঙ্গ লাগলো; জাপান সে বন্যায় বেঁচে উঠলো, সে জল পান করে মত্ত হয়ে উঠলো; জাপান আসিয়ার নৃতন জাত। এই পারি নগরী_সে ইয়োরোগী সভ্যতা-গঙ্গার গোমুখ। এ বিরাট রাজধানী মর্ত্যের অমরাবতী, ৮৩ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সদানন্দনগরী। এ ভোগ, এ বিলাস, এ আনন্দ না লগুনে ন৷ বার্লিনে, না আর কোথায়। লগুনে নিউইয়র্কে ধন আছে; বালিনে বিছ্যাবুদ্ধি যথেষ্ট; নেই সে ফরাসি মাটি, আর সর্বাপেক্ষা নেই সে ফরাসি মানুষ। ধন থাক্‌, বিদ্যাবুদ্ধি থাক্‌, প্রাকৃতিক সৌন্দর্ধ্যও থাক্‌__মানুষ কোথায়? এ অন্ুত ফরাসি চরিত্র প্রাচীন গ্রীক্‌ মরে জন্মেছে যেন-_ সদা আনন্দ, সদা উৎসাহ, অতি ছ্যাব.লা আবার অতি গন্তীর, সকল কাজে উত্তেজনা, আবার ধাধা পেলেই নিরুতৎসাহ। কিন্তু সে নৈরাশ্য ফরাসি মুখে বেশীক্ষণ থাকে না, আবার জেগে ওঠে। এই পারি বিশ্ববিদ্ভালয় ইয়োরোপের আদর্শ। ছুনিয়ার বিজ্ঞান-সভ! এদের একাডেমীর নকল; এই পারি ওঁপনিবেশ-সাম্রাজ্যের গুরু, সকল ভাষাতেই যুদ্ধশিল্পের সংজ্ঞা এখনও অধিকাংশ ফরাসি; এদের রচনার নকল, সকল ইয়োরোগী ভাষায়; দর্শন বিজ্ঞান শিল্পের এই পারি খনি, সকল জায়গায় এদের নকল। এর! হচ্ছে সন্রে, আর সব জাত যেন পাঁড়াগেঁয়ে। এরা যা করে, তা ৫* বৎসর, ২৫ বৎসর পরে জাম্মাণ ইংরেজ প্রভৃতি নকল করে, তা বিদ্যায় হক্‌, বা শিল্লে হক, বা সমাজনীতিতেই হকৃ। এই ফরাসি সভ্যতা ৮৪ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য স্কট্ল্যাণ্ডে লাগলো, ক্বট্রাজ ইংলগ্ডের রাজা হলেন, ফরাসি সভ্যতা ইংলগুকে জাগিয়ে তুল্লে ;_ক্কট্রাজ যা্ট বংশের সময় ইংলণ্ডে রয়াল সোসাইটি প্রভৃতির স্টি। আর এই ফ্রাস স্বাধীনতার আবাস। প্রজাশক্তি মহাবেগে এই পারিনগরী হতে ইয়োরোপ তোলপাড় করে ফেলেছে, সেই দিন হতে ইয়োরোপের নৃতন মৃত্তি হয়েছে। সে 'এগালিতে লিবার্তে ফ্রাতের্নিতে'র (19881169 1)19950 £78090016 )-ধ্বনি ফরণাস হতে চলে গেছে; ফ্রাস অন্ভাব, অন্য উদ্দেশ্য অনুনরণ করছে, কিন্তু ইয়োরোপের অন্যান্য জাত এখনও সেই ফরাসি-বিপ্লব মঝ্স কর্ছে। একজন স্কট্ল্যাগুদেশের প্রসিদ্ধ বৈজ্ঞানিক পণ্ডিত আমায় সেদিন বল্লেন যে, পাঁরি হচ্ছে পৃথিবীর কেন্দ্র ; যেদেশ যে পরিমাণে এই পারি নগরীর সঙ্গে নিজেদের যোগ স্থাপন করতে সক্ষম হবে, সে জাত তত পরিমাণে উন্নতি লাভ কর্বে। কথাটা কিছু অতিরঞ্জিত সত্য; কিন্তু এ কথাটাও সত্য যে, যদি কারু কোনও নূতন ভাব এ জগংকে দেবার থাকে ত এই পারি হচ্ছে সে প্রচারের স্থান। এই পারিতে যদি ধ্বনি ওঠে ত ইয়োরোপ অবশ্যই প্রতিধ্বনি করবে। ভাস্কর চিত্রকর ৮৫ প্রাচা ও পাশ্চাত্য গাইয়ে নর্তকী এই মহানগরীতে প্রথম প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারলে, আর সব দেশে সহজেই প্রতিষ্ঠ হয়। আমাদের দেশে এই পারি নগরীর বদ্নামই শুন্তে পাওয়া যায়”_এ পারি মহাকদর্ধ্য বেশ্াপুর্ণ নরককুণ্ড। অবশ্ট এ কথা ইংরেজেরাই বলে থাকে, এবং অন্ত দেশের যে সব লোকের পয়সা আছে এবং জিহ্বোপস্থ ছাড়া দ্বিতীয় ভোগ জীবনে অসম্ভব, তারা অবশ্য বিলাসময় জিহ্বোপস্থের উপকরণময় পারিই দেখে ! কিন্তু লগ্ডন বার্লিন ভিয়েনা নিউইয়র্কও এ বার- বনিতাপূর্ণ ভোগে উদ্ভোগপূর্ণ; তবে তফাৎ এই যে, অন্য দেশের ইন্দ্রিয়চর্চা পশুবৎ, পারিসের, সভ্য পারির ময়লা সোণার পাত মোড়া; বুনোশোরের পাঁকে লোটা আর ময়ুরের পেখম-ধরা নাচে যে তফাত, অন্যান্য সহরের পৈশাচিক ভোগ আর এ পারির বিলাসের সেই তফাৎ। . ভোগ-বিলাসের ইচ্ছা কোন্‌ জাতে নেই বল? নইলে ছুনিয়ায় যার ছুপয়স! হয়, সে অমনি পারি নগরী অভিমুখে ছোটে কেন? রাজ! বাদ্সারা চুপিসাড়ে নাম ভাড়িয়ে এ বিলাস-বিবর্তে স্নান করে পবিত্র হতে আসেন কেন? ইচ্ছা সর্ব্বদেশে, উদ্যোগের ৮৬ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ক্রটি কোথাও কম দেখি না; তবে এরা স্ুসিদ্ধ হয়েছে, ভোগ করতে জানে, বিলাসের সপ্তমে পৌছেচে। তাও অধিকাংশ কদর্ধ্য নাচ-তামাসা বিদেশীর জন্য, ফরাসী বড় সাবধান, বাজে, খরচ করে না। এই ঘোর বিলাস, এই সব হোটেল, কাফে-যাতে একবার খেলে সর্বস্বান্ত হতে হয়, এসব বিদেশী আহাম্মক ধনীদের জন্য । ফরাসীরা বড় স্ুসভ্য, আদব-কায়দ। বেজায়, খাতির খুব করে, পয়সাগুলি সব বার করে নেয়, আর মুচকে মুচকে হাসে। তাছাড়া, আর এক তামাসা' এই যে, আমেরিক, জান্মাণ, ইংরেজ প্রভৃতির খোল! সমাজ, বিদেশী ঝঁ। করে সব দেখতে শুন্তে পায়। ছু-চার দিনের আলাপেই আমেরিক বাড়ীতে দশ-দিন বাস কব্বার নিমন্ত্রণ করে; জান্মাণ তদ্রপ ; ইংরেজ একটু বিলম্বে। ফরাসী এ বিষয়ে বড় তফাৎ, পরিবারের মধ্যে অতাস্ত পরিচিত না হলে, আর বাস করতে নিমন্ত্রণ করে না। কিন্তু যখন বিদেশী এ প্রকার সুবিধা পায়, ফরাসি-পরিবার দেখবার জান্বার অবকাশ পায়, তখন আর এক ধারণ! হয়। বলি, মেছবাজার দেখে অনেক বিদেশী যে আমাদের জাতীয় চরিত্র সম্বন্ধে মতামত প্রকাশ করে-_ ৮৭ প্রাচ্য ও পাশ্চাতা সেটা কেমন আহাম্মকি 1? তেম্নি এপারি। অবিবাহিতা মেয়ে এদেশে আমাদের দেশের মত স্ুরক্ষিতা, তার! সমাজে প্রায় মিশিতে পায় না। বের পরে তবে নিজের স্বামীর সঙ্গে সমাজে মেশে 7 বে-থা মায়ে-বাপে দেয় আমাদের মত। আর এরা. আমোদপ্রিয়। কোনও বড় সামাজিক ব্যাপার নর্তকীর নাচ ন] হলে সম্পূর্ণ হয় না। যেমন আমাদের বে, পুজো সর্ধত্রে নর্তভকীর আগমন। ইংরেজ ওলবাটা-মুখ, অন্ধকার দেশে বাস করে, সদ! নিরানন্দ, ওদের মতে এ বড় অশ্লীল, কিন্তু থিয়েটারে হলে আর দোষ নেই। একথাটাও বলি যে, এদের নাচটা আমাদের চোখে অশ্লীল বটে, তবে এদের সয়ে গেছে। নেংটি নাচ সর্বত্র, ও গ্রাহোর মধ্যেই নয়। কিন্ত ইংরেজ আমেরিক দেখতেও ছাড়বে না, আর ঘরে গিয়ে গাল দিতেও ছাড়বে না। ্ত্রী-সন্বদ্বী আচার পৃথিবীর সর্ধবদেশেই একরূপ অর্থাৎ পুরুষ মান্ষের অন্ত স্ত্রীসংসর্গে বড় দোষ হয় না, | কিন্তু স্ত্রীলোকের বেলাটায় মুক্কিল। তবে হা ফরাসী পুরুষ একটু খোলা, অন্ত দেশের ধনী লোকেরা যেমন এ সম্বন্ধে বেপরোয়া, তেম্নি। আর ইয়োরোগী পুরুষ সাধারণ ওবিষয়ট! অত দোষের ভাবে না। অবিবাহিতের ওবিষয়ে ৮৮ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য পাশ্চাত্যদেশে বড় দোষের নয়; বরং বিদ্ার্থা যুবক ওবিষয়ে একান্ত বিরত থাকৃলে অনেক স্থলে তার মা-বাপ দোষাবহ, বিবেচনা করে; পাছে ছেলেটা “মেনিমুখো” হয়। পুরুষের একগুণ পাশ্চাত্যদেশে চাই--সাহস; এদের 'ভীর্চ, (৮17৮৩) শব্দ আর আমাদের “বীরত্ব একই শব । এ শবের ইতিহাসেই দেখ, এরা কাকে পুরুষের সততা! বলে। মেয়ে মান্যের পক্ষে সতীত্ব অত্যাবশ্যক বটে । এ সকল কথা বল্বার উদ্দেশ্য এই যে, প্রত্যেক জাতির এক একটা নৈতিক জীবনোদেশ্য আছে, সেই- খানট1 হতে সে জাতির রীতিনীতি বিচার করতে হবে। তাদের চোখে তাদের দেখতে হবে। আমাদের চোখে এদের দেখা, আর এদের চোখে আমাদের দেখা--এ দুই ভুল। | আমাদের উদ্দেশ্য এ বিষয়ে এদের ঠিক উল্টো, আমাদের ব্রহ্মচারী (বিদ্যার্থী) শব্দ আর কামজয়িত্ব এক । বিদ্যার্থী আর কামজিৎ একই কথা। আমাদের উদ্দেশ্ট__মোক্ষ। ব্রন্ষচর্যয বিনা তা কেমনে হয়, বল? এদের উদ্দেশ্ট ভোগ, ব্রহ্ষচর্য্যের আবশ্যক তত নাই; তবে স্ত্রীলোকের সতীত্ব নাশ হলে ছেলে-পিলে জন্মায় না এবং সমগ্র জাতির ধ্বংস। ৮৯ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য পুরুষ-মানুষে দশ গণ্াবে করলে তত ক্ষতি নাই, বরং ংশ বৃদ্ধি খুব হয়। ভ্ত্রীলাকের একট! ছাড়া আর একটা এক সঙ্গে চলে না_ফল বন্ধ্যাত্ব। কাজেই সকল দেশে স্ত্রীলোকের সতীত্বের উপর বিশেষ আগ্র, পুরুষের বাড়ার ভাগ। “প্রকৃতিং যাস্তি ভূতানি নিগ্রহঃ কিং করিষ্যতি 1% যাক, মোদ্দা এমন সহর মার এ ভূমণ্ডুলে নাই। পূর্রবকালে এ সহর ছিল আর একরপ, ঠিক আমাদের কাশীর বাঙ্গালিটোলার মত। আ'কা-বাকা গলি রাস্তা, মাঝেমাঝে ছুটো৷ বাড়ী এক-করা খিলান, দেলের গায়ে পাতকো, ইত্যাদি । এবারকার একজিবিশনে একট! ছোট পুরাণ পারি তৈরী করে দেখিয়েছে। সে পারি কোথায় গেছে, ক্রমিক বদলেছে, এক একবার লড়াই-বিদ্বোহ হয়েছে কতক অংশ ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে, আবার পরিষ্কার নৃতন ফরদা পারি সেই স্থানে উঠেছে। বর্তমান পারি অধিকাংশই তৃতীয় ম্তাপোলেঅ'র তৈরী। তৃ-ন্তাপোলেশ" মেরে-কেটে জুলুম করে বাদ্‌স৷ হলেন। ফরাসি সেই প্রথম বিপ্লব হওয়া অবধি সতত টল্মল্‌; কাজেই বাদ্সা, প্রজাদের খুসী রাখবার জন্, ক গীতা ৩৩৩ ৯০ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য আর পারি-নগরীর সতত চঞ্চল গরীব লোকদের কাজ দিয়ে খুসী কর্বার জন্য, ক্রমাগত রাস্তা ঘাট তোরণ থিয়েটার প্রভৃতি গড়তে লাগলেন। অবশ্য, পারির সমস্ত পুরাতন মন্দির তোরণ স্তস্ত প্রভৃতি রৈল। রাস্তা ঘাট সব নৃতন হয়ে গেল পুরাণ সহর-_পগার পাঁচিল সব ভেঙ্গে বুলভারের অভ্যুদয় হতে লাগলো এবং তা হতেই এ সহরের সব্বোন্তম রাস্তা, পৃথিবীতে অদ্বিতীয় শজেলিজে রাস্তা তৈরী হল। এরাস্তা এত বড় চওড়! যে মধ্যখানে এবং ছৃপাশ দিয়ে বাগান চলেছে এবং একস্থানে অতি বৃহৎ গোলাকার হয়ে াড়িয়েছে-_তার নাম প্লাস দ লা কনকর্দ, (১18০9 09 18 ০01000709)। এই প্লাস দ লা কনকদের চারিদিকে প্রায় সমান্তরালে ফ্রাসের প্রত্যেক জেলার এক এক যাস্ত্রিক নারীমৃত্তি। তার মধ্যে একটি মূর্তি হচ্ছে ট্রাস-বুর্গ নামক জেলার। এ জেলা এখন উইট. (জান্মীণ )-রা ১৮৭২ সালের লড়ায়ের পর হতে কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু সে ছঃখ ফ্ীসের আজও যায় না, সে-মূর্তি দিন-রাত প্রেতোদ্দিস্ট ফুলমালায় ঢাকা । যে রকমের মালা লোকে আত্মীয়- স্বজনের গোরের ওপর দিয়ে আসে, সেই রকম বৃহৎ বৃহৎ মাল! দিন-রাত সে মুর্তির উপর কেউ না কেউ দিয়ে যাচ্চে। ৯১ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দিল্লীর ঠাদ্নিচৌক কতক অংশে এই প্লাস. দ লা কনকরের মত এককালে ছিল বলে বোধ হয়। স্থানে স্থানে জয়স্তস্ত বিজয়-তোরণ আর বিরাট নরনারী সিংহাদি ভাক্কধ্য মূর্তি। মহাবীর প্রথম ন্তাপোলেমর স্মারক এক নুবৃহৎ ধাতুনির্দদিত বিজয়স্তস্ত। তার গায়ে স্তাপোলেজর সময়ের যুদ্ধ-বিজয় অস্কিত। ওপরে তার মূর্তি। আর একস্থানে প্রাচীন ছ্র্গ বাস্তিল (3%30116) ধ্বংসের স্মারক-চিহ্ন। তখন রাজাদের একাধিপত্য ছিল, যাকে-তাকে যখন তখন জেলে পুরে দিত। বিচার না, কিছু না, রাজা এক হুকুম লিখে দিতেন; তার নান লেটর দ ক্যাশে- মানে, রাজমুদ্রাঙ্কিত লিপি। তারপর সে ব্যক্তি আর কি করেছে কি না,দোষী কি নির্দোষ, তার আর জিজ্ঞাসা-পড়া নেই, একেবারে নিয়ে পুরলে সেই বানস্তিলে ৮_-সেখান থেকে বড় কেউ আর বেরুত না। রাজাদের প্রণয়িনীরা কারুর উপর চট্লে, রাজার কাছ থেকে এ শীলট! করিয়ে নিয়ে সে ব্যক্তিকে বান্তিলে ঠেলে দিত। পরে যখন দেশশুদ্ধ লোক এ সব অত্যা- চারে ক্ষেপে উঠ.লো, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, সব সমান, ছোট বড় কিছুই নয়, এ ধ্বনি উঠল, পারির লোক উন্মন্ত হয়ে রাজারাণীকে আক্রমণ কর্লে, সে সময় প্রথমেই এ মানুষের অত্যাচারের ঘোর নিদর্শন বাকল ৯২ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ভূমিসাৎ কর্লে, সে স্থানটায় এক রাত ধরে নাচগান আমোদ কর্লে। তারপর রাজ! পালিয়ে যাচ্ছিলেন, তাকে ধরে ফেল্লে, রাজার শ্বশুর অগ্রিয়ার বাদ্‌সা জামায়ের সাহায্যে সৈম্ত পাঠাচ্ছেন শুনে, প্রজারা ক্রোধে অন্ধ হয়ে রাজারাণীকে মেরে ফেল্লে, দেশশুদ্ধ লোকে ্বাধীনতা সাম্যের নামে মেতে উঠলো, ফ্রাস প্রজাতন্ত্র হল, অভিজাত ব্যক্তির মধ্যে যাকে ধর্তে পারলে তাকেই মেরে ফেললে, কেউ কেউ উপাধি- টুপাধি ছেড়ে প্রজার দলে মিশে গেল। শুধু তাই নয়, বললে নিয়া শুদ্ধ লোক তোমরা ওঠ, রাঁজা-ফাজ। অত্যাচারী সব মেরে ফেল, সব প্রজা স্বাধীন হক্‌, সকলে সমান হকৃ!? তখন ইয়োরোপ শুদ্ধ রাজারা ভয়ে অস্থির হয়ে উঠলো-__-এ আগুন পাছে নিজেদের দেশে লাগে, পাছে নিজেদের সিংহাসন গড়িয়ে পড়ে যায়, তাই তাকে নেবাবার জন্য বদ্ধপরিকর হয়ে চারিদিক থেকে ফ্রাস আক্রমণ করলে। এদিকে প্রজাতন্ত্রের কর্তৃপক্ষেরা “লা পাত্রি আ দাজে'__ন্মভূমি বিপদে, এই ঘোষণা করে দিলে; সে ঘোষণা আগুনের মত দেশময় ছড়িয়ে পড়লো। ছেলেবুড়ো, মেয়ে- মদ্দে মার্সাইএ মহাগীত গাইতে গাইতে,__-উৎসাহপূর্ণ ফণাসের মহাগীত গাইতে গাইতে, দলে দলে, জীর্ণবসন, ৪১৩ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সে শীতে নগ্রপদ, অত্যন্লান্ন ফরাসি প্রজাফৌজ বিরাট সমগ্র ইয়োরোপীয় চমূর সম্মুবীন হল, বড়-ছোট, ধনী-দরিদ্র সব বন্দুক ঘাড়ে বেরুল-_পরিত্রাণায়... বিনাশায় চ ছৃক্কৃতাং% বেরুল। সমগ্র ইয়োরোপ সে বেগ সহা কর্তে পার্লে না। ফরাসি জাতির অগ্রে সৈশ্তাদের স্কন্ধে দাড়িয়ে এক বীর,_তার অঙ্কুলি-হেলনে ধরা কাপতে লাগ.ল, তিনিই ন্যাপোলেজ। স্বাধীনতা সাম্য ভ্রাতৃত্ব, বন্দুকের নালমুখে তল- ওয়ারের ধারে ইয়োরোপের অস্থিমজ্জায় প্রবেশ করিয়ে দিলে, তিন-রঙা ককার্ডের জয় হল। তারপর, স্তাপোলেত' ফাস মহারাজাকে দৃঢ়বদ্ধ সাবয়ব করবার জন্য বাদ্‌স! হলেন। তারপর তার কাধ্য শেষ হল, ছেলে হলন। বলে সুখ-ছুখের সঙ্গিনী ভাগ্যলক্মী রাজ্জী জোসেফিন্‌কে ত্যাগ কর্লেন, অস্তীয়ার বাদ্সার মেয়ে বে কর্লেন। জোসেফিনের সঙ্গে সঙ্গে সে ভাগ্য ফির্ল, রুষ জয় কর্তে গিয়ে বরফে তার ফৌজ মারা গেল। ইউরোপ বাগ, পেয়ে তাকে জোর করে সিংহাসন ত্যাগ করিয়ে একটা দ্বীপে পাঠিয়ে দিলে, পুরাণ রাজার বংশের একজনকে তক্তে বসালে। মরা সিঙ্গী সে দ্বীপে থেকে পালিয়ে আবার ফাসে * শীত ৪1৮ ৯৪ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য হাজির হল, ফ্রণাসশুদ্ধ লোক আবার তাকে মাথায় করে নিলে, রাজা পালাল। কিন্তু অনৃষ্ট ভেঙ্গেছে, আর জুড়লনা-_আবার ইয়োরোপ শুদ্ধ পড়ে, তাকে হারিয়ে দিলে, ন্তাপোলেম' ইংরেজদের এক জাহাজে উঠে শরণাগত হলেন ; ইংরেজেরা, তাকে সেপ্ট হেলেনা নামক দূর একট! দ্বীপে বন্দী রাখলে-_-আমরণ। আবার পুরাণ রাজা এল, তার ভাইপো রাজা হল। আবার ফ্াসের লোক ক্ষেপে উঠলো রাজা-ফাজা তাড়িয়ে দিলে, আবার প্রজাতন্ব হল। মহাবীর ন্যাপোলেঅ'র এক ভাইপো এ সময়ে ক্রমে ফ্রাসের প্রীতিপাত্র হলেন, ক্রমে একদিন ষড়যন্ত্র করে নিজেকে বাদসা ঘোষণা! কর্লেন। তিনি ছিলেন তৃতীয় ম্তাপোলেঅ' ; দিন কতক তার খুব প্রতাপ হল। কিন্তু জন্মাণ যুদ্ধে হেরে তার সিংহাসন গেল, আবার ফ্রাস প্রজাতন্ত্র হল। সেই অবধি প্রজাতন্ত্র চলেছে। যে পরিণামবাদ ভারতের প্রায় সকল সম্প্রদায়ের ৃ মূলভিত্তি, এখন সে পরিণাম-বাদ ইয়ো- ভারতীয় সকল ৫ নর রোগীয় বহিরিজ্ঞানে প্রবেশ করেছে। মুলতিত্ি্বরপ ভারত ছাড়া অন্যাত্র সকল দেশের ধন্মে পরণামবাদ রর _75018097 ছিল এই যে, ছুনিয়াটা সব টুকরো টুকরো, টিটি আলাদা আলাদ। ৷ ঈশ্বর একজন আলাদা, ৯৫ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য প্রকৃতি একটা আলাদা, মানুষ একটা আলাদা, এ রকম পশু পক্ষী কীট-পতঙ্গ গাছ-পালা মাটি পাথর ধাতু প্রভৃতি সব আলাদ। আলাদা । ভগবান্‌ এ রকম আলাদা আলাদা করে স্থষ্টি করেছেন। জ্ঞান মানে কিনা বনহুর মধ্যে এক দেখা । যে গুলে! আলাদা, তফাৎ বলে আপাততঃ বোধ হচ্ছে, তাদের মধ্যে এঁক্য দেখ! । যে সম্বদ্ধে এই এঁক্য মানুষ দেখতে পায়, সেই সম্বন্ধটাকে 'নিয়ম' বলে , এরি নাম প্রাকৃতিক নিয়ম। পুর্বে বলেছি যে, আমাদের বিদ্যা বুদ্ধি চিন্তা সমস্ত আধ্যাত্মিক, সমস্ত বিকাশ ধর্ে। আর পাশ্চাত্যে এ সমস্ত বিকাশ বাইরে, শরীরে, সমাজে । ভারতবর্ষে চিন্তাশীল মনীষীর! ক্রমে বুঝতে পারলেন যে, ও আলাদা ভাবটা ভুল; ও সব আলাদার মধ্যে সন্বন্ধ রয়েছে, মাটি পাথর গাছ পালা জন্ত মানুষ দেবতা, এমন কি ঈশ্বর স্বয়ং-_-এর মধ্যে একা রয়েছে। অদ্বৈতবাদী এর চরম- সীনায় পৌছুলেন, বল্লেন যে, সমস্তই সেই একের বিকাশ। বাস্তবিক এই অধ্যাত্ম ও অধিভূত জগৎ এক, তার নাম '্রক্ম' ; আর এ যে আলাদা আলাদ। বোধ হচ্ছে, ওটা ভুল, পর নাম দিলেন “মায়া” £অবিষ্ভা” অর্থাৎ অজ্ঞান । এই হল জ্ঞানের চরম সীম1। ৯৬ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ভারতবর্ষের কথা ছেড়ে দাও, বিদেশে যদি এ কথাটা এখন কেউ বুঝতে না পারে, ত তাকে আর পণ্ডিত কি করে বলি। মোদ্দা, এদের অধিকাংশ পপ্ডিতই এটা এখন বুঝেছে, এদের রকম দিয়ে,__জড়- বিজ্ঞানের ভেতর দিয়ে । তা সে “এক? কেমন করে “বনু” হল, এ কথা আমরাও বুঝি না, এরাও বোঝে না। আমরাও সিদ্ধান্ত করে দিয়েছি যে, ওখানট] বুদ্ধির অতীত । এরাও তাই করেছে । তবেই সে “এক' কি কি রকম হয়েছে, কিকি রকম জাতিত্ব ব্যক্তিত্ব পাচ্ছে, এটা! বোঝ! যায় এবং এইটার খোজের নাম বিজ্ঞান (9019009 )। কাজেই এখন এদেশে প্রায় সকলেই পরিণামবাদী, --19501061000150 যেমন ছোট জানোয়ার বদ্‌লে বদলে বড় জানোয়ার হচ্ছে, বড় জানোয়ার কখন কখন ছোট হচ্ছে, লোপ পাচ্ছে; তেমনি মানুষ যে একটা স্থুসভ্য অবস্থায় ছুম্‌ করে জন্ম পেলে, এ কথা আর কেউ বড় বিশ্বাস করছে না। বিশেষ এদের বাপ. দাদা, কাল্‌ না পরশু, বর্বর ছিল, তা দির 9 থেকে অপ্প দিনে এই কাণ্ড। কাজেই ভ্রমবিকাশ এরা বল্ছে, যে সমস্ত মানুষ ক্রমে ক্রমে অসভ্য অবস্থা থেকে উঠেছে এবং উঠছে। আদিম ৯৭ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য মানুষ কাঠ-পাথরের যন্ত্রতন্ত্র দিয়ে কাজ চালাত, চাম্ড়া বা পাতা পরে দিন কাটাত, পাহাড়ের গুহায় বা পাখীর বাসার মত কুঁড়ে ঘরে গুজ-রান্‌ কর্ত। এর নিদর্শন সর্ধদেশের মাটির নীচে পাওয়া যাচ্ছে এবং কোনও কোনও স্থলে সে অবস্থার মানুষ স্বয়ং বর্তমান। ক্রমে মানুষ ধাতু ব্যবহার করতে শিখলে, সে নরমধাতু-_টিন আর তামা । তাকে মিশিয়ে যন্ত্রত্ত্র অস্ত্রশস্ত্র করতে শিখলে। প্রাচীন গ্রীক বাবিল মিশরীরাও অনেক দ্দিন পর্যান্ত লোহার ব্যবহার জান্ত না, যখন তারা অপেক্ষাকৃত সভ্য হয়েছিল, বই-পত্র পর্য্যন্ত লিখত, সোণা-রূপো ব্যবহার কর্ত তখন পধ্যন্ত। আমেরিকা মহাদ্বীপের আদিম-নিবাসীদের মধ্যে মেক্সিকো পেরু মায়া প্রভৃতি জাতি অপেক্ষাকৃত স্থুসভ্য ছিল, প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড মন্দির নিশম্মাণ কর্ত, সোণা-রূপোর খুব ব্যবহার ছিল (এমন কি এ সোণা- রূপোর লোভেই ম্পানি লোকের তাদের ধ্বংস সাধন করুলে)। কিন্তু সে সমস্ত কাজ চক্মকি পাথরের অন্ত্রত্ধারা অনেক পরিশ্রমে করতো, লোহার নাম গন্ধও জান্তো না। আদিম অবস্থায় মানুষ তীর ধনুক বা জালাদি উপায়ে জন্ত, জানোয়ার, মাছ মেরে খেত, ক্রমে চাষ ৯৮ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বাস শিখলে, পশুপালন করতে শিখলে । বনের আদিমঅব-. জানোয়ারকে বশে এনে নিজের কাজ স্থায় মানুষ করাতে লাগলো । অথবা সময়মত আহা- য়াজীবী . রেরও জন্ত জানোয়ার পাল্তে লাগলো । গরু, ঘোড়া, শৃকর, হাতি, "উট, ভেড়া, ছাগল, মুরগি প্রভৃতি পশুপক্ষী মানুষের গৃহপালিত হতে লাগ লো। এর মধ্যে কুকুর হচ্ছেন মানুষের আদিম বন্ধু। আবার চাষবাস আরম্ত হলো। যে ফল-মূল শাক সবজি ধান-চাল মানুষে খায়, তার বুনো অবস্থা আর এক রকম। এমানুষের যত বুনো ফল বুনো ঘাস, নানাপ্রকার সুখাগ্য বৃহৎ ও উপাদেয় ফলে পরিণত হলো। প্রকৃতিতে আপনা আপনি দিনরাত অদল-বদল ত হচ্ছেই। নানাজাতের বৃক্ষ লতা পশু পক্ষী শরীরসংসর্গে দেশ-কাল পরিবর্তনে নবীন নবীন জাতির স্থষ্টি হচ্ছে। কিন্তু মানুষ-স্ষ্টির পুর্ব পর্য্যন্ত প্রকৃতি ধীরে ধীরে তরুলতা, জীবজন্ত বদ্লাচ্ছিলেন, মানুষ জন্মে অবধি সে হুড়মুড় করে বদলে দিতে লাগলো । সী-সা করে একদেশের গাছ- পাল! জীবজন্তু অন্য দেশে মানুষ নিয়ে যেতে লাগলো, তাদের পরম্পর মিশ্রণে নানাপ্রকার অভিনব জীবজন্তর, গাছপালার জাত মানুষের দ্বারা স্থষ্টি হতে লাগলো । ৯৯ পরে কৃষিজীবী প্রাচা ও পাশ্চাত্য আদিম অবস্থায় বিবাহ থাকে না ক্রমে ক্রমে যৌন সম্বন্ধ উপস্থিত হল। প্রথম বৈবাহিক সম্বন্ধ সর্বসমাজে মায়ের উপর ছিল। বাপের বড় ঠিকানা থাকৃতো না। মায়ের নামে ছেলে-পুলের নাম হত। « মেয়েদেয় হাতে সমস্ত ধন থাকৃতো ছেলে মানুষ করবার জন্য । ক্রমে ধন-পত্র পুরুষের হাতে গেল, মেয়েরাও পুরুষের হাতে গেল। পুরুষ বল্লে, যেমন এ ধনধাম্ত আমার, আমি চাষবাস করে বা লুঠতরাজ করে উপার্জন করেছি, এতে যদি কেউ ভাগ বসায়, ত আমি বিরোধ করবো” তেমনি বল্লে, এ মেয়োগুলো৷ আমার, এতে যদি কেউ হস্তার্পণ করে ত বিরোধ হবে বর্তমান বিবাহের স্ুত্রপাত হলো। মেয়ে মানুষ, পুরুষের ঘটি বাটি গোলাম প্রভৃতি অধিকারের ন্যায় হলো । প্রাচীন রীতি--একদলের পুরুষ অন্যদলে বে করত। সে বিবাহও জবরদস্তি মেয়ে ছিনিয়ে এনে। ক্রমে সে কাড়াকাড়ি বদলে গেল, স্বেচ্ছায় বিবাহ চললো; কিন্তু সকল বিষয়ের কিঞ্চিং কিঞ্চিৎ আভাস থাকে । এখনও প্রায় সর্ধবদেশে বরকে একট! নকল আক্রমণ করে! বাঙ্গালাদেশে, ইউরোপে, চাল দিয়ে বরকে আঘাত করে, পশ্চিমাঞ্চলে কনের আত্মীয়-মেয়েরা বরযাত্রিকে গালিগালাজ করে, ইত্যাদি । ১৩৪ বিবাহের আদিতব প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সমাজ স্ষ্টি হতে লাগল। দেশভেদে সমাজের সষ্টি। সমুদ্রের ধারে যারা বাস কর্ত, তারা অধি- কাংশই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ কর্ত; যারা সমতল জমিতে, তাদের চাষবাস ; যাঁরা পার্ব্বত্যদেশে, তারা ভেড়া চরাত; যারা মরুময়দেশে,, তারা ছাগল উট চরাতে লাগলো । কতকদল জঙ্গলের মধ্যে বাস করে শীকার করে খেতে লাগলো। যারা সমতল দেশ পেলে, চাষ- াধদীবীদেৰ বাস শিখ লেঃ তারা পেটের দায়ে অনেকটা ও মৃগয্াজীবী নিশ্চিন্ত হয়ে চিন্তা করবার অবকাশ পেলে, অ্রের প্্ষ . তারা অধিকতর সভ্য হতে লাগলো । কিন্তু সভ্যতার সঙ্গে সঙ্গে শরীর দুর্বল হতে লাগলো। যাদের শরীর দিনরাত খোল হাওয়ায় বাস করে, মাংস- প্রধান আহার-_-তাদের, আর যারা ঘরের মধ্যে বাস করে, শস্তপ্রধান আহার, অনেক পার্থক্য হতে লাগলো । শিকারী বা পশুপাল বা মংস্জীবী আহারে অনটন হলেই ডাকাত বা বোদ্বেটে হয়ে সমতলবাসীদের লুঠতে আরম্ভ কর্লে। সমতলবাসীরা আত্মরক্ষার জন্য, ঘন- দলে সন্নিবিষ্ট হতে লাগলো, ছোট ছোট রাজ্যের স্থষ্ট হতে লাগলো। দেবতারা ধান চাল খায়, সুসভ্য অবস্থা, গ্রাম, নগর, উদ্ভানে বাঁস, পরিধান বোনা কাপড়; আর ১০১ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য অন্ুরদের পাহাড় পর্বত, মরুভূমি বা সমুদ্রতটে বাস, আহার বন্ত জানোয়ার, বন্যফলমূল, পরিধান ছাল; আর বুনো জিনিষ বা ভেড়া ছাগল গরু দেবতাদের কাছ থেকে, বিনিময়ে যা ধান-চাল। দেবতার শরীর শ্রম সহিতে পারে না, ছুর্বল। অসুরের শরীর উপবাস- কৃচ্ছ, কষ্টসহনে বিলক্ষণ পটু। অন্থুরের আহারাভাব হলেই, দল বেধে পাহাড় হতে, সমুদ্রকূল হতে, গ্রাম নগর লুঠতে এল। কখনও বা ধন-ধানের লোভে দেবতাদের আক্রমণ কর্তে লাগলো । দেবতারা বহুজন একত্র না হতে পারলেই অস্থরের হাতে মৃত্যু; আর দেবতার বুদ্ধি প্রবল হয়ে নানা প্রকার যন্ত্র-তন্ব নিশ্মাণ করতে লাগলো । ব্রন্মান্ত গরুড়ান্, বৈষ্ণবাস্ত্র, শৈবাস্ত্র-সব দেবতাদের; অন্থরের সাধারণ অস্ত্র, কিন্তু গায়ে বিষম বল। বারংবার অস্থুর দেবতাদের হারিয়ে দেয়, কিন্তু অস্থুর সভ্য হতে জানে না। চাষবাস করতে পারে না, বুদ্ধি চালাতে জানে না। বিজয়ী অনুর যদি বিজিত দেবতাদের ন্বর্গে রাজ্য করতে চার, ত সে কিছুদিনের মধ্যে দেবতাদের বুদ্ধকৌশলে দেবতাদের দাস হয়ে পড়ে থাকে। নতুবা! অস্থুর লুঠ করে সরে আপনার স্থানে যার। দেবতারা যখন একত্রিত হয়ে, অন্থরদের তাড়ায়, ১০২ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য তখন-_হয় তাদের সমুদ্র মধ্যে তাড়ায়, না হয় পাহাড়ে, না হয় জঙ্গলে তাড়িয়ে দেয়। "ক্রমে ছু দিকেই দল বাড়তে লাগলো, লক্ষ লক্ষ দেবতা একত্র হতে লাগলো, লক্ষ লক্ষ অসুর একত্র হতে লাগলো । মহা- সংঘর্ষ, মেশামেশি, জেতাজ্তি চল্‌তে লাগলো । এ-__ সব রকমের মানুষ মিলে-মিশে বর্তমান সমাজ, বর্তমান প্রথাসকলের স্প্ি হতে লাগলো । নানা রকমে নৃতন ভাবের সৃষ্টি হতে লাগলো, নানা বিদ্যার আলোচনা চলুলো। একদল লোক ভোগোপযোগী বস্ত তৈয়ার করতে লাগলো-_হাত দিয়ে বা বুদ্ধি করে। একদল সেই সব ভোগ্যদ্রব্য রক্ষা করতে লাগলো । সকলে মিলে সেই সব বিনিময় করতে লাগলো, আর রা মাঝখান থেকে একদল ওস্তাদ এ জায়গার বশিক্‌ প্রভৃতি জিনিষটা! ওজায়গায় নিয়ে যাবার বেতন- বিভিন্ন শ্রেণীর উৎপন্ত- স্বরূপ সমস্ত জিনিষের অধিকাংশ আত্মসাৎ রহ করতে শিখলে । একজন চাষ করলে, একজন পাহারা দিলে, একজন বয়ে নিয়ে গেল, আর একজন কিন্লে। যে চাষ করলে, সে পেলে ঘোড়ার ডিম; যে পাহারা দিলে, সে জুলুম করে কতকটা আগ-ভাগ নিলে; অধিকাংশ নিলে ব্যবসাদার, যে বয়ে নিয়ে গেল। যে কিন্লে, সে এ সকলের দাম ১০৩ প্রাচ্য ও পাশ্চাতা দিয়ে মলো!! পাহারাওয়ালার নাম হলো রাজা, মুটের নাম হলো সওদাগর । এ ছু দল কাজ করলে না_ফাকি দিয়ে মুড়ো মারতে লাগলো । যে জিনিষ তৈরী কর.তৈ লাগল, সে পেটে হাত দিয়ে হা ভগবান ডাকতে লাগলো । ক্রমে এই সকল ভাব প্যাচাপেচি, মহা গেরোর উপর গেরো, তস্য গেরো হয়ে বর্তমান মহা জটিল সমাজ উপস্থিত হলেন। কিন্তু ছিট মরে না। যে গুলো পুর্ব জন্মে ভেড়া চরাত, মাছ ধরে খেত, সে গুলো সভ্য-জন্মে বস্বেটে ডাকাত প্রনৃতি হতে লাগলো । বন নেই_যে সে শিকার করে; কাছে পাহাড় পর্বত নেই যে ভেড়া চরায়; জন্মের দরুণ শিকার বা ভেড়া চরান বা মাছ ধরা উবার কোনটারই সুবিধা পায় না_সে কাজেই ডাকাতী করে, চুরি করে, সে যায় কোথা? সে প্রাতঃম্মরণীয়াদের কালের মেয়ে, এজন্মে ত আর এক সঙ্গে অনেক বর বে করতে পায় না, কাজেই হয় বেশ্যা । ইত্যাদি রকমের নানা ঢঙডের, নানা ভাবের, নান! সভ্য অসভ্য দেবতা অস্থুর জন্মের মানুষ একত্র হয়ে-হয়েছে সমাজ। কাজেই সকল সমাজে এই নানারূপে ভগবান্‌ বিরাজ কচ্ছেন। সাধু নারায়ণ ১০৪ | প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ডাকাত নারায়ণ, ইত্যাদি। আবার যে সমাজে যে দলে সংখ্যায় অধিক, সে সমাজেরংচরিত্র সেই পরিমাণে দৈবী বা আস্মুরী হতে লাগলো । জন্বদ্বীপের তামাম্‌ সভ্যতা--সমতল ক্ষেত্রে, বড় বড় নদীর উপর, অতি উর্বর, ভূমিতে উৎপন্ন__ইয়ংচিকিক়ং গঙ্গা সিন্ধু ইউফেটিসতীর। এ সকল প্রাচা ও জনা সভ্যতারই আদ্‌ ভিত্তি চাষবাস। এ সকল সঙ্যতার সভ্যতাই দেবতা প্রধান। আর ইউরোপের বিভিন্ন তিতি সকল সভ্যতাই প্রায় পাহাড়ে, না হয় সমুদ্র- ময় দেশে জন্মেছে-ডাকাত আর বন্বেটে এ সভ্যতার ভিত্তি, এতে অস্থুর-ভাব অধিক। বর্তমান কালে যতদূর বোঝা যায়, জঙ্বুদ্বীপের মধ্যভাগ ও আরবের মরুভূমি অনুরদের প্রধান আড্ডা হয়। এ স্থান হতে একত্র হয়ে পশুপাল মুগয়াজীবী অস্ুুরকুল, সভ্য দেবতাদের তাড়া দিয়ে, ছুনিয়াময় ছড়িয়ে দিয়েছে । ইউন্রাপখণ্ডের আদিমনিবাপী এক জাত অবশ্য ছিল। পর্ধবতগহবরে বাস করত; যারা ওর মধ্যে একটু বুদ্ধিমান্‌ তারা অল্প গভীর তলাওয়ের জলে খোঁটা পুতে, মাচান বেঁধে, সেই মাচানের ওপর ঘর-দোর নিশ্মাণ করে বাস করত। চক্মকি পাথরের তীর, | ১০৫ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বর্ধার ফলা, চক্মকির ছুরি ও পরশু দিয়ে সমস্ত কাজ চালাত। ক্রমে জন্বদ্বীপের নরস্রোতে ইউরোপের উপর পড়তে লাগলো । কোথাও কোথাও অপেক্ষাকৃত সভ্য জাতের অভ্যুদয় হলো; রুষাদশান্তর্গত কোনও জাতির ভাষা, ভারতের দক্ষিণ ভাষার অনুরূপ । কিন্তু এ সকল জাত বর্বর, অতি বর্ধর অবস্থায় রইল। আসিয়া-মাইনর হতে একদল স্থুসভ্য মানুষ সন্নিকট দ্বীপপুঞ্জে উদয় হল, ইউরোপের সন্নিকট স্থান অধিকার করলে, নিজেদের বুদ্ধি আর প্রাচীন মিসরের সাহায্যে এক অপূর্বব সভ্যতা স্থ্টি করলে; তাদের আমরা বলি যবন, ইউয়োপীরা বলে আ্রীক। পরে ইতালিতে রোমক নামক অন্ত এক বর্ধ্বর জাতি, ইট্রস্কান্‌ নামক অন্য এক সভ্য ইউরোগী জাতের সি: জাতিকে পরাভূত করে, তাদের বুদ্ধি-বিগ্ধা গ্রহ করে নিজেরা সভ্য হল। ক্রমে রোমকের1! চারিদিক অধিকার করলে; ইউরোপ- খণ্ডের দক্ষিণ পশ্চিম ভাগের যাবতীয় অসভ্য মানুষ তাদের প্রজা হলে।। কেবল উত্তর-ভাগে বনজঙ্গলে বর্ধর জাতিরা স্বাধীন রইল। কালবশে রোম শ্বর্য্- ১০৬ গ্রীক প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বিলাসপরতায় ছুর্ধল হতে লাগল; সেই সময় আবার জমৃদীপ অন্ুরবাহিনী ইউরোপের উপর নিক্ষেপ করলে । অস্ত্র তাড়নায় উত্তর-ইউরোগী বর্র্বর রোমসাআাজ্যের উপর পড়লো! রোম উৎসন্ন হয়ে গেল। জন্ুদ্বীপের তাড়ায় ইউরোপের বর্ধর আর ইউরোপের ধ্বংসাবশিষ্ট রোমক-্গ্রীক মিলে এক অভিনব জাতির স্থষ্টি হলো; এ সময় য়াহুদীজাতি রোমের দ্বারা বিজিত ও বিতাড়িত হয়ে, ইউরোপময় ছড়িয়ে পড়লো, সঙ্গে সঙ্গে তাদের নৃতন ধর্ম কৃশ্চানীও ছড়িয়ে পড়লো। এই সকল বিভিন্ন জাত, মত, পথ নানাপ্রকারের অনুরকুল, মহামায়ার যুচিতে, দিবারাত্র যুদ্ধ মারকাটের আগুনে গলে মিশতে লাগলো; তা হতেই এই ইউরোগী জাতের স্থষ্টি। হি'ছুর কালরঙ থেকে, উত্তরে ছুধের মত সাদা রঙ, কাল, কট! লাল বা সাদা চুল, কাল চোখ, কট। চোখ, নীল চোখ, দিব্যি হি'ছুর মত নাক মুখ চোখ, বা জাতা- মুখো চীনেরাম, এই সকল আকৃতিবিশিষ্ট এক বর্বর, অতি-বর্ধধর ইউরোগী জাতির স্থষ্টি হয়ে গেল। কিছু- কাল তারা আপনা-আপনি মারকাট করতে লাগলো; উত্তরের গুলো বম্বেটেরূপে বাগে পেলেই অপেক্ষাকৃত সভ্যগুলোর উৎসাদন কর্তে লাগল। মাঝখান থেকে, ১০৭ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য কৃশ্চান ধর্মের ছুই গুরু, ইতালির পোপ. (ফরাসি, ইতালি ভাষায় বল্লে 'পাপ+) আর পশ্চিমে কনষ্টার্টি- নোপলসের পাটিযার্ক, এরা এই জন্তপ্রায় বর্রর- বাহিনীর উপর, তাদের রাজারাণী সকলের উপর কর্তীত্তি চালাতে লাগল । রর এদিকে আবার আরব-মরুভুমে মুসলমানি ধর্শের উদয় হল। বন্যপশুপ্রা আরব এক মহাপুরুষের প্রেরণাবলে অদম্য তেজে, অনাহত বলে, পৃথিবীর উপর আঘাত করলে। পশ্চিম- পূর্ব ছুপ্রান্ত হতে সে তরঙ্গ ইউরোপে প্রবেশ করলে । সে আ্রোত-মুখে ভারত ও প্রাচীন গ্রীসের বিগ্যাবুদ্ধি ইউরোপে প্রবেশ করতে লাগ লো। জন্থুদ্বীপের মাঝখান হতে সেলমুল তাতার নামক অন্থুর জাতি মুসলমান ধরন্থ গ্রহণ করে আসিয়া-মাইনর নার প্রভৃতি স্থান দখল করে ফেল্লে। ভারতাদি আরাবরা ভারতবর্ষ জয়ের অনেক চেষ্টা নি করেও সফল হয় নি! মুসলমান- অঙ্যদয় সমস্ত পৃথিবী বিজয় করেও ভারতবর্ষের কাছে কুন্তিত হয়ে গেল। সিম্ধুদেশ একবার আক্রমণ করেছিল মাত্র, কিন্তু রাখতে পারেনি; তারপর থেকে আর উদ্ভম করে নি। মুসলমান ধন ১৬৮ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য কয়েক শতাব্দীর পর যখন তুর্ক প্রভৃতি তাতার জাতি বৌদ্ধধন্ম ছেড়ে মুসলমান হলো, তখন এই তুর্কিরা সমভাবে হিন্দুঃ পার্শি, আরাব, সকলকে দাস করে ফেল্লে। ভারতবর্ষের সমস্ত মুসলমান বিজেতার মধ্যে একদলও 'আরবি*বা পার্শি নয় সব তুর্কাদি তাতার। রাজপুতানায় সমস্ত আগন্তক মুসলমানের নাম তুর্ক__তাই সত্য, এঁতিহাসিক। রাজপুতানার চারণ যে গাইলেন, 'তুরুগণকো! বটি জোর, তাই ঠিক। কুতুবউদ্দিন হতে মোগল বাদ্‌সাই পর্য্যন্ত, ও সব তাতার, যে জাত তিব্বতি, সেই জাত; কেবল হয়েছেন মুসলমান, আর হি পারসি বে করে বদ্‌লেছেন, চাকামুখ। ও সেই প্রাচীন অসুর বংশ। আজও কাবুল, পারস্য, আরব্য, কন্ট্রার্টিনোপোলে সিংহাসনে বসে রাজত্ব কর্ছেন, সেই অন্থুর তাতার; গান্ধারি, ফার্সি, আবার সেই তুরফ্ষের গোলামী কচ্ছেন। বিরাট চীনসাম্রাজ্যও সেই তাতার মাঞ্চুর পদতলে, তবে সে মাঞ্চ নিজের ধর্ম ছাড়েনি, মুসলমান হয়নি, মহালামার চেলা। এ অন্ুর জাত কম্মিন্কালে বিদ্যা- বুদ্ধির চর্চা করে না, জানে মাত্র লড়াই। ও রক্ত ন] মিশ.লে, যুদ্ধবীর্ধ্য বড় হয় না। উত্তর ইউরোপ, বিশেষ রুষের প্রবল যুদ্ধবীর্ধ্য সেই তাতার। রুষ তিন ১০৯ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য হিস্তে তাতার রক্ত। দেবাস্থুরের লড়াই এখনও চল্বে অনেক কাল। দেরতা অন্থরকন্তা বে করে, অস্থুর দেবকম্তা ছিনিয়ে নেয়”-এই রকম করে প্রবল খিচুড়ি জাতের সৃষ্টি হয়। তাতাররা আরবি খলিফার সিংহাসন কেড়ে নিলে, কৃশ্চানদের মহাতীর্থ জিরুসালম্‌ প্রভৃতি স্থান দখল করে কৃশ্চানদের তীর্থযাত্রা বন্ধ করে দিলে, অনেক কৃশ্চান মেরে ফেললে । কৃশ্চান ধশ্ধের গুরুর! ক্ষেপে উঠল; ইউরোপময় তাদের সব বর্বর চেলা; রাজা প্রজাকে ক্ষেপিয়ে তুললে,_ পালে পালে টান হল". ইউরোপী বর্বর জিরুসালম্‌ উদ্ধারের জন্য আসিয়ামাইনরে চল্লো। কতক নিজেরাই কাটাকাটি করে মলো, কতক রোগে মলো, বাকি মুসলমানে মারতে লাগলো। সে ঘোর বর্ধর ক্ষেপে উঠেছে, মুসলমানেরা যত মারে তত আসে। সে বুনোর গোঁ। আপনার দলকেই লুঠছে, খাবার না পেলে মুসলমান ধরেই খেয়ে ফেল্লে। ইংরেজ রাজা রিচার্ড মুসলমান-মাংসে বিশেষ খুসী ছিলেন, প্রসিদ্ধি আছে। বুনো মানুষ, আর সভ্য মানুষের লড়ায়ে যা হয়, তাই হল,__জিরুসালম্‌ প্রভৃতি অধিকার করা হলো! ১১০ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য না। কিন্তু ইউরোপ সভ্য হতে লাগলো। সে চামড়া পরা, আমমাংস-খেকো বুদ্বে ইংরেজ ফরাসি ম জার্মমাণ প্রভৃতি আসিয়ার সভ্যতা শিখতে ইউরোপে লাগলো! ইতালি প্রভৃতি স্থানের নাগা রি ফৌজ দার্শনিক মত শিখতে লাগল; একদল কুশ্চান নাগা ([00121198- গ101)1875 ) ঘোর অদ্বৈতবেদান্তী হয়ে উঠলো ; শেষে তারা কৃশ্চানীকে ঠাট্টা করতে লাগলো, এবং তাদের ধনও অনেক সংগৃহীত হয়েছিল; তখন পোপের হুকুমে, ধর্মনরক্ষার ভানে ইউরোগী রাজারা তাদের নিপাত করে ধন লুঠে নিলে । এদিকে মূর নামক মুসলমান জাতি স্পান দেশে অতি স্থুসত্য রাজ্য স্থাপন করলে, নানাবিগ্ভার চর্চা করলে, ইউরোপে প্রথম ইউনিভা্িটী হলো; ইতালি ফ্রান্স, সুদুর ইংলগড হতে বিষ্ভার্থী বিদ্যা শিখতে এলো; রাজা-রাজড়ার ছেলেরা যুদ্ধবিদ্ভা, আগর, কায়দা, সভ্যতা শিখতে এলো৷। বাড়ী-ঘর-দোর মন্দির সব নৃতন ঢঙে বন্তে লাগলো । কিন্তু সমগ্র ইউরোপ হয়ে ঠাড়াল এক মহা! সেনা- নিবাস-সে ভাব এখনও। মুসলমানেরা একটা দেশ জয় করে, রাজা আপনার এক বড় টুক্রা ১১১ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য রেখে, বাকি সেনাপতিদের বেঁটে দিতেন। তারা রা খাজন[/দিত না, কিন্তু রাজার আবশ্যক এক মহাসেনা, হলেই-__এতগুলি সৈন্য দিতে হবে। এই রি রকমে সদা প্রস্তত ফৌজের অনেক হাঙ্গামা না রেখে, আবশ্টক-কালে-হাজির প্রবল ফৌজ প্রস্তুত রইল। আজও রাজপুতানায় সে ভাব কতক আছে ;_-ওটা মুসলমানেরা এদেশে আনে। ইউরোগীরা মুসলমানের এভাব নিলে। কিন্ত মুসলমানদের ছিল রাজ। সামন্তচক্র, বাকি ফৌজ ও প্রজা । ইউরোপে রাজা সামন্তচক্র আর বাকি সব প্রজাকে করে ফেললে এক রকম গোলাম। প্রত্যেক মানুষ কোনও সামন্তের অধিকৃত মানুষ হয়ে, তবে জীবিত রইল-_হুকুম মাত্রেই প্রস্তুত হয়ে যুদ্ধ- যাত্রায় হাজির হতে হবে । ইউরোগী সভ্যতা নামক বস্ত্রেরে এই সব হলো উপকরণ। এর তাত হচ্ছে-_-এক নাতিশীতোষ্ পাহাড়ী সমুদ্রতটময় প্রদেশ; এর তুলো হচ্ছে-_ ইউপাণী সর্বদা যুদ্ধপ্িয বলিষ্ঠ, নানাজাতের সত্যতাবস্ত্ের মিশ্রণে এক মহা খিচুড়ি জাত। এর উপাধান টানা হচ্ছে-যুদ্ধ; আত্মরক্ষার জন্য, ধর্ম রক্ষার জন্য যুদ্ধ। যে তলওয়ার চালাতে পারে, সে ১১২ প্রাচা ও পাশ্চাতা হয় বড়; যে তলওয়ার না ধরতে পারে, সে স্বাধীনতা বিসজ্জন দিয়ে কোনও বীরের তলওযুারের ছায়ায় বাস করে, জীবন ধারণ করে। এর পোড়েন-_বাণিজ্য । এ সভ্যতার উপায় তলওয়ার, সহায় বীরত্ব, উদ্দেশ্য ইহপারলৌকিক ভোগ । আমাদের কথাটা কি? আধ্ধ্যরা শান্তিপ্রিয়, চাষ- বাস করে শম্যাদি উৎপন্ন করে, শাস্তিতে। পরিবার পালন করতে পেলেই খুসী। তাতে হাপ ছাড়বার অবকাশ যথেষ্ট, কাজেই চিন্তাশীলতার, সভ্য হবার অবকাশ অধিক। আমাদের জনক রাজা স্বহস্তে লাঙ্গল চদা চালাচ্ছেন এবং সেকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মভাতা আত্মবিংও তিনি । খধি, মুনি, যোগীর শান্তিতিঃ. অত্যুদয়-_গোড়া থেকে; তারা প্রথম হতেই জেনেছেন যে, সংসারটা ধোকা, লড়াই কর, আর লুঠই কর, ভোগ বোলে যা খুঁজছ, তা আছে শান্তিতে, শান্তি আছেন শারীরিক ভোগ বিসর্জনে ; ভোগ আছেন মনঃশীলতায়, বুদ্ধি-চচ্চায় শরীরচ্চায় নেই। জঙ্গল আবাদ কর! তাদের কাজ। তারপর, প্রথমে সে পরিষ্কৃত ভূমিতে নির্মিত হল যজ্ঞবেদী, উঠলো-_সে নির্মল আকাশে যজ্ঞের ধূম, সে বায়ুতে বেদমন্ত্র প্রতিধ্বনিত হতে লাগ.লো, গবাদি পশু ১১৩ প্রাচ্য ও পাশ্চাতা নিঃশহ্কে চরতে লাগলো । বিদ্যাধশ্মের পায়ের নীচে তলওয়ার রইল !/ তার একমাত্র কাজ ধর্্মরক্ষা করা, মানুষ ও গবাদি পশুর পরিত্রাণ করা, বীরের নাম-_ আপজাতা, ক্ষত্রিয় । লাঙ্গল, তলওয়ার সকলের অধিপতি রক্ষক রইলেন, ধন্ম। তিনি রাজার রাজা, জগং নিদ্রিত হলেও তিনি সদা জাগরূক। ধশ্মের আশ্রয়ে সকলে রইল স্বাধীন। এ যে ইয়োরোগী পণ্ডিত বল্‌্চেন যে, আধ্্যের কোথা হতে উড়ে এসে ভারতের বুনোদের মেরে-কেটে টান জমি ছিনিয়ে নিয়ে বাস করলেন, ও সব ভারভীয়আ'দিম আহাম্মকের কথা । আমাদের পণ্ডিতরাও গাডিনিলাপু দেখছি সে গৌয়ে গেঁআবার এ সব ভিত্তিহীন নব বিরূপ নিথ্য ছেলেপুলেদের শেখান হচ্ছে। সি এ অতি অন্তায়। আমি মূর্খ মানুষ, যা বুঝি তাই নিয়েই এ পারি” সভায় বিশেষ প্রতিবাদ করেছি। এদেশী এবং স্বদেশী পণ্ডিতদের জিজ্ঞাসা কর্ছি সময় পেলে আরও সংশয় ওঠাবার আশা আছে। এ কথা তোমাদেরও বলি-_ তোমরা পণ্ডিত-মনিত্তি--পুখি পাতড়া খুঁজে দেখ। ইয়োরোগীরা যে দেশে বাগ পান, আদিম মানুষকে ১১৪ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য নাশ করে নিজেরা স্থুখে বাম করেন, অতএব আর্ষ্যেরাও তাই করেছে !! ওরা হা-ঘরে হা-ভানা হা-অন্না করে, কাকে লুঠবে, মারবে বলে ঘুরে বেড়ায় আর্ব্যেরাও তাই করেছে !! বলি, এর প্রমাণট! কোথায়-_ আন্দাজ ? ঘরে তোম'র আন্দাজ রাখগেখ কোন্‌ বেদে, কোন্‌ স্ৃতক্তে, কোথায় দেখ যে, মার্য্যেরা কোন্‌ বিদেশ থেকে এদেশে এসেছে? কোথায় পাচ্ছ যে, তারা বুনোদের মেরে কেটে ফেলেছেন? খামকা আহাম্মকির দরকারটা কি? আর রামায়ণ পড়া ত হয় নি,__খামকা এক বৃহৎ গল্প রামায়ণের উপর কেন বানাচ্ছ ? রামায়ণ কি-না আর্যদের দক্ষিণি বুনো বিজয় !! বটে__রামচন্দ্র আর্ধ্য রাজা সুুসভ্য, লড়ছেন কার সঙ্গে? লঙ্কার রাঁবণ রাজার সঙ্গে । সে রাবণ ৪ রামায়ণ পড়ে দেখ, ছিলেন রামচন্দ্রের অনারধয বিজয়ের দেশের চেয়ে সভ্যতায় বড় বই কম নয়। উপাখ্যান নহে লঙ্কার সভাতা অযোধ্যার চেয়ে বেশী ছিল, বরং কম ত নয়ই। তারপর বানরাদি দক্ষিণি লোক বিজিত হলো কোথায়? তারা হলে! সব শ্রীরামচজ্জের বন্ধু মিত্র। কোন্‌ গুহকের কোন্‌ বালির রাজ্য, রামচন্দ্র ছিনিয়ে নিলেন__ তা বল না? ১১৫ প্রাচ্য ও পাশ্চাতা হতে পারে ছু এক জায়গায় আধ্য আর বুনোদের যুদ্ধ হয়েছে, হতে পারে ছু একট! ধূর্ত মুনি রাক্ষসদের জঙ্গলের মধ্যে ধুনি জালিয়ে বসেছিল। নট্‌্কা মেরে চোখ বুজিয়ে বসেছে, কখন রাক্ষসেরা টিল ঢেলা হাড়- গোড় ছেশাড়ে। যেমন হাত়গোড ফেলা, অমনি নাকি- কান্না ধরে রাজাদের কাছে গমন। রাজারা লোহার ভামাপরা, লোহার অস্ত্রশস্থ নিয়ে ঘোড়া চড়ে এলেন ; বুনো হাড় পাথর ঠেঙ্গা নিয়ে কতক্ষণ লড়বে ? রাজারা মেরে ধরে চলে গেল। এ হতে পারে; কিন্তু এতেও বুনোদের জঙ্গল কেড়ে নিয়েছে, কোথায় পাচ্ছ ? অতি বিশাল নদনদীপুর্ণ, উষ্ণপ্রধান, সমতল ক্ষেত্র -আধ্যসভ্যতার তাত। আধ্যপ্রধান, 1নাপ্রকার সুসভ্য, অর্ধসভ্য, অসভা মান্ুষ-এ বস্ত্রের তূলো, এর টানা হচ্ছে-_বর্ণাশ্রমাচার। এর পোড়েন-- প্রাকৃতিক ছন্দ, সংঘর্ষনিবারণ | [ও তুমি ইয়োরোপী, কোন্‌ দেশকে কবে ভাল করেছ? অপেক্ষাকৃত অবনত জাতিকে তোলবার তোমার শক্তি কোথায়? যেখানে হুূর্বল জাতি পেয়েছ, তাদের সমূলে উৎসাদন করেছ, তাদের জমিতে তোমরা বাস করছ, তারা! একেবারে বিনষ্ট হয়ে গেছে। তোমাদের আমেরিকার ইতিহাস কি? ১১৬ উপসংহার প্রাচ্য ও পাশ্চাতা তোমাদের অস্ট্রেলিয়া, নিউজিলগ, প্যাসিফিক দ্বীপপুঞ্জ, তোমাদের আফ্রিক। ! কোথা সে সকল বুনো জাত আজ? একেবারে নিপাত, বন্য পশুবৎ তাদের তোমরা মেরে ফেলেছ, _যেখানে তোমাদের শক্ত নাই, সেথ। মাত্র অন্য জাত জীবিত। আর ভারতবর্ষ তা কন্মিনি কালেও করেন নি। আর্ষেরা অতি দয়াল ছিলেন, তাদের অখণ্ড সমুদ্রব বিশাল হৃদয়ে, অমানব-প্রতিভাসম্পন্ন মাথায়, ওসব আপাতরমণীয় পাশবপ্রণালী কোনও কালেও স্থান পায় নি। স্বদেশী আহাম্মক! যদি আর্ধ্যরা বুনোদের মেরে ধরে বাস করত, তা হলে এ বর্ণাশ্রমের স্থ্টি কি হত? ইয়োরোপের উদ্দেশ্ট--সকলকে নাশ কোরে, আমরা বেঁচে থাকৃবো। আধ্যদের উদ্দেশ্ত_-সকলকে আমাদের সমান্‌ করবো, আমাদের চেয়ে বড় কর্বে!। ইয়োরোপের সভাতার উপায়--তলওয়ার ; আর্যের উপায়-_বর্ণবিভাগ । শিক্ষা, সভ্যতার তারতম্য সভ্যতা শেখবার সোপান, বর্ণবিভাগ। ইয়োরোপে বলবানের জয়, দুর্বলের মৃত্যু ; ভারতবর্ষের প্রত্যেক সামাজিক নিয়ম ছুর্ববলকে রক্ষা করবার জন্ত। ১১৭ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ক্ষ ইয়োরোগীরা যার এত বড়াই করে, সে “সভ্যতার উন্নতির (০৪:53 01 01511158000 ) মানে কি? তার মানে এই যে__সিদ্ধি, অনুচিতকে কৃষ্চানী ও ৃ ৃ ইসলামী ধরবে উচিত করে। চুরি, মিথ্যা অথব। মানবজাতির 39010 দ্বারা. সমভিব্যাহারী ক্ষুধার্ত তন মুসলমান রক্ষীদের এক গ্রাস অন্ন চুরি করার দরুণ চাবকান এবং ফাঁসী, এ সকলের উচিত্য বিধান করে; পুর হও, আমি ওথায় আসতে চাই' রূপ বিখ্যাত ইয়োরোগী নীতি-যার দৃষ্টান্ত, যেথায় ইয়োরোপী-আগমন, সেথায়ই আদিম জাতির বিনাশ- সেই নীতির ওচিত্য বিধান করে! এই সভ্যতার অগ্রসরণ লগ্ুন নগরীতে বাভিচারকে, এবং পারিতে স্ত্রীপুত্রাদিকে অসহায় অবস্থায় ফেলে পালান এবং আত্মহত্যা! করাকে “সামান্য দৃষ্টতা' জ্ঞান করে-_ ইত্যাদি । এখন ইস্লামের প্রথম তিন শতাব্দীব্যাপী ক্ষিপ্র ভ্যতা বিস্তারের সঙ্গে খৃষ্টধর্মের প্রথম তিন শতাব্দীর তুলনা কর। খৃষ্টধন্ম প্রথম তিন শতাব্দীতে জগৎসমক্ষে আপনাকে পরিচিত কর্তেও সমর্থ হয় নি, এবং যখন 0০9756%0611)9এর তলওয়ার একে রাজ্যমধো স্থান গ্পূজ্যপাদ বিবেকানন্দ শ্বামীজির দেহত্যাগের পরে তাহার ১১৬ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দিলে, সেদিন থেকে কোন্‌ কালে কৃণ্চানী ধর্ম আধ্যাত্মিক বা. সাংসারিক সভ্যতা বিস্তারের কোন্‌ সাহায্য করেছে? যে ইয়োরোপী পণ্ডিত প্রথম প্রমাণ করেন যে, পুথিবী সচলা, কৃশ্চানধর্্ম তার কি পুরস্কার দিয়েছিল? কোন্‌ বৈজ্ঞানিক কোন কালে কৃশ্চানী ধর্মের অনুমোদিত কৃশ্চানী সঙ্মের সাহিত্য কি দেওয়ানী বা ফৌজদারী বিজ্ঞানের, শিল্প বা পণ্যকৌশলের অভাব পুরণ কর্তে পারে? আজ পর্যযস্ত “চর্চ' প্রোফেন (ধন্্ম ভিন্ন অন্য বিষয়াবলম্বনে লিখিত) সাহিত্য প্রচারে অনুমতি দেন না। 'আজযে মনুষ্যের বিদ্ভা এবং বিজ্ঞানে প্রবেশ আছে, তার কি অকপট কৃশ্চান হওয়া সম্ভব? টপ 16১/৪77010৮এ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনও বিজ্ঞান বা শিল্পের প্রশংসা নেই। কিন্তু এমন বিজ্ঞান বা শিল্প নেই যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে কোরাণ বা হদিশের বনু বাক্যের দ্বারা অনুমোদিত এবং উৎসাহিত নয়। ইউরোপের সর্ববপ্রধান মনীষিগণ ইয়োরোপের ভলটেয়ার, ডারউইন, বুকনার, ফ্মারিয়ণ, ভিক্টর হুগো-কুল বর্তমানকালে কৃশ্চানী দ্বারা কটু ভাষিত এবং অভিশপ্ত ; অপরদিকে এই সকল পুরুষকে কাগজপত্র সহিত ব্রা ও পাশ্চাতোর এই অংশটুহ্‌ পাওয়া গিয়াছিল। সঃ। ১২৯ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ইস্লাম বিবেচনা করেন যে, এই সকল পুরুষ আস্তিক, কেবল ইহাদের পয়গম্বর বিশ্বাসের অভাব। ধর্ম্ম- সকলের উন্নতির বাধকত্ব বা সহায়কত্ব বিশেষরূণপে পরীক্ষিত হউক, দেখ! যাইবে, ইস্লাম যেথায় গিয়াছে, সেথায়ই আদিমনিবাসীদের ব্রক্ষা করেছে। সে সব জাত সেথায় বর্তমান। তাদের ভাষা, জাতীয়ত্ব আজও বর্তমান। খষ্টধন্ম কোথায় এমন কাজ দেখাতে পারে? স্পেনের আরাব, অষ্টরেলিয়ার এবং আমেরিকার আদিমনিবাসীর! কোথায়? কুশ্চানেরা ইয়োরোগী য়াহুদীদের কি দশা এখন করছে ? এক দানসংক্রান্ত কাধ্য প্রণালী ছাড়া ইয়োরোপের আর কোনও কার্যপদ্ধতি, গস্পেলের অনুমোদিত নয়--গসপেলের বিরুদ্ধে সমুখিত। ইঈয়োরোপে যা কিছু উন্নতি হয়েছে, তার প্রত্যেকটিই ্বীষ্টধন্মের বিপক্ষে-বিদ্রোহ দ্বারা। আজ যদি ইয়ো- রোপে কৃশ্চানীর শক্তি থাকৃত, তাহলে 'পান্তের এবং 'কিকো'র ন্যায় বৈজ্ঞানিক সকলকে জীবন্ত পোড়াত ; এবং ডারউইনকল্পদের শূলে দিত। বর্তমান ইয়োরোপে কৃশ্চানী আর সভ্যতা আলাদা জিনিষ। সভাতা, এখন তার প্রাচীন শত্রু কৃশ্চানীর বিনাশের জগ্য, পাদ্রি- কুলের উৎসাদনে এবং তাদের হাত থেকে বিদ্যালয় ১২০ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য এবং দাতব্যালয়মকল কেড়ে নিতে কটিবদ্ধ হয়েছে। যদি মূর্খ চাষার দল ন1 থাকৃত, তাহলে কৃশ্চানী তার ঘ্বণিত জীবন ক্ষণমাত্র ধারণ কর্তে সমর্থ হত না এবং সমূলে উংপাটিত হত; কারণ, নগরস্থিত দরিদ্রবর্গ এখনই কুশ্চানী ধর্মের প্রকাশ) শক্র ! এর সঙ্গে ইসলামের তুলনা কর। মুসলমান দেশে যাবতীয় পদ্ধতি ইসলাম ধ্মের উপরে সংস্থাপিত এবং ইসলামের ধর্ম্মশিক্ষকেরা, সমস্ত রাজকর্ম্চারীদের বহুপুজিত এবং অন্ত ধর্মের শিক্ষকেরাও সম্মানিত । পাশ্চাত্যদেশে লক্ষ্মী সরহ্বতীর এখন কৃপা একত্রে । শুধু ভোগের জিনিষ সংযোগ হলেই এর! ক্ষান্ত নয়, কিন্তু সকল কাজই একটু ুচ্ছবি চায়। খাওয়া- দাওয়া ঘর-দোর সমস্তই একটু শুচ্ছবি দেখতে চায়। আমাদের দেশেও এ ভাব একদিন ছিল, যখন ধন ছিল! এখন একে দারিদ্র্য তার ওপর আমরা “ইতো- নষ্টস্ততোত্রষ্ঃ হয়ে যাচ্ছি । জাতীয় যে গুণগুলি ছিল তাও যাচ্ছে_-পাশ্চাত্যদেশেরও কিছুই পাচ্ছিনি! চলাবস1 কথাবার্তায় একট। সেকেলে কায়দা ছিল, তা৷ উৎসন্ন গেছে, অথচ পাশ্চাত্য কায়দা নেবারও সামর্থ্য নেই। পুজা পাঠ প্রন্ৃতি যা কিছু ছিল তা ত আমরা বানের জলে দিচ্ছি_অথচ কালের উপযোগী একটা! ১২১ প্রাচা ও পাশ্চাতা নূতন রকমের কিছু এখনও হয়ে ধাড়াচ্ছে না, আমরা এই মধ্যরেখার ছূর্দশায় এখন পড়ে। ভবিষ্যৎ বাঙ্গালা- দেশ এখনও পায়ের উপর ধ্লাড়ায় নি। বিশেষ ছর্দশা। হয়েছে শিল্পের। সেকেলে বুড়ীরা ঘরদোর আল্‌্পোনা দিত, দেয়ালে চিত্রবিচিত্র করত। বাহার কোরে কলাপাত৷ কাট্ত, খাওয়া দাওয়া! নানাপ্রকার শিল্পচাতুরীতে সাজাত, সে সব চুলোয় গেছে বা যাচ্ছে শীঘ্ঘ শীত্ব!! নতুন অবশ্য শিখতে হবে, কর্থে হবে কিন্তু তা বলে কি পুরোণগুলে৷ জলে ভাদিয়ে দিয়ে নাকি? নৃতন ত শিখেছে কচুপোড়া খালি বাক্যিচ্চড়ি!! কাজের বিদ্যা কি শিখেছ? এখনও দূর পাড়াগায়ে পুরোণ কাঠের কাজ, ইটের কাজ দেখে এসগে । কল.কেতার ছুতোর এক জোড়া দোর পরাস্ত গড়তে পারে না। দোর কি আগড় বোঝবার যে নেই 1! কেবল ছুতোরগিরির মধ্যে আছে বিলিতি যন্ত্র কেনা !! এই অবস্থা সর্ধ্ববিষয়ে দাড়িয়েছে। নিজেদের যা ছিল তা ত সব যাচ্ছে, অথ বিদেশী শেখবার মধ্যে বাক্যি-যন্ত্রা মাত্র |! খালি পৃথি পড় আর পুথি পড়ছ! আমাদের বাঙ্গালি আর বিলেতে আইরিস, এ ছুট! এক ধাতের জাত। খালি বকাবকি কর.ছে। বক্তৃতায় এ ছুজাত বেজায় পটু । কাজেরস্এক পয়সাও ১২২ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য নয়__বাড়ার ভাগ দ্নরাত পরম্পরে খেয়োখেয়ি কোরে মরছে 1! পরিষ্কার সাজান গোজান এ দেশের এমন অভ্যাস যে অতি গরীব পর্যযন্তরও ওবিষয়ে নজর। আর নজর কাজেই হতে হয়-পরিষ্কার কাপড় চোপড় না হলে তাকে যে কেউ কাজ কর্মই দেবে না। চাকর চাকরাণী রাধুনি সব ধপধপে কাপড়-_দিবারাত্র। ঘরদোর বেড়েঝুড়ে, ঘসেমেজে, ফিটফাট। এদের প্রধান সায়েস্তা এই যে, যেখানে সেখানে যা তা কখনও ফেলবে না। রান্নাঘর ঝকৃঝকে-_-কুট নো ফুটনো যা ফেলবার তা একট! পাত্রে ফেলছে, তারপর সেখান হতে দরে নিয়ে গিয়ে ফেলবে । উঠানেও ফেলে না, রাস্তায়ও ফেলে না। যাদের ধন আছে তাদের বাড়ীঘর ত দেখবার জিনিষ-_দিনরাত সব ঝকৃঝকৃ! তার ওপর, নানা- প্রকার দেশবিদেশের শিল্পদ্রবা সংগ্রহ করেছে! আমা- দের এখন ওদের মত শিল্পসংগ্রহে কাজ নেই, কিন্ত যেগুলে৷ উৎসন্ন যাচ্ছে, সেগুলোকে একটু যত্ব কর্তে হবে? নানা? ওদের মত চিত্র বা ভাক্কর্য্য বিদ্যা হতে আমাদের এখনও ঢের দেরী! ওছুটো কাজে আমরা চিরকালই অপটু। আমাদের ঠাকুর দেবতা সব দেখ ১২৩ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য না, জগন্নাথেই মালুম |! বড্ড গ্রোর ওদের ( ইয়োরোগী- দের) নকল কোরে একটা আধটা রবিবন্মা ্রাড়ায় !! তাদের চেয়ে দিশী চালচিত্রি করা পোটে! ভাল-_ তাদের কাজে তবু ঝকৃঝকে রঙ আছে। সব রবিবর্মা ফশ্মা চিত্রি দেখলে লজ্জাক্ক মাথা কাট! যায় !! বরং জয়পুরে সোণালী চিত্রি, আর ছুর্গা ঠাকুরের চালচিত্রি প্রভৃতি আছে ভাল। ইউরোপী ভাস্কর্যা চিত্র' প্রভৃতির কথ বারাস্তরে উদাহরণ সহিত বলবার রইল। সে এক প্রকাণ্ড বিষয়। ১২৪ প্রকাঁশক স্বামী আত্মবৌধানন উদ্বোধন কার্য্যাজ্য, ১, মুখার্জি লেন তত [00711517060 09 0১৩ 01651061765 [২2109157908 2 06৮ -1050থাঝ, ] প্রিন্টার-- প্রমথ নাথ মারা শ্রীকৃষ্ণ প্রিন্টিং ওয়ার্কস্‌ ২৫৯, অপার চিৎপুঢ ০41, কর ৮10)111/৯3 00)0700 01701)171013% 1517110110৭, 56551914194. 01055 খর, এ ৮ 929 ০2০০০/০০ 9 €/.৮ পৃ ০, রি £1 4794. এ. রা ৭9 ৮ ৪ 75৮ 927227৮24 7০79%/০০7০%, »ম্ল্যালললর্ললললঁঁঁঁ % /) প্র ক /%! রর ০৪৮০৮০৭/৮- রা ইউপি ভূমিকা এই প্রবন্ধটি উদ্বোধন” পত্রে প্রকাশিত হয়। ইহাতে শ্রীমৎ স্বামীজির গভীর মনস্থিতা ও ভূয়োদর্শনের বিশিষ্ট পরিচয় রহিয়াছে । আমাদের সমাজে ছুই শ্রেণীর লোক দেখিতে পাওয়া! যায়ঃ একদলের মতে পাশ্চাত্যের যাহা কিছু সবই ণিখু'ত ও সর্বাঙ্গনুন্দর ; দেশী জিনিষের মধ্যে আদৌ দেখিবার বা তাবিবার বিষয় কিছুই নাই। অপর দল ইহার ঠিক বিপরীত মতাবলম্বী, হিন্দুদের এবং হিন্দুসমাজের যে কোন-কিছু দোষের থাকিতে পারে, তাহা! একেবারেই অসম্ভব বিবেচনা করেন; আর যে পাশ্চাত্য জাতি ও পাশ্চাত্য সত্যতা আজ সমস্ত পৃথিবীময় আপনার রাঙদত্ব বিস্তার করিতে বসিয়াছে, তাহাদের নিকট হইতে আমাদেন যে কিছু শিখিবার আছে, ইহা! তাহারা কল্পনায়ও আনিতে পারেন না। এই প্রবল ত্োতের ঘাত- প্রতিথাতে হিন্দুসমাজ আত্মহারা হইতে বসিয়াছে। স্বামীজির এই প্রবন্ধ চিন্তাশীল ব্যক্তিগণের চিস্তাক্রোত যথার্থ পথে প্রবাহিত করাইয়া! দিবে, এই আশা করিয়া ইহার পুনমু্রণ কর' এেল। আমরা আশা করি, শিক্ষিত বঙ্গবাসিমাত্রেই এই পুস্তকের সমাদর করিবেন। সর্বসাধারণের সুবিধার জন্য ইহার মূল্য যথাসম্ভব কম করা গেল। বিতগ্াপন প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হইল। পুস্তকখানির প্রথম সংস্করণ অনেক দিন নিঃশেষ হইয়াছিল। নানাকারণে উহার দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হইতে বিলম্ব হইল। পূর্বাপর হইতে এবার অধিক আদর হইবে, আশা করা যায়। ৃ স্বদেশী আন্দোলনের হ্ত্রপাত হইতে আমাদের দৃষ্টি নিজ দেশের প্রতি কিছু আকৃষ্ট হইয়াছে বটে, কিন্ত স্বদেশতক্তির যূলতিত্তি সম্বন্ধে এবং পাশ্চাত্যদেশ হইতেই বা কিরূপে তাহাদের কি কি গুণ গ্রহণ করিলে আমাদের জাতীয় উন্নতি হইতে পারে, তথ্সম্বন্ধে সাধারণের একট! পরিষ্কার ধারণা নাই। কেহ কেহ পাশ্চাত্য জাতির উপর অযথা বিদ্বেষ-সম্পর হইয়া উঠিতেছেন। আশা করি, স্বামীজির এই নিরপেক্ষ সমালোচনাগ্রন্থ দ্বার! লোকশিক্ষার বিশেষ সহায়তা হইবে। ূ এবার পুস্তকখানি স্বামিজীর হস্তলিপির সহিত ভাল করিয়া মিলাইয়া দেওয়া হইয়াছে এবং পুস্তকপাঠের সুবিধার জন্য কতকগুলি ঘমাঞ্জিন্তাল নোট” এবং ছুই চারিটি “কুটনোট'ও সংঘুক্ত হইয়াছে। পুস্তকথানি “পাইকা টাইপে* ও উৎকুষ্ট মোটা 'ধ্যার্টিক* কাগজে ছাপ! হইল এবং স্বামীজির একখানি . 'হাফটোন্‌, চিত্র দেওয়া হইল। এই সকল কারণে ব্যয়াধিক্য হওয়। সত্বেও মূল্য সামান্তমাত্র বৃদ্ধি করা হইল। ইতি-_- বশনদ প্রকাশক